নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের জন্য ছবিসহ ভোটার তালিকা স্থানীয়ভাবে মুদ্রণের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত চিঠি সব জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিটি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য ৩০০টি নির্বাচনি এলাকার চূড়ান্ত সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ছবিসহ ও ছবিছাড়া ভোটার তালিকার পিডিএফ কপি মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়ে সরবরাহ কার্যক্রম চলমান। ওই পিডিএফ কপি হতে দেশব্যাপী ৩০০টি আসনের সীমানা ও ভোটার এলাকার সীমানা অনুসারে সংশ্লিষ্ট সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসার কর্তৃক তার অধিক্ষেত্রাধীন সংসদীয় আসনসমূহের জন্য ৫ সেট ছবিসহ ভোটার তালিকা মুদ্রণের জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে, সরকারি ক্রয় নীতিমালা, (পিপিআর ২০০৮ ও পিপিএ ২০০৬) অনুসরণপূর্বক ভোটার তালিকা মুদ্রণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সম্ভাব্য প্রার্থীগণ ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডি ক্রয় করে তা থেকে ছবি ছাড়া ভোটার তালিকা মুদ্রণ করে তাদের প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করবেন। প্রতিটি আসনে অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডকে একেকটি ইউনিট ধরে প্রতিটি ইউনিট ৫০০ টাকা টাকা হারে প্রার্থীরা সিডি ক্রয়ের জন্য নির্ধারিত কোডে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করবেন।
এতে ভোটার তালিকার সঠিকতা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সরবরাহকৃত চূড়ান্ত সংশোষিত ভোটার তালিকার (কভার পেইজ, উপজেলা/থানা, ইউনিয়ন/পৌরসভা, ওয়ার্ড নম্বর ভোটার এলাকার নাম, ভোটার এলাকার কোড নম্বর, পুরুষ তালিকায় মহিলা এবং মহিলা তালিকায় পুরুষ সংমিশ্রন, ভোটার ক্রমিক নম্বরের ধারাবাহিকতা ইত্যাদি) সঠিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করতে হবে, এর ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ব্যক্তিগত দায় হিসেবে গণ্য হবে। উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার পিডিএফ কপি যাচাইয়ের পর সঠিক আছে মর্মে প্রত্যয়ন প্রদান করলে চূড়ান্তভাবে প্রিন্টিং করতে হবে এবং প্রিন্টেড কপি যথাযথ যাচাই করে কাগজ, কালি, বাঁধাই এবং প্রিন্টিং এর গুনগত মান সঠিক আছে মর্মে সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসারগণ প্রত্যয়নপত্র প্রদান করবেন। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাগণ তাঁর আওতাধীন জেলাসমূহে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক যথাযথভাবে মুদ্রণ হচ্ছে কি না তা তদারকি নিশ্চিত করবেন।
প্রার্থীর ভোটার তালিকার সিডি ক্রয়ের বাধ্যবাধকতা থাকার কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার তালিকার সিডি ক্রয়ের বাধ্যবাধকতা থাকায় সংশ্লিষ্ট কার্যালয়সমূহে পর্যাপ্তসংখ্যক ছবিছাড়া চূড়ান্ত ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত রাখবেন। প্রার্থীদেরকে মনোনয়নপত্র গ্রহণের পূর্বে বা মনোনয়নপত্রের সাথে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্তকৃত ছবিছাড়া ভোটার তালিকার সিডি সরবরাহ করবেন। পরবর্তীতে আউট কান্ট্রি ভোটিং (ওসিভি) এবং ইন কান্ট্রি ভোটিং এর মাধ্যমে পোস্টাল ভোট প্রদানের নিমিত্ত রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে ওয়াটার মার্ক/জলছাপ চিহ্নিত ছবিছাড়া ভোটার তালিকা প্রার্থীদেরকে পুনরায় সরবরাহ করবেন। তবে প্রার্থীরা কেবলমাত্র একবারই ভোটার তালিকার ফি জমা প্রদান করবেন অর্থাৎ ওসিভি ও আইসিভি ওয়াটার মার্ক/জলছাপ চিহ্নিত ছবিছাড়া ভোটার তালিকা সরবরাহের জন্য পুনরায় ভোটার তালিকার ফি পরিশোধ করতে হবে না।
আরও পড়ুন
সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ছবিসহ ভোটার তালিকার পিডিএফ কপি হতে ৫ সেট ছবিসহ ভোটার তালিকা অবশ্যই লেজার প্রিন্টারে মুদ্রণ করতে হবে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের জন্য সর্বশেষ সংশোধিত প্রেরিত পিডিএফ কপি হতে ৩ সেট ছবিসহ ভোটার তালিকা মুদ্রণ করতে হবে । রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ১ কপি (নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকবে) সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ১ কপি (নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকবে), সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে ০১কপি]। পরবর্তীতে ওসিভি ও আইসিভি এর মাধ্যমে পোস্টাল ভোট প্রদানের নিমিত্ত রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে ওয়াটার মার্ক/জলছাপ চিহ্নিত নির্বাচন কমিশন হতে প্রেরিত ভোটার তালিকার পিডিএফ কপি হতে অবশিষ্ট ০২ (দুই) সেট ছবিসহ ভোটার তালিকা মুদ্রণ করতে হবে। ১ কপি ভোটকেন্দ্রে ব্যবহার করতে হবে এবং ১ কপি ব্যাকআপ হিসেবে সংশ্লিষ্ট সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে থাকবে (নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকবে।

ভোটার তালিকা মুদ্রণের সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ করে এতে বলা হয়েছে, ছবিসহ ভোটার তালিকা বাঁধাইসহ মুদ্রণের জন্য পূর্বের ন্যায় প্রতি পাতা (দুই পৃষ্ঠা) সর্বোচ্চ দশটাকা এবং একক পৃষ্ঠা পাঁচ টাকা হারে বরাদ্দ প্রদান করা হবে। ছবিসহ ভোটার তালিকা বাঁধাইসহ মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের চাহিদা সংযুক্ত ছক মোতাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব, বাজেট ও ফাইন্যান্স শাখায় সফটকপিসহ হার্ডকপি প্রেরণ করতে হবে। সংসদীয় আসনভিত্তিক ভোটার তালিকার পিডিএফ কপি হতে ভোটার তালিকা মুদ্রন করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই লেজার প্রিন্টারে রিফিল কালি ব্যবহার করা যাবে না।
এতে আরও বলা হয়, ছবিসহ মুদ্রিত ভোটার তালিকা প্রাপ্তির সাথে সাথে পিডিএফ কপি ও মুদ্রিত ভোটার তালিকা শতভাগ যাচাই করে মুদ্রিত ভোটার তালিকা সঠিক আছে/ত্রুটিমুক্ত মর্মে সংশ্লিষ্ট সিনিয়র জেলা/ জেলা নির্বাচন অফিসার এবং রেজিস্ট্রেশন অফিসারগণ পুনরায় প্রত্যয়নপত্র প্রদান করবেন।
নির্দেশনা অনুসরণ করে ৫ সেট ছবিসহ ভোটার তালিকা মুদ্রণের কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়
সবশেষে ভোটার হালনাগাদ অনুযায়ী দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭। মহিলা ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪২। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ হাজার ২৩৪।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ হবে ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনি প্রচার চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।
এমএইচএইচ/জেবি