images

আন্তর্জাতিক

‘ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সংগঠনকে ধ্বংস করা যাবে না’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:০৬ পিএম

ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সংগঠনকে ধ্বংস করা যাবে না। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেছেন। তিনি ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সংগঠন বলতে হামাসকে বুঝিয়েছেন।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় ছুটে গেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। তিনি বৃহস্পতিবার রাতেই দোহায় হামাসের শীর্ষ নেতা ও পলিটব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া ও কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ‌

আরও পড়ুন: ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা বিজয়ী হবে’

কাতারের মধ্যস্থতায় গাজায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েল আর হামাসের মধ্যে বন্দী বিনিময় প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাতে গাজা যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে যেসব আলোচনা হয়েছে তার বিস্তারিত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।

এদিকে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান বিন জাসিম আল থানির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাক্ষাতে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতি অর্জনে নেপথ্যে থেকে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালানোর জন্য কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানকে ধন্যবাদ জানান।

আল থানি বলেন, “আমরা একটি ভালো জায়গায় পৌঁছেছি।” তিনি বলেন, এরপর আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর হত্যাকাণ্ড পুরোপুরি বন্ধ করার।

এ সময় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইসরায়েল যদি আবার যুদ্ধ শুরু করে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে এবং ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হবে আরও বিস্তৃত।

আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, ইসরায়েল গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তা আমেরিকার প্রত্যক্ষ মদদ ছাড়া সম্ভব ছিল না। এ কারণে, গত ছয় সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে যে হামলাগুলো হয়েছে তা ছিল গাজায় যে অপরাধযজ্ঞ চলছে তার স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি জাতির ভেতর থেকে উঠে আসা স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে ধ্বংস করা যাবে না। তিনি বলেন, হামাসের শত্রুরা যেন এ কথা না ভাবে - যে তারা দেড় মাসে যুদ্ধ করে যা অর্জন করতে পারেনি, তা রাজনৈতিক উপায়ে অর্জন করতে পারবে।

অপরদিকে ইরানের আইআরজিসি’র প্রধান কমান্ডার বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসী ‘পাগলা ঘোড়া’ হঠাৎ করে থেমে গেছে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর এ মন্তব্য করলেন মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি।

আরও পড়ুন: হামাসের নৌ কমান্ডার বিমান হামলায় নিহত: ইসরায়েল

তিনি বৃহস্পতিবার ইয়াজদ প্রদেশে এক জনসভায় দেওয়া ভাষণে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ইসরায়েল যদি তার ভুল থেকে শিক্ষা না নেয়, তাহলে তার বিনাশ আরও খারাপভাবে হবে। জেনারেল সালামি বলেন, “যে ইসরায়েল রুদ্ধশ্বাসে ছুটছিল তাকে আমরা হঠাৎ করে থেমে যেতে দেখলাম। তারা যদি যুদ্ধে জয়ী হতে থাকত তাহলে তারা থামত না। কাজেই একথা স্পষ্ট, আজ ইসরায়েলের যে দুর্বলতা, অক্ষমতা ও ব্যর্থতা চোখে পড়ছে তা এই শয়তানি শক্তির প্রকৃত রূপ। এবার তারা যদি নিজেদের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা না নেয় তাহলে তারা আরও বেশি ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।”

আইআরজিসির কমান্ডার বলেন, সুরক্ষিত দূর্গ থেকে বেরিয়ে গাজা উপত্যকার উন্মুক্ত প্রান্তরে যুদ্ধ করতে আসাই ইসরায়েলিদের জন্য কাল হয়েছে। তারা সেখানে অন্তত ৩০০ ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান হারিয়েছে।

জেনারেল সালামি বলেন, শত্রু ভেবেছিল সে নারী, শিশু ও নবজাতকদের হত্যা করে নিজের বিজয় নিশান ওড়াতে পারবে। 

ইরানের এই সেনা কমান্ডার বলেন, ইসরায়েলিরা তাদের সুরক্ষিত দূর্গের মধ্যে নিরাপদ ছিল। কিন্তু তারা নিজেদের হাতে তাদের ১,৬০০ ট্যাংক দূর্গ থেকে বের করে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সামনে মেলে ধরেছে - যা ছিল তাদের মস্তবড় ভুল। তারা ফিলিস্তিনি যুবকদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাতে এসে মারাত্মক বিপত্তিতে পড়েছে।

সূত্র : প্রেস টিভি

এমইউ