রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সংঘাতের কারণ কী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৪ পিএম

শেয়ার করুন:

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সংঘাতের কারণ কী?

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে কয়েক মাস ধরে চলা উত্তেজনা ভয়াবহ সামরিক সংঘাতে রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রতিবেশী দুই দেশের সামরিক বাহিনী পাল্টাপাল্টি বিমান ও রকেট হামলা চালিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে থাই কর্তৃপক্ষ।

দুই দেশের মধ্যে এই বিরোধিতা একশো বছরেরও বেশি আগের। কম্বোডিয়ায় ফরাসি দখলদারিত্বের পর দুই দেশের মধ্যে এই সীমান্ত সৃষ্টি হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিস্থিতি বিরূপ হয় ২০০৮ সালে যখন কম্বোডিয়া ওই বিতর্কিত এলাকায় অবস্থিত একাদশ শতাব্দীর একটা মন্দিরকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে নিবন্ধিত করার চেষ্টা করে। থাইল্যান্ড এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানায়।


বিজ্ঞাপন


দুই দেশের মধ্যে চলে আসা এই বিরোধের জেরে বছরের পর বছর ধরে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে উভয় পক্ষের সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে গত মে মাসে সংঘর্ষের সময় কম্বোডিয়ার এক সেনার মৃত্যুর পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। এর মধ্যেই চলতি মাসে সীমান্ত এলাকায় একের পর এক স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রতিবেশী দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটে। 

গত দুই মাসে দুই দেশই একে অন্যের বিরুদ্ধে সীমান্ত বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কম্বোডিয়া থাইল্যান্ড থেকে ফল ও সবজি আমদানি নিষিদ্ধ করেছে এবং বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পরিষেবা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।

গত ১৬ জুলাই বিস্ফোরণে থাইল্যান্ডের এক সেনা পা হারান। পরবর্তী বিস্ফোরণ ঘটে গত বুধবার। এতে থাইল্যান্ডের অন্তত পাঁচ সৈন্য আহত হন। বিস্ফোরণে তাদের একজনের পা উড়ে যায়। কম্বোডিয়ায় বিতর্কিত এলাকায় মাইন পুঁতে রেখেছিল বলে অভিযোগ করেছে ব্যাংকক।


বিজ্ঞাপন


এর জেরে বুধবার রাতে কম্বোডিয়ায় নিযুক্ত নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে থাইল্যান্ড এবং ব্যাংককে নিযুক্ত কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার ঘোষণা দেয়। এরপরই বৃহস্পতিবারের ভোরে সেই উত্তেজনা সংঘর্ষে রুপ নেয়। 

সংঘাত কোন দিকে এগোচ্ছে?

থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই জানিয়েছেন, কম্বোডিয়ার সঙ্গে তাদের বিরোধের বিষয়টা 'স্পর্শকাতর'। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এবং সতর্কতার সঙ্গে এর সমাধান করতে হবে।

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত জানিয়েছেন, তার দেশ শান্তিপূর্ণভাবে এই বিরোধের সমাধান করতে চায়। তবে সশস্ত্র আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর অন্য কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে বৃহস্পতিবার ভোরে সংঘাত শুরুর পর দুই দেশের মধ্যে গুরুতর গুলি বিনিময় তুলনামূলকভাবে দ্রুত হ্রাস পেয়েছে।

বর্তমান সংঘর্ষ পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে হলেও উভয় দেশেই এই সংঘাত থেকে সরে আসার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী নেতৃত্বের অভাব রয়েছে।

এমএইচআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর