মাহফুজুর রহমান
০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
একের পর এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন ঢাকার মানুষ। সাম্প্রতিক সময় থেকে গত কয়েক বছরের ধারাবাহিক ঘটনাগুলো নির্মাণকাজের অব্যবস্থাপনা, বেপরোয়া যান চলাচল এবং ভঙ্গুর অবকাঠামোর ব্যর্থতা রাজধানীর নিরাপত্তাব্যবস্থার ভয়াবহ দুর্বলতা স্পষ্ট করেছে।
বেইলি রোডের হৃদয়বিদারক অগ্নিকাণ্ডে বহুজনের প্রাণহানি, মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, নির্মাণাধীন ভবন থেকে রড পড়ে প্রাণহানি, চলন্ত বাস থেকে ছিটকে পড়ে মৃত্যুর ঘটনাগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা নয়, বরং শহরের পরিকল্পনা, তদারকি ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার পদ্ধতিগত ব্যর্থতার সরাসরি প্রতিচ্ছবি।
এই দুর্ঘটনাগুলো নাগরিক নিরাপত্তার প্রতি দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর নজরদারির ঘাটতি স্পষ্ট করে দিয়েছে। ক্রমাগত মৃত্যু ও আহত হওয়ার এই প্রবণতা দেখিয়ে দিচ্ছে, ঢাকার নগর ব্যবস্থাপনায় অবিলম্বে কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
গত কয়েক বছরে রাজধানী ঢাকায় নির্মাণকাজ, সড়ক দুর্ঘটনা ও ভঙ্গুর অবকাঠামো সংক্রান্ত একের পর এক মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
সাম্প্রতিক মৃত্যুর সরণিতে নির্মাণ দুর্যোগ
ঢাকায় নির্মাণ দুর্যোগ এখন প্রায় নিত্যদিনের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত নগরায়ন, অগোছালো উন্নয়ন প্রকল্প, অপর্যাপ্ত তদারকি এবং নিরাপত্তাবিধি না মানার কারণে প্রায় প্রতিটি নির্মাণস্থলই সম্ভাব্য ঝুঁকির এলাকায় পরিণত হয়েছে। শ্রমিক, পথচারী, এমনকি আশপাশের বাসিন্দারাও প্রতিদিনই অদৃশ্য এক ঝুঁকি বয়ে বেড়ান, যে ঝুঁকি যেকোনো মুহূর্তে প্রাণ কেড়ে নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা নির্মাণকাজের মান নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা, যেখানে হেলমেট-নেট-বারিকেড-সেফটিলাইন এসব মৌলিক নিরাপত্তাব্যবস্থা অনেক ক্ষেত্রেই থাকে না। উঁচু ভবনে কাজ করা শ্রমিকদের জন্য সেফটি হারনেস বাধ্যতামূলক হলেও বেশিরভাগ প্রকল্পেই তা দেখা যায় না। ফলে রড পড়ে মৃত্যু, স্ক্যাফোল্ডিং ভেঙে পড়া, ভারী যন্ত্রাংশ ছিটকে যাওয়া- এসব ঘটনা বারবার ঘটছে।
আরেকটি বড় সমস্যা হলো- অতিরিক্ত গতির উন্নয়নকাজ। দ্রুত কাজ শেষ করার চাপের কারণে প্রকৌশল নির্দেশনা উপেক্ষা করা হয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই সরঞ্জাম তুলে ধরা হয়, আর কাজের পরিবেশ হয়ে ওঠে বিশৃঙ্খল। এ কারণে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড ছিটকে পড়া বা ভবনের প্যানেল খুলে পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে।
নির্মাণস্থলের আশপাশেও ঠিকমতো নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয় না। পথচারীরা বাধ্য হয়ে নির্মাণের নিচ দিয়ে হাঁটেন, বাজার, স্কুল বা আবাসিক এলাকার পাশে কোনো সতর্কতা ছাড়াই বড় বড় ক্রেন ও লিফট ব্যবহার করা হয়। এসব অনিয়মের ফলেই সাধারণ মানুষ নির্মাণ ঝুঁকির বলি হন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সবচেয়ে চিন্তার বিষয় এত মৃত্যু-আহতের পরও দায়হীনতার সংস্কৃতি রয়ে গেছে। তদন্ত কমিটি গঠিত হয়, কিন্তু বাস্তবে জবাবদিহি হয় খুব কমই। কাজের ত্রুটি, মানহীন সরঞ্জাম বা নিরাপত্তা না মেনে কাজ করার জন্য দায়ী সংস্থাগুলো প্রভাবশালী হওয়ায় শাস্তি এড়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে।
কিছু মৃত্যুর তথ্য নিচে দেওয়া হলো
চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর মেট্রোরেলের একটি পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড ছিটকে পড়ে পথচারী আবুল কালাম নিহত হন। ৩১ অক্টোবর ২০২৫ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে পড়ে রাকিব (২৬) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
২৯ নভেম্বর ২০২২ ঢাকার রামপুরায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে সুমন রায় (২০) নামে এক নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু হয়। ২৬ অক্টোবর ২০২৫ রাজধানীর কদমতলীর তুষার ধারা সাদ্দাম মার্কেট এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের চতুর্থ তলা থেকে নিচে পড়ে নুর ইসলাম (৪০) নামের এক নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু হয়। ৩০ আগস্ট ২০২৪ রাজধানীর সচিবালয়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনের ১৩ তলা থেকে পড়ে আব্দুস সামাদ (৪০) নামে এক নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা নির্মাণ নিরাপত্তার চরম অবহেলারই ইঙ্গিত বহন করে।
যানবাহন ও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি
ঢাকা শহরে যানবাহন ও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি এখন এক নীরব মহামারির রূপ নিয়েছে। দ্রুতগতির যানবাহন, নিয়ন্ত্রণহীন রাস্তা, অপর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং অদক্ষ চালকের সমন্বয়ে প্রতিদিনই ঘটছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। পথচারী, মোটরসাইকেল আরোহী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে সাধারণ যাত্রী- সবাইই এই অদৃশ্য ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে।
প্রধান সড়কগুলোতে গতি নিয়ন্ত্রণের অভাব, ফুট ওভারব্রিজ ও জেব্রাক্রসিং উপেক্ষা, বাসগুলোর লাইনে না চলা, প্রতিযোগিতামূলক চালানো এবং কালো ধোঁয়া উদ্গীরণকারী অবৈধ যানবাহন- সব মিলিয়ে সড়ককে করে তুলেছে আরও অনিরাপদ। বিশেষ করে রাজধানীতে হঠাৎ ইউটার্ন, এলোমেলো বাস স্টপেজ, অবৈধ পার্কিং ও সড়ক দখল পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
গত কয়েক বছরে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মজীবী মানুষ, পথচারী মা-বাবা অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন অসতর্কতা বা অবহেলার শিকার হয়ে। পরিবারগুলো হারিয়েছে উপার্জনক্ষম সদস্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ভেঙে পড়েছে মুহূর্তে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি থামাতে দরকার সমন্বিত উদ্যোগ, সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়ন, কঠোর লাইসেন্স ব্যবস্থা, গণপরিবহনে ‘এক লাইন, এক রুট’ নীতি কার্যকর করা, সিসিটিভি-নির্ভর ট্রাফিক মনিটরিং এবং চালক-যাত্রী-পথচারী সবার সচেতনতা। শহরকে নিরাপদ করতে সড়ক ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন এখন বিলম্ব সহ্য করে না, এটি জরুরি, জীবন রক্ষার পূর্বশর্ত।
সড়ক দুর্ঘটনায় কিছু মৃত্যুর তথ্য
সড়ক ও রেলপথও হয়ে উঠেছে মৃত্যুফাঁদ। (১৯ নভেম্বর ২০২৪) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অটোরিকশা দুর্ঘটনায় প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী নিহত হন। গত (৬ জুলাই ২০২৪) মিরপুর গোল চত্বর এলাকায় বাসের ধাক্কায় এক ব্যক্তি ছিটকে পড়ে নিহত হন। (২৭ জুন ২০২৫) রাজধানীর মিরপুরের টেকনিক্যাল মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে যাওয়া একটি বাসের ধাক্কায় একজন পথচারী নিহত হন।
(২৪ নভেম্বর ২০২১) সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) একটি আবর্জনাবাহী গাড়ির ধাক্কায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান মারা যান। (২০১৮ সালের ২৯ জুলাই) বিমানবন্দর সড়কে বাসের রেষারেষিতে দুই শিক্ষার্থী দিয়া ও রাজীবের মৃত্যু হয়। এছাড়া (২ মে ২০২৫) রেললাইনে ছবি তোলার সময় তরুণ ফটোগ্রাফার ইশতিয়াক আহমেদ রাফিদের মৃত্যু হয়।
অগ্নিকাণ্ড ও ভঙ্গুর অবকাঠামো
ঢাকা শহরে অগ্নিকাণ্ড ও ভঙ্গুর অবকাঠামো আজ শহুরে জীবনের সবচেয়ে বড় ঝুঁকির একটির নাম। নিত্যদিনের বাণিজ্যিক ভবন, বাসাবাড়ি, রেস্টুরেন্ট, বাজার সবখানেই আগুন লাগার ঝুঁকি যেন স্থায়ী আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবৈধ গ্যাসলাইন, জটলা তার, রেগুলেটরি সংস্থার দুর্বল তদারকি আর ভবনের নকশা নীতিমালা অমান্য করার কারণে অগ্নিকাণ্ড দ্রুতই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
রাজধানীতে অনেক ভবনই নির্মাণবিধি অনুসরণ না করে দাঁড়িয়ে আছে, জরুরি সিঁড়ি নেই, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র অচল, পানি সংরক্ষণ সুবিধা নেই, এমনকি যথাযথ বায়ু চলাচলের ব্যবস্থাও নেই। বড় বড় কমার্শিয়াল ভবন থেকে শুরু করে ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক গলি এমন অসংখ্য স্থানে আগুন লাগলে দমকল বাহিনীর দ্রুত পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এই ভঙ্গুর অবকাঠামোগুলোর আরেকটি বিপজ্জনক দিক হলো ভবনের পুরনো অংশ ভেঙে পড়া, দেয়াল বা সিলিং খসে মানুষের গায়ে পড়া, লিফট বিকল হয়ে দুর্ঘটনা ঘটানো যা প্রায়ই নজরের বাইরে থেকে যায়, কিন্তু প্রাণহানির ঝুঁকি সমান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পরিস্থিতির মোকাবিলায় দরকার সুস্পষ্ট রাজনৈতিক সদিচ্ছা, শক্তিশালী তদারকি, আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি সড়ক ও পানি-প্রবাহ নিশ্চিত করা এবং ভঙ্গুর অবকাঠামো শনাক্ত করে দ্রুত ঝুঁকিমুক্ত করা। আগুন বা ভবনধস কোনো ‘দুর্ভাগ্যজনিত’ ঘটনা নয়, এগুলো কাঠামোগত অব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘদিনের অবহেলার ফল, যা এখনই বন্ধ করতে না পারলে শহর আরও অনিরাপদ হয়ে উঠবে।
