images

জাতীয়

মোহাম্মদপুরবাসীর আতঙ্ক ‘কব্জি আনোয়ার’

মোস্তফা ইমরুল কায়েস

১০ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:১৮ এএম

আনোয়ার হোসেনকে কেউ ‘কব্জি আনোয়ার’ আবার কেউ পানি সরবরাহ কর্মী আনোয়ার হিসেবেও চিনে। এই আনোয়ার রাজধানীর মোহাম্মদপুরবাসীর কাছে এখন এক আতঙ্কের নাম। যেকোনো সময় তিনি ও তার লোকজন হামলা করে বসেন। চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেই তারা ক্ষান্ত হন না, ভুক্তভোগীর হাতের কব্জি কেটে নিয়ে যান। এরপর সেই কব্জি দিয়ে উল্লাস করেন, কখনো কখনো টিকটক ভিডিও বানান। বছিলা, ঢাকা উদ্যান ও নবীনগর এলাকার উঠতি ১৫ থেকে ২০ জন যুবককে নিয়ে এই আনোয়ার গড়েছেন বাহিনী। যাদের কাজই হলো টার্গেট করা ব্যক্তিকে কোপানোর পর ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে মুহূর্তেই এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া। ফিল্মি স্টাইলে এসব কাজ করেন তারা।

যাদের ওপর হামলা হয়েছে শুধু তারাই জানেন আনোয়ার বাহিনী কতটা ভয়ংকর। জমি দখল থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসা, ছিনতাই ও ডাকাতি সবখানেই আনোয়ার ও তার সদস্যরা রয়েছেন। কখন কার ওপর এই আনোয়ার ও তার বাহিনীর সদস্যরা হামলা করে বসেন- সেটা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকাবাসী।

আরও পড়ুন: পুলিশের চোখে ‘পলাতক’ আনোয়ার কোপালেন দুজনকে

আনোয়ার গ্রুপের সদস্যরা হলেন- আহমেদ খান (২২), হাসান ওরফে গুটি হাসান (২৪), হানিফ হোসেন জয় (২৪), রমজান (২৩), রাজু (১৯), রাফিদুল ইসলাম রানা ওরফে রাফাত (২৩) ও রাফাতের সহযোগী তুষার হাওলাদার (২৩)। এখন তারা জেলে আছেন। এছাড়া আনোয়ার গ্রুপের অন্যতম সদস্য আদাবর ১০ নম্বরের আকাশ, ইউনুস (সম্প্রতি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার), আনোয়ারের আশ্রয়দাতা মামুন ও সাগর সেলিম, পাগলা নাসির, পোংটা বাবু, আইএসডি সোহেল, আতিয়ার ও রবিউলও রয়েছেন।

যেভাবে হামলা করেন আনোয়ার ও তার সহযোগীরা

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আনোয়ার গ্রুপের সদস্যরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খুলে যোগাযোগ করেন। গ্রুপের নাম ‘আশিকি টু হ্যালো হ্যালো’। তারা সবাই একই রংয়ের টিশার্টও পরেন।

আনোয়ার বাহিনী যাকে টার্গেট করে তাকে যেকোনোভাবে হামলা করে বসে। তারা প্রথমে সেই ব্যক্তিকে ফলো করে। তাদের কেউ রাস্তায় যানজট তৈরি করে, কেউ সিসি ক্যামেরা থাকলে সেগুলো ভাঙচুর ও নজর রাখে, পুলিশ ও কেউ বাধা দিচ্ছে কি না সেটা খেয়াল রাখে। আবার কেউ মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের আদলে যানজট নিয়ন্ত্রণের নাটক সাজিয়ে রাস্তা ব্লক করে। এরপর তারা ফিল্মি স্টাইলে ভুক্তভোগীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে হাতের কব্জি কেটে সবার সামনে দিয়ে হেঁটে যায়। এসব দৃশ্য মোহাম্মদপুর, বছিলা, ঢাকা উদ্যান ও নবীনগর এলাকার মানুষের কাছে খুবই চেনা। তারা কয়েক বছর থেকেই দেখছেন, কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না।

