আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৩ পিএম
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তের চলমান সামরিক সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। দুইদিন ধরে উভয় দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছে।
থাই সেনাবাহিনী দাবি করেছে, শুত্রবারও কম্বোডিয়ার বাহিনী ভারী অস্ত্র ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে।
এক বিবৃতিতে থাই সেনাবাহিনী জানায়, কম্বোডিয়া বিএম-২১ রকেট লাঞ্চার ও ফিল্ড আর্টিলারি দিয়ে ধারাবাহিকভাবে গোলাবর্ষণ চালায়। পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে থাই সেনারাও সশস্ত্র হামলা চালায়।
থাই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংঘাতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৫৬ মানুষকে সরিয়ে নিরাপদ এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অন্যদিকে কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন বিভিন্ন থাই গ্রামে লোকজন নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন।
থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে একজন সৈনা সদস্যও রয়েছে। এছাড়াও ১৫ সৈন্যসহ ৪৬ জন আহত হয়েছেন।
কম্বোডিয়া একজন সন্ন্যাসীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং বৃহস্পতিবার থাই বিমান বাহিনীর বিমান হামলায় আরও পাঁচজন আহত হয়েছে।
তবে থাই সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা দাবি, বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে বিমান হামলা এবং কামানের গোলার আঘাতে কমপক্ষে ২৪ জন কম্বোডিয়ান, যাদের বেশিরভাগই সৈন্য নিহত হয়েছে। হামলায় তিনটি ১০০ মিলিমিটার মর্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কম্বোডিয়া এখনও এই দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এর একদিন আগেই, বৃহস্পতিবার সীমান্তে উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে কমপক্ষে ১১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। ওই ঘটনার পর থাইল্যান্ড ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে। এর মধ্যে একটি বিমান কম্বোডিয়ার একটি সামরিক অবস্থানে বোমা ফেলে।
সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে অন্তত ছয়টি এলাকায়, যেগুলোর ওপর দুই দেশেরই দাবি রয়েছে বহু দিন ধরে। শুরুতে হালকা অস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হলেও পরে তা ভারী গোলাবর্ষণে রূপ নেয়। এটি ১৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও সহিংস সশস্ত্র সংঘাত বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে এ বিষয়ে শুক্রবার নিউইয়র্ক সময় বিকেল ৩ টায় বৈঠকে জরুরি বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির কাছে পাঠানো এক চিঠিতে থাইল্যান্ডকে ‘পূর্বপরিকল্পিত সামরিক আগ্রাসনের’ জন্য দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, এটি আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
সুত্র: আনাদোলু
এমএইচআর