কয়েকটি মৃত্যুর তথ্য নিচে দেওয়া হলো
(১৪ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকার মিরপুর এলাকার একটি পোশাক কারখানায় আগুন লেগে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হন। (২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) বেইলি রোডে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষ প্রাণ হারান, যা বাণিজ্যিক ভবনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভগ্নদশাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। (২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩) রাত ১০টার দিকে ঢাকার মিরপুরের শিয়ালবাড়ি মোড়ে রাস্তায় জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক নারী ও এক শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয় ।
জনরোষ ও দাবি
এই সার্বিক পরিস্থিতিতে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। তারা দাবি করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি, নিরাপত্তা বিধিনিষেধের কঠোর বাস্তবায়ন এবং দায়িত্বহীনতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটালে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
ঢাকা সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে এই সকল দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ ও তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হলেও বাস্তবে দায়মুক্তির সংস্কৃতি এবং দৃশ্যমান জবাবদিহিতার অভাবই থেকে গেছে বলে মনে করেন শহর পরিকল্পনাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
ঢাকা মহানগরীর দ্রুতগতির উন্নয়ন প্রকল্প ও যানবাহন ব্যবস্থা যখন এগিয়ে চলেছে, তখন নাগরিক জীবনের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য না দেওয়ায় প্রতিনিয়তই কেড়ে নেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের জীবন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ শহুরে ঝুঁকি হ্রাস ও টেকসই উন্নয়ন সম্পর্কে তার মূল্যবান মতামত তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, প্রতিটি শহরেরই কিছু নিজস্ব ঝুঁকি থাকে। শহরের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের সকলেরই আলাদা আলাদা দায়িত্ব রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি সংস্থাগুলোর শহর গড়ার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ঝুঁকি-সহনীয় নগর গড়ে তোলা। এ জন্য তাদেরকে ঝুঁকি হ্রাসের বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করতে হবে। বিল্ডিং নির্মাণ থেকে শুরু করে সকল অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট তৈরি করতে হবে এই চিন্তা নিয়ে যে, কীভাবে দুর্ঘটনা, মৃত্যু ও হতাহতের ঘটনা এড়ানো যায়।
পরিকল্পনায় ত্রুটি থাকলে মৃত্যু ও দুর্ঘটনার পরিমাণ বাড়বে। তাই ঝুঁকি কমানোর একমাত্র উপায় হলো সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন, পাশাপাশি আইন মেনে চলা। উদাহরণস্বরূপ- অগ্নিকাণ্ডের অনেক ঘটনাই অসতর্কতার কারণে ঘটে। যদি বিল্ডিং কোড মেনে চলা হতো, তাহলে অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো বা দুর্ঘটনা ঘটলেও দ্রুত প্রতিকার পাওয়া যেত। একইভাবে, ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থায় সড়ক আইন, ট্রাফিক নির্দেশনা ও গতি সীমা মেনে চললে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে যায়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শুধু ভালো পরিকল্পনা করলেই হবে না, সেটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং নাগরিকদেরকে তাদের দায়িত্ব ও নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে হবে। সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি নাগরিক সকল পর্যায়ে দায়িত্ব সচেতনতা ঝুঁকি হ্রাসের জন্য অপরিহার্য।
অধ্যাপক মাহমুদ দুর্নীতি ও বিচার বিভাগের ভূমিকা সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। তার মতে, কোনো অপরাধের সুষ্ঠু বিচার না হলে তা একটি সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয় এবং তার পুনরাবৃত্তি ঘটে। ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।
সর্বোপরি, শহুরে ঝুঁকি হ্রাস করতে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা সব স্তরে সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও বাস্তবায়ন আবশ্যক বলে মনে করেন অধ্যাপক মাহমুদ।
এম/এএইচ