Anwar3

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক মাসে এই আনোয়ারের হাতেই আটজন হামলার শিকার হয়েছেন। কেউ হারিয়েছেন পা, কেউ হাত আবার কেউ পঙ্গু হয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছেন। তার হামলার শিকার ব্যক্তিদের বেশিরভাগই সেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। আবার কেউ সেই এলাকায় থাকলেও মুখে কুলুপ এঁটে থাকছেন। তার ভয়ে মামলাও করেন না অনেকে। আবার কেউ মামলা করলে তাকে নানা ভয়ভীতি দেখান আনোয়ার গ্রুপের সদস্যরা।

কোপানের পর হাতের কব্জি কেটে নেন আনোয়ার

ঢাকা উদ্যানের সেন্টু মিয়া। এক সময় স্বাভাবিক জীবনযাপন করলেও এখন তিনি পঙ্গু। তার হাত নেই। কোনো কাজ করতে পারেন না। গত ২৪ জুন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা সেন্টু এখন অবর্ণনীয় কষ্টের জীবন পার করছেন। তিনি এক সময় আনোয়ার গ্রুপের ভাগনা নাঈমের মাদক বিক্রি করতেন। কিন্তু পরে তিনি ওই এলাকার জনির মাদক বিক্রি শুরু করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ভাগনা নাঈম সেন্টুর ডান হাতে মাঝ বরাবর কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। সঙ্গে একটি আঙ্গুলও কেটে নিয়ে যান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেন্টুর ওপর হামলা হলেও তার পরিবার কোনো মামলা করেনি। তাদের ভাষ্য, মামলা করে কী হবে?

গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে মোহাম্মদপুরে আরমান হোসেন নামের এক যুবকের বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করেন আনোয়ার ও তার গ্রুপের সদস্যরা। পরে তারা আরমানের হাতের কব্জি নিয়ে চলে যান। এমনকি সেটি দিয়ে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ওই সময় তারা তার ডান হাত ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেন।

আরও পড়ুন: ‘কসাই খলিলে’ অতিষ্ঠ পল্লবীবাসী

আরমান জানান, ২৬ আগস্ট স্ত্রীকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। বিভিন্ন খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা পকেটে রেখেছিলেন। তাকে হামলার পর সেই ২০ হাজার টাকাও নিয়ে যায়। তাকে সে সময় ছয়জন হামলা করে। কিন্তু এর মধ্যে রাফাত, তুষার ও ইউনুসকে তিনি চিনতে পেরেছিলেন, যারা আনোয়ার বাহিনীর সদস্য।

বছিলা, ঢাকা উদ্যান ও নবীনগর এলাকার উঠতি ১৫ থেকে ২০ জন যুবককে নিয়ে এই আনোয়ার গড়েছেন বাহিনী। যাদের কাজই হলো টার্গেট করা ব্যক্তিকে কোপানোর পর ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে মুহূর্তেই এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া। ফিল্মি স্টাইলে এসব কাজ করেন তারা। 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। পরে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করে।

একই কায়দায় গত ২৯ জুলাই হামলা চালানো হয় রাকিব আলমগীরের ওপর। তিনি নবোদয় হাউসিং এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় তার মাথায়, পিঠে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন আনোয়ার গ্রুপের সদস্যরা। রাকিব এ ঘটনায় মামলা করলেও সেই মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

রাকিব বলছিলেন, মামলা করার কারণে তারা আমার বাসার সামনের সড়ক থেকে অস্ত্রের মুখে মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। বিষয়টি পুলিশকে জানালেও তারা কাউকে গ্রেফতার করেনি। এ অবস্থায় চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন রাকিব। তবে নিজের মোটরসাইকেলটি ছিনতাই হয়ে যাওয়ায় পাঠাও চালিয়ে উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে তার।

গত ৩ জুন রাতে আনোয়ার গ্যাংয়ের হামলার শিকার হন আলমগীর মণ্ডল পষু। তিনি হামলায় বাঁ হাতের কবজি পর্যন্ত হারিয়েছেন। তবে তিনি থানায় মামলা করেননি। তবে পষুর ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি এখন কারাগারে। পষু পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। আনোয়ার গ্রুপের সদস্যদের ধরিয়ে দেওয়ার কারণে তার হাতের কব্জি কেটে নিয়ে তা দিয়ে ভিডিও টিকটক বানায় তারা। এই ভিডিও এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।

আরও পড়ুন: কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় পুলিশ, তালিকায় হাজার নাম

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত তিন মাসে আনোয়ার গ্রুপের সদস্যদের হামলার শিকার হয়ে আটজন মৃত্যুর মুখোমুখি। তাদের পাঁচজন একেবারেই পঙ্গু হয়ে গেছেন। বাকিরা কোনোভাবে বেঁচে আছেন। তাদের দুজনের হাত কেটে নিয়ে গেছে। একজনের পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। অন্যজনের আঙ্গুল কেটে নিয়ে গেছে।

কে এই আনোয়ার

আনোয়ার এক সময় থাকতেন আদাবর এলাকায়। কিন্তু এখন তার ঠিকানা ভাসমান। তিনি এক সময় পানির জার ট্রাকে তুলে দিতেন। পরে হয়ে যান ট্রাকচালক। কিন্তু কয়েক বছর আগে একটি ছিনতাইয়ের মামলায় জেট খেটে বের হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া এই আনোয়ার। তিনি এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান হিসেবেও কাজ করেন। আনোয়ারের এক ভাই রিকশা চালান, আরেক ভাই সিগারেট কোম্পানিতে চাকরি করেন।

Anwar2

আনোয়ার ও তার বাহিনীর সদস্যরা দাপিয়ে বেড়ান পুরো মোহাম্মদপুর এলাকায়। সবসময় আনোয়ারের কাছে থাকে একটি আড়াই কেজি ওজনের চাপাতি। যা কব্জি কাটার জন্য ব্যবহার করেন তিনি এবং তার সদস্যরা। কেউ নতুন বাড়ি তুললে, জমি বিক্রি করলে এবং টাকা তুলে ব্যাংক থেকে ফেরার কথা জানলে আনোয়ার ও তার বাহিনীর সদস্যরা সেখানে গিয়ে হাজির হন। এরপর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে হাতের কব্জি কেটে চলে যায় তারা। পরে সেই কব্জি নিয়ে উল্লাস করেন আনোয়ার ও তার সহযোগীরা। কখনো কখনো কাটা কব্জি দিয়ে টিকটক ভিডিও বানান। কয়েক মাস আগে এমন একটি ঘটনায় ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে। এরপর তার বাহিনীর সাতজনকে গ্রেফতার করা হলেও এখনো অধরা সেই আনোয়ার।

মৃত্যুর মুখোমুখি অনেকেই

আনোয়ার গ্রুপের সদস্যের হাতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর মুখোমুখি যুবক সাজ্জাদ হোসেন। তাকে গত ২ অক্টোবর ঢাকা উদ্যান এলাকায় হামলা করা হয়। হামলাটি ছিল মূলত ওই এলাকার রুহুল নামে একজনের ওপর। তবে সেই দৃশ্য দেখে তিনি বাধা দিতে গেলে তাকে উপর্যুপরি চাপাতি দিয়ে কোপ মেরে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যান আনোয়ার ও তার সহযোগী ইউনুস।

আরও পড়ুন: ‘সিম কিনে’ যেভাবে ফাঁসলেন পুরো গ্রামের বাসিন্দারা

সাজ্জাদ মোবাইল ফোনে ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাকে যখন সেই হ্যাংলা পাতলা টোকাই চেহারার ছেলেটা (আনোয়ারের সহযোগী) চাপাতি দিয়ে কোপাচ্ছিল তখন তাকে অনুরোধ করছিলাম- ভাই আমার একটা দুই মাসের শিশু সন্তান আছে, মাফ কইরা দেন। তখন সে বলছিল, তোর হাতটা দে। আমার তোর হাতটা লাগবো। আমি হাত বাড়ানোর সাথে সাথে তাতে কোপ মারে। পরে পিঠে, পায়ে, পাছায় কোপ মারলে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। এসময় তারা চলে যায়। পরে লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

