শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

গাজায় হামলা: ব্লিঙ্কেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের ফলাফল ‘শূন্য’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:২৪ পিএম

শেয়ার করুন:

গাজায় হামলা: ব্লিঙ্কেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের ফলাফল ‘শূন্য’
নেতানিয়াহুর সঙ্গে ব্লিঙ্কেনের বৈঠক। ছবি: এক্স

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এই সময়ে মধ্যে চারবার ইসরায়েলসহ মধ্যপ্রাচ্য সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এই সপ্তাহে সর্বশেষ সফর করেছেন তিনি। তবে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ ও ইসরায়েল সফর করেও তেমন কোনো ফল বয়ে আনতে পারেননি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন ইসরায়েল থেকে পশ্চিম তীর এবং তারপর বাহরাইন ভ্রমণ করেন। এটি তার সর্বশেষ মধ্যপ্রাচ্যের সফরের শেষ অংশ ছিল। এর আগে তিনি তুরস্ক, গ্রিস, জর্ডান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব ও মিশর সফর করেন।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: আমরা যুদ্ধে হেরে গেছি: ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষা প্রধান

বরাবরের মতো ব্লিঙ্কেনের এই সফরে বেশিরভাগ মনোযোগ ছিল ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের দিকে। ইসরায়েলকে থামাতে দেশটি কী পদক্ষেপ নেয়, সেটি জানতে সবাই আগ্রহী। কারণ ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় ২৩ হাজার ৩৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে গাজায়। সেখানে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। এমন উদ্বেগের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ দেখতে চায় বিশ্ব।

মঙ্গলবার তেল আবিবে দাঁড়িয়ে ব্লিঙ্কেন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের সঙ্গে আছে। তবে তিনি ইসরায়েলকে গাজায় বেসামরিক হতাহতের বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, সেখানে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি রয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: হামাসের শীর্ষ নেতা কারা, শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু?


বিজ্ঞাপন


বিশ্লেষকরা ব্লিঙ্কেনের সর্বশেষ সফরকে ‘মুখরক্ষার সফর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। কারণ গাজায় হামলার শুরু থেকেই ইসরায়েলের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে এবং বাস্তবে কোনো পদক্ষেপের বিষয়ে ব্যর্থ হয়েছেন ব্লিঙ্কেন। এরপর তিনি একটি সূক্ষ্ম লাইনে হাঁটতে চেয়েছিলেন।

মঙ্গলবার তেলআবিবে ব্লিঙ্কেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এই যুদ্ধ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করতে চাই।’

তবে ডেমোক্রেসি ফর দ্য আরব ওয়ার্ল্ড নাউ (ডিএডব্লিউএন) এর ফিলিস্তিন-ইসরায়েল বিষয়ক গবেষণা পরিচালক মাইকেল শেফার ওমের ম্যান বলেন যে, ‘যুদ্ধের তিন মাস পার হওয়ার পরও একটি শেষ খেলা অধরা রয়ে গেছে।’

আরও পড়ুন: ‘গাজাকে মরুভূমি বানানো হলেও পুনর্নির্মাণ করব’

তিনি জানান যে, এখনও কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি যুদ্ধের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূল করার ইসরায়েলের মিশন নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন।

এই গবেষক বলেন যে, ‘ইসরায়েলিরা এখনও এখনও স্বপ্নের জগতে বাস করছে, যাতে তারা মনে করে যে তারা অসম্ভবকে অর্জন করতে পারে। আর আমেরিকানরাও এমন স্বপ্নের জগতে রয়েছে। দেশটি মনে করছে যে ইসরায়েলিদের এমন কোনো স্থানে তারা নিয়ে যেতে পারবে যেটি বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।’

সমালোচকরা সতর্ক করেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলও যুদ্ধের পরে এগিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- তেল আবিব সফরে ব্লিঙ্কেন ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান গ্রহণ করার আহ্বান জানান। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেছেন যে, যুদ্ধের পর ইসরায়েল গাজার উপর অনির্দিষ্টকালের জন্য নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে।

আরও পড়ুন: মার্কিন অস্ত্রে গুদাম ভরছে ইসরায়েল

এছাড়া ইসরায়েলি উগ্রপন্থী একাধিক মন্ত্রী গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। বিশ্লেষকরা এটিকে জাতিগত নির্মূলের জন্য একটি চাপ হিসেবে দেখছেন। ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অফ মিডল ইস্ট স্টাডিজের পরিচালক জোশুয়া ল্যান্ডিসের মতে, সাম্প্রতিক বক্তৃতাটি গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার জন্য ওয়াশিংটনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ইসরায়েলের সরকার যা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তার মধ্যে 'ব্যবধান'কে বোঝায়।

ল্যান্ডিস বলেন, নেতানিয়াহু বহুবার বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রকে মানানো খুব সহজ। তিনি যত অস্ত্র চাচ্ছেন তার সবটুকুই পাচ্ছেন। এসব অস্ত্র দিয়েই নেতানিয়াহু গাজায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চালিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের সামনে বিব্রত করছে।

সূত্র: আল জাজিরা

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর