images

লাইফস্টাইল

‘বেদনাদায়ক একটা ঘটনা ঘটে এ বছর’

লাইফস্টাইল ডেস্ক

২৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৩৯ এএম

শেষ হতে চলল ২০২২। সেই সঙ্গে দরজায় কড়া নাড়ছে নতুন বছর। সফলতা-ব্যর্থতা, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্না সব মিলিয়েই কাটে আমাদের প্রতিটা বছর। কারো কারো খুব ভালো সময় যায়, আবার কারো ভালো-খারাপ মিলিয়ে দিন-মাস ঘুরে চলে যায় সম্পূর্ণ একটা বছর।

পেশায় একজন শিক্ষার্থী ও তরুণ লেখক রাফিয়া মেহেদী ছোঁয়া। ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি জানান ২০২২ সালটি কেমন কেটেছে তার। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, সমাজ নিয়ে ভাবনাসহ আরও অনেক কিছু উঠে আসে আড্ডায়।

শুরুতেই ছোঁয়া বলেন, ২০২২ সাল অন্যান্য সালগুলোর মতোই প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির মাঝে ভালো ছিল। তবে আমার জন্য ভীষণ মন খারাপের ও বেদনাদায়ক এক ঘটনা ঘটে এই ২০২২ সালেই।

choya

ঘটনাটা বলি—আমি ভীষণ পশুপ্রেমী। আমার একটা পোষা বিড়াল ছিল। নাম মিক্রি। সে আমার সন্তানসম ছিল। গত জুলাই মাসে হঠাৎ ওকে হারিয়ে ফেলি। এই কষ্টটা যারা পশুপাখি পালন করে তারা হয়তো কিছুটা বুঝবেন। ব্যাপারটা আমার পুরো পরিবারের জন্য ভীষণ কষ্টদায়ক ছিল। মিক্রির ছোট ছোট প্লেট, বাটি, তোয়ালেগুলো এখনো যত্ন করে রাখা আছে আমার বাসায়। এখনো মনে হয় ও কোনো একদিন ফিরে আসবে।

এই বছরে অর্জন কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, অর্জন বলতে যা বুঝায় তেমন কিছু আসলে এই বছরে আমার ঝুলিতে আসেনি। তবে নিজের কিছু ভুল সিদ্ধান্ত থেকে অনেক কিছু শিখেছি আমি, এটাকেই অর্জন হিসেবে দেখছি।

এই বছরে করা হয়নি এমন কোনো কাজের জন্য আফসোস হয় কিনা যা নতুন বছরে করবেন। প্রশ্ন করতেই ছোঁয়া বলেন, আসলে এমন উপলব্ধি আমার মাঝে মাঝেই হয়। তাই নির্দিষ্ট করে একটা বলা আমার জন্য মুশকিল। তবে আমার মনে হয়, ক্যারিয়ার নিয়ে আরও একটু বেশিই সচেতন হওয়া উচিত ছিল আমার।

choya

এই তরুণ লেখক মনে করেন আগের থেকে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান কিছুটা হলেও কঠিন হয়েছে। ছোঁয়া বলেন, আমি খুব বিশ্বাস করি যে, যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ। জীবনযাত্রা খারাপ যাচ্ছে না, ভালোই যাচ্ছে। তবে দিনের পর দিন, কঠিন দিনই আসবে। কেননা আমরা প্রতিনিয়ত যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, প্রতি মুহূর্তে নিজেদের গ্রুমিং করছি, নিজেদের জন্যই ফাইট করছি। তাই সবকিছু মিলিয়ে কঠিন তো বটেই। তবে আমি তৈরি সব কঠিন দিনের জন্য।

আরও পড়ুন- 
‘অদ্ভুত এক বছর এটি’
সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের হার বেড়েছে

জীবন থেকে কাউকে হারিয়েছেন কী? সেই ঘটনা শুনতে চাই তার কাছে। তিনি বলেন, জীবন থেকে একটা মানুষকে হারানোর ব্যথা প্রতি মুহূর্তে অনুভব করি। আমার বাবা। ২০১১ সালে হারিয়েছি ওনাকে। মানুষটাকে সবসময় আমার ভীষণ প্রয়োজন। তবে এই বছরে কাউকে হারাইনি বরং স্পেশাল একজনকে পেয়েছি।

নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে তিনি সবার জন্য পরামর্শ হিসেবে বলেন, জীবনে আমরা নিজেদের থেকে অন্যদের প্রায়োরিটি বেশি দিয়ে থাকি। কিন্তু দিনশেষে নিজেরা ছাড়া আমাদের কেউ নেই। তাই ফার্স্ট প্রায়োরিটি সবসময় নিজেকেই রাখতে হবে।

choya

নতুন বছরের রেজ্যুলেশন কী? নিজের কোন বিষয়ে পরিবর্তন আনতে চান? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, অন্যের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পস্তানো যাবে না। নিজের সিদ্ধান্তে মরে যাওয়াও শ্রেয়। নিজের কিছু পরিবর্তন সবসময় আনতে চাই। তার মধ্যে অন্যতম হলো আবেগ কন্ট্রোল করা এবং স্ট্রেট ফরোয়ার্ড হওয়া।

এই তরুণ লেখক আশা করেন, সমাজে মানুষে মানুষে সমতা আসবে। সমাজ থেকে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শব্দগুলো উচ্ছেদ হবে।