সাজ্জাদকে হামলার সময় তার ডান হাতে কোপ মেরে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। সামান্য লেগে থাকায় সেটি অপারেশন করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনো তার আরেকটি বড় অপারেশন প্রয়োজন। যার জন্য প্রয়োজন পাঁচ লাখ টাকা। এক সময়ের চা বিক্রেতা সাজ্জাদ এখন অসহায় জীবন-যাপন করছেন। টাকা না থাকায় একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আনোয়ার গ্রুপের সদস্যরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খুলে যোগাযোগ করেন। গ্রুপের নাম ‘আশিকি টু হ্যালো হ্যালো’। তারা সবাই একই রংয়ের টিশার্টও পরেন।

সাজ্জাদ যাকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন সেই রুহুল আমিন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আনোয়ার খুবই বীভৎস। তার হামলার শিকার যারা হয়েছেন তারাই জানে সে কত ভয়ংকর।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আনোয়ার ঢাকা উদ্যান ও নবীনগর ছাড়াও নবোদয় ও বছিলা মেট্রো এলাকায় দাপিয়ে বেড়ান। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনা ঘটানোর পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। ফলে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরতে পারছে না। অথচ এই আনোয়ারের নামে মোহাম্মদপুর থানায় কয়েকটি মামলাও রয়েছে। পুলিশের কাছে পলাতক হলেও আনোয়ার গত ২ অক্টোবর রুহুল ও সাজ্জাদ নামে দুইজনের ওপর হামলা করেন।

আরও পড়ুন: বাবা যখন মেয়ের খুনি, সিনেমাকেও হার মানায় যে গল্প

ঢাকা উদ্যান, নবীনগর, বছিলার মেট্রো হাউজিংসহ মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে এই আনোয়ারের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাকে ‍মোহাম্মদপুর যুবলীগের নেতা সাগর সেলিম ও মামুন আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আনোয়ার ও তার গ্রুপের সদস্যরা গ্রেফতার হলে তাদের তারা জামিন করানোর ব্যবস্থাসহ আইনি লড়াইয়ের যাবতীয় কাজ করেন। তারাও এখন গা ঢাকা দিয়েছেন।

যা বলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে, আনোয়ার সম্প্রতি এলাকায় আসেন। তবে খুব গোপনে। টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে কোপ দিয়ে আবারও চলে যান তিনি ও তার সদস্যরা। সাত সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে আনোয়ার ও তার গ্রুপের সদস্যরা এলাকাছাড়া। গ্রেফতার এড়াতে আনোয়ার কোনো মোবাইল সিমও ব্যবহার করেন না। বিভিন্ন এলাকায় চলাফেরার সময় বাসাবাড়ি বা কোনো প্রতিষ্ঠানের ওয়াইফাই ব্যবহার করে টার্গেট করা ব্যক্তিকে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে হুমকি দেন। এরপর দ্রুত সেখান থেকে চলে যান তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক ঢাকা মেইলকে বলেন, আনোয়ারের বিষয়গুলো আমরা জানি। সে পলাতক রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে ভারত চলে গিয়ে থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। আমাদের সদস্যরা কাজ করছেন। খুঁজে পেলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।

এ ব্যাপারে র‌্যাব-২ এর সিও ডিআইজি আনোয়ার হোসেন খান ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তাকে ধরার জন্য। সম্প্রতি ইউনুস নামে তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছি। তবে সে গা ঢাকা দিয়েছে। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

র‌্যাবের দাবি, এখন পর্যন্ত যাদের হামলা করেছে আনোয়ার ও তার বাহিনীর সদস্যরা তারা কমবেশি সবাই অপরাধী চক্রের সদস্য। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তারা হামলা শিকার হয়েছেন।

এমআইকে/জেবি