নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৮ পিএম
দুয়ারে কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর মাত্র এক দিন বাদেই ভোটযুদ্ধ। রোববারের (৭ জানুয়ারি) এই নির্বাচন রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল বর্জন করেছে। এতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আমেজ অনেকটা হারিয়েছে। তবে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও এবার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাদের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত রেখেছে। আর এতে দেশের বেশ কিছু আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
রোববার দেশের ২৯৯টি আসনে (নওগাঁ-৫ বাদে) একযোগে ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে। এসব আসনের মধ্যে অর্ধশতাধিক আসনে নৌকা প্রতীক পাওয়া কিংবা সমর্থিত প্রার্থীরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। দলীয় শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় অনেকের পক্ষে নৌকা পেয়েও কঠিন হবে বিজয় ছিনিয়ে আনা। যেসব আসনে ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে এবং সবার চোখ থাকবে এমন কিছু আসনের খবর তুলে ধরা হলো এখানে-
ঢাকা-১: দোহার ও নবাবগঞ্জ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর রহমান। নৌকা প্রতীকের আলোচিত এই ব্যবসায়ীর প্রতিপক্ষ জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি সালমা ইসলাম। তিনি যুগান্তরের প্রকাশক, যমুনা টেলিভিশন এবং যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান। ভোটে লাঙ্গলের সঙ্গে নৌকার মূল লড়াই হবে। দুই হেভিওয়েট প্রার্থী থাকায় এই এলাকায় নির্বাচন বেশ জমে ওঠেছে।
ঢাকা-৪: (শ্যামপুর ও কদমতলী) আসনে লড়ছেন তিন হেভিওয়েট প্রার্থী। এখানে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। জোটের স্বার্থে আওয়ামী লীগ গত দুটি নির্বাচনে তাকে ছাড় দিলেও এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটে আছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ড. আওলাদ হোসেন। তার প্রতীক ট্রাক। আওয়ামী লীগের ভোট সানজিদা ও আওলাদের মধ্যে ভাগ হলে লাভ জাতীয় পার্টির প্রার্থী বাবলার। এই আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন এলাকাবাসী।
ঢাকা-১৯: (সাভার-আশুলিয়া) আসনে সংসদ সদস্য পদে মোট ১০ জন অংশ নিলেও নৌকা ও আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এই আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এবারও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ। সাবেক ও বর্তমান দুই সংসদ সদস্যের মধ্যে লড়াই বেশ জমে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ফরিদপুর-১: (মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমানকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলন। বিশিষ্ট সাংবাদিক এই প্রার্থী ইতোমধ্যে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। এই আসনে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর। দলীয় পরিচয়ের বাইরে মুক্তিযোদ্ধা এবং শ্রমিক নেতা হিসেবে শাহ জাফরের ভোট ব্যাংক আছে। ভোটের আগে বিএনপি ছেড়ে বিএনএম-তে (কিংস পার্টিখ্যাত) যোগ দিয়ে নোঙর প্রতীকে নির্বাচন করছেন তিনি। এই আসনে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
ফরিদপুর-৩: (সদর) আসনে তিন মেয়াদ ধরে সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তবে তিনি অসুস্থ এবং দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় এবার এই আসনে নৌকার মাঝি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম হক। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের মালিক এবং এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি হামীম গ্রুপের কর্ণধার এ কে আজাদ। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
ফরিদপুর-৪: (ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলা) আসনে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর ঝগড়া বেশ পুরনো। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্লাহ। তার বিরুদ্ধে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও টানা দুইবারের সংসদ সদস্য মজিবর রহমান নিক্সন চৌধুরী। গত দুইবারের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাকে এবারও কুপোকাত করতে চান নিক্সন চৌধুরী। আর সাবেক এমপি জাফর উল্যাহ চাচ্ছেন গত দুইবারের ব্যর্থতা পেছনে ফেলে এবার আসনটি উদ্ধার করতে।
চাঁদপুর-৩: (চাঁদপুর সদর ও হাইমচর) কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. দীপুমনি। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. মো. শামছুল হক ভূঁইয়া। চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ড. ভূঁইয়া এই আসনের সাবেক এমপি। এখানে অনেক বছর ধরে মনোনয়ন চেয়েও পাননি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। সাবেক এই ছাত্রনেতার রয়েছে বিশাল জনসমর্থন। তার সমর্থকদের ভোট ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ-১: (সদর-হোসেনপুর) আসনটি ব্যাপক আলোচনায় এসেছে দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আসন হিসেবে পরিচিত আসনটিতে প্রার্থী হয়েছেন তার ভাই ও বোন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে লড়ছেন বড় ভাই মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন তাদের চাচাতো ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু। তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সমর্থন দিয়েছেন সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামকে। এই আসনে ভাইবোনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশ জমে ওঠেছে।
