images

লাইফস্টাইল

বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীর ৭৫ শতাংশই ভুগছে অবসাদে, ল্যানসেটের সমীক্ষা

লাইফস্টাইল ডেস্ক

২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম

ভয় আর দুশ্চিন্তা যেন এই প্রজন্মের পরম বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে। অকারণে দুশ্চিন্তা হচ্ছে সঙ্গী। যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা অতিরিক্ত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় ভুগছে। বয়ঃসন্ধিকালে কিংবা বয়ঃসন্ধি পার করার সময় মানসিক অবসাদ গ্রাস করছে কিশোর-কিশোরীদের। এমনটাই দাবি করা হচ্ছে দ্য ল্যানসেট’ এর সমীক্ষায়।

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ‘মারডক চিলড্রেন'স রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ দীর্ঘ দিন ধরে সমীক্ষা চালাচ্ছে ১৫-২৪ বছর বয়সীদের নিয়ে। সমীক্ষা শেষে তারা দাবি করেছে, বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীদের অন্তত ৭৫ শতাংশই মানসিক অবসাদের শিকার। ‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে এই সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। 

teen2

গবেষক এলি রবসন জানিয়েছেন, ১২৩৯ জন কিশোর ও কিশোরীকে নিয়ে সমীক্ষাটি করা হয়। এতে দেখা গেছে, বয়ঃসন্ধির পর্বে এসে ছেলেমেয়েরা অতিরিক্ত উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তায় ভুগছে। কিন্তু কেন? 

গবেষকরা বলছেন, এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। পড়াশোনা, পরীক্ষার চাপ স্বাভাবিক কিছু কারণ। তবে এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জেদ, প্রত্যাশা পূরণ না-হওয়া, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, পারিবারিক নানা বিষয়, শারীরিক নিগ্রহ ইত্যাদি কারণেও কিশোর-কিশোরীরা অবসাদে ভুগছে। 

teen3

সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, বয়ঃসন্ধির মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশি অবসাদে ভুগছে। ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঝড়ঝাপটা তো আছেই তার পাশাপাশি শরীরের অন্দরেও এমন অনেক সমস্যা ঘটে, যেগুলোর কারণে মানসিক অবসাদ হানা দেয়। 

গবেষকদের মতে, কিশোরীদের মধ্যে ‘মুড ডিজঅর্ডার’-এর সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। মন খারাপের জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী পরিস্থিতিকে চিকিৎসার পরিভাষায় ‘ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার’ বলা হয়। কিশোরীদের মধ্যে এমন সমস্যাও দেখা যাচ্ছে। 

teen4

ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের রিপোর্ট অনুযায়ী, কমবয়সীদের মধ্যে ৩১-৬৮ শতাংশ মানসিক অবসাদের শিকার। সমীক্ষা জানাচ্ছে, ভারতে কিশোর এবং সদ্য তরুণদের মধ্যে মানসিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার প্রবণতা তুলনামূলক কম। তারা মানসিক সমস্যাকে তেমন গুরুত্ব দেয় না। মানসিক সঙ্কট নিয়ে কারো সঙ্গে আলোচনা করার বদলে তা নিজেদের মধ্যে চেপে রাখার ঝোঁকও বেশি দেখা যাচ্ছে। আর তাই সমস্যা আরও বাড়ছে। 

মনোবিদদের মতে, মন খারাপ বা অবসাদের বিষয়টি যদি সাময়িক হয়, তাহলে তা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এমনটা যদি লাগাতার হতে থাকে, তখন কাউন্সেলিং করাতে হবে। ডিপ ব্রিদিং বা অন্য কিছু ব্যায়াম করলে কিছুটা উপকার মিলবে। 

teen5

সচেতন হতে হবে অভিভাবকদেরও। সন্তান যদি অতিরিক্ত উদ্বেগে ভোগে, তাহলে মা-বাবাকে ধৈর্য ধরে বোঝাতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতেই মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। বাড়ির পরিবেশ যদি ঠিক না থাকে, মা-বাবাও যদি উৎকণ্ঠা বা বাজে পরিস্থিতিতে ভোগেন তার প্রভাব সন্তানের ওপরও পড়তে পারে। 

এনএম