images

আন্তর্জাতিক

গাজায় হতাহত ও নিখোঁজের সংখ্যা এক লাখ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:২৩ এএম

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গত ১০০ দিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত, আহত এবং নিখোঁজের সংখ্যা এক লাখে পৌঁছেছে। ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

মানবাধিকার গোষ্ঠীটি বলেছে, 'ইসরায়েলি হামলার কারণে বহু মানুষ দীর্ঘমেয়াদে অক্ষম হয়ে গেছে।' খবর আনাদুলু এজেন্সি

ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত গাাজয় ইসরায়েলের হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৩১ হাজার ৪৯৭ এ পৌঁছেছে। এর মধ্যে ২৮ হাজার ৯৫১ জন বেসামরিক নাগরিক।

আরও পড়ুন: গাজায় হামলার ১০০ দিন, যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপসহ বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ

সংস্থাটি জানিয়েছে, বেসামরিক নিহতের সংখ্যা মোট নিহতের ৯২ শতাংশ। এর মধ্যে ১২ হাজার ৩৪৫টি শিশু এবং ৬ হাজার ৪৭১ জন নারী। এছাড়া ২৯৫ স্বাস্থ্যকর্মী, ৪১ জন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী এবং ১১৩ জন সাংবাদিক।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা ও বিতর্কিত অভিযানে আহত হয়েছে ৬১ হাজার ৭৯ জন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।

সংস্থাটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের হতাহতের এই পরিসংখ্যানে ইসরায়েলি সেনার মাধ্যমে গ্রেফতার, জোরপূর্বক নিখোঁজের পাশাপাশি ধ্বংস হওয়া হাজার হাজার ভবনের নিচে আটকা পড়া ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যারা বিভিন্ন ধ্বংস হওয়া ভবনের নিচে আটকে রয়েছেন তাদেরকে মৃত বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: আমরা যুদ্ধে হেরে গেছি: ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষা প্রধান

ইউরো-মেড জোর দিয়ে বলেছে, চলমান ইসরায়েলি সহিংসতার কারণে শত শত মৃতদেহ উদ্ধার করা যাচ্ছে না। অনেক মৃতদেহ রাস্তায় পড়ে রয়েছে, বিশেষ করে যেসব এলাকায় ইসরায়েলের সেনাবাহিনী স্থল আক্রমণ করছে সেখানে।

সংস্থাটি আরও উল্লেখ করেছে যে, গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি (মোট জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ) নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে তাদের বাড়িঘর এবং আবাসিক এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৯ হাজার ৭০০ আবাসন ইউনিট সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া এক লাখ ৮৭ হাজার আবাসন ইউনিট আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেনেভা-ভিত্তিক গ্রুপটি বলেছে যে, 'ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গাজা থেকে বিশাল জনসংখ্যাকে উৎখাত করার লক্ষ্যে হামলা চালাচ্ছে। এটি সম্ভবত যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গণহত্যা।'

আরও পড়ুন: গাজায় হামলা: ব্লিঙ্কেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের ফলাফল ‘শূন্য’

সংস্থাটি জানিয়েছে, 'ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করছে যাতে অনেক বেশি হতাহতের ঘটনা। এটি আন্তর্জাতিক মানবিক আইন, ১৯৪৯ সালের জেনেভা কনভেনশনের পরিপন্থী এবং রোম সংবিধি অনুযায়ী এটি যুদ্ধাপরাধ।'

এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজায় হামলার ১০০ দিন পূর্ণ হওয়ার আগে এমন বার্তা দেন তিনি।

গাজায় হামলা চালিয়ে প্রায় ২৪ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। ইহুদিবাদি নেতা নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনে গণহত্যার অভিযোগের পরও হামলা কমাতে চান না।

আরও পড়ুন: হামাসের শীর্ষ নেতা কারা, শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু?

ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। বিধ্বস্ত হয়েছে বেশিরভাগ ঘরবাড়ি। সেখানকার বিপজ্জনক ও অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যে প্রতিদিন অন্তত ১৮০ জন নারী সন্তান প্রসব করছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট।

গাজা মিডিয়া অফিস শনিবার বলেছে যে, ইসরায়েলের অবরোধের কারণে খাদ্য ও পানি সংকটের কারণে মৃত্যুর মুখোমুখি অন্তত ৮ লাখ মানুষ। সংকট মোকাবেলায় প্রতিদিন ১৩০০ ট্রাক খাদ্য প্রয়োজন। এর মধ্যে ৬০০ ট্রাক উত্তর গাজায় এবং ৭০০ ট্রাক দক্ষিণের জন্য প্রয়োজন।

একে