গাজীপুর-৪: (কাপাসিয়া) আসনেও লড়াই হচ্ছে ভাই-বোনের। যদিও তার আপন ভাই-বোন নন। এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি। এবারও তিনি পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন সিমিনের ফুপাতো ভাই শিল্পপতি ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের উপদেষ্টা আলম আহমেদ। তবে দলের মনোনয়ন না পেয়ে করছেন স্বতন্ত্র নির্বাচন। ভাই-বোনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজশাহী-১: তিনবারের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী এবারও রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ি) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এখানে বৈধ প্রার্থী ১১ জন। এর মধ্যে তাকে কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। আরেক শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানি। কাঁচি প্রতীকের এই প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আখতারুজ্জামান (ঈগল প্রতীক)। গোলাম রাব্বানি তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুন্ডুমালার পৌর মেয়র ছিলেন।
রাজশাহী-২: (সদর) আসনে লড়ছেন আলোচিত দুই প্রার্থী দুই ‘বাদশা’। টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার দুর্গে হানা দিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা। তিনি লড়ছেন কাঁচি প্রতীকে আর ফজলে হোসেন বাদশা নৌকা প্রতীকে। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয়ভাবে জোটের প্রার্থী ফজলে হোসেনকে সমর্থন দিলেও স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
পিরোজপুর-১: পিরোজপুর-১ (নাজিরপুর, পিরোজপুর সদর ও ইন্দুরকানি) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল। তাদের দুজনের মধ্যে তুমুল লড়াই হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পিরোজপুর-২: পিরোজপুর-২ (কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও নেছারাবাদ) আসনে জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান এবং সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবারও আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন। অন্যবার বাইসাইকেল নিয়ে নির্বাচন করলেও এবার সরাসরি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তবে এই আসনে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থানে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ। দীর্ঘদিন নিজের দখলে রাখা আসনটিতে এবার আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পক্ষে বিজয়ী হওয়া কিছুটা কঠিন হবে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
হবিগঞ্জ-৪: (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। এলাকায় প্রচুর রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, কালভার্ট, ব্রিজ, সাঁকো নির্মাণ করে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব থাকায় দেশে-বিদেশে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তবে ভোটের মাঠে ব্যারিস্টার সুমন নৌকার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনটিতে নৌকার বিপক্ষে কতটা সুবিধা করতে পারবেন সেটা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন আছে।
মৌলভীবাজার-২: (কুলাউড়া) আসনে নৌকার মাঝি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। নাদেলের সাথে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সাবেক এমপি এম এম শাহীন (সোনালী আঁশ) এবং কুলাউড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ এ কে এম সফি আহমদ সলমানের (ট্রাক প্রতীক)।
কুষ্টিয়া-২: বিপদে আছেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। নির্বাচনী সাঁকো পার হতে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে নৌকার মাঝি হয়েছেন। তবে ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইনুকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন। জেলা, থানা এবং পৌর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এবার কামরুলকে সমর্থন দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী।
বগুড়া-৪: (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে নৌকা প্রতীকে জাসদের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। এই আসনে আলোচিত ইউটিউবার এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম লড়ছেন ডাব প্রতীকে। সংসদ উপনির্বাচনে হিরো আলম মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে তানসেনের কাছে পরাজিত হয়েছেন। জোটের কারণে আসনটিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ জাসদের প্রার্থীকে সমর্থন দিলেও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি আছে। আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ এবং সাধারণ মানুষ হিরো আলমের পক্ষে, আরেকটি গ্রুপ স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং বিএনপির চারবারের এমপি জিয়াউল হক মোল্লার ঈগল প্রতীকের পক্ষে। এখানে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ-২: (দিরাই ও শাল্লা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ওরফে আল আমীন চৌধুরী। তিনি শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। তবে সব পরিচয় ছাপিয়ে আলোচনায় এসেছে তিনি পুলিশের আইজি আবদুল্লাহ আল মামুনের ভাই। মাহমুদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাঁচি প্রতীকে লড়ছেন সাবেক রেলমন্ত্রী এবং ছয়বারের এমপি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্ত। জয়া এই আসনে দুইবারের এমপি। তাদের দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
সিলেট-৬: সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। তাকে লড়তে হচ্ছে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী এবং কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সারওয়ার হোসেনের সাথে। সোনালী আঁশ প্রতীকে নির্বাচন করা এই শমসের মুবিনের পক্ষে কাজ করছেন জেলা, উপজেলা এবং থানা আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ। আর স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেকটি অংশ কাজ করছে সাওয়ার হোসেনের ঈগল প্রতীকের পক্ষে। এবার নাহিদের জন্য নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া কঠিন হতে পারে বলে ধারণা এলাকাবাসীর।
জেবি