images

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে তীব্র লড়াই 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১২ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:১৯ পিএম

ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে তীব্র লড়াই চলছে। রোববার স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এ খবর দিয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, ইসরায়েল এবং দক্ষিণ লেবাননের সীমান্তে চলমান লড়াইয়ের মধ্যে শান্তিরক্ষী গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি এসেছে। সেখানে তীব্র লড়াই চলছে। ওই অঞ্চলে লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর যোদ্ধারাও রয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, রোববার ইসরায়েলি অঞ্চলে ট্যাঙ্ক-বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে হিজবুল্লাহ। তারা বেশ কয়েকটি বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতেও হামলা করেছে।

আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ১১,১০০

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে যে তারা পাল্টা হামলার সময় হিজবুল্লাহর অবস্থানে কামানের গোলা নিক্ষেপ করেছে।

এন-১২ নিউজকে একজন ইসরায়েলি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘হিজবুল্লাহর হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং আরও তিন থেকে পাঁচজন আহত হয়েছেন।’

ভিডিও ফুটেজে একটি খোলা জায়গার কাছে একটি রাস্তায় গাড়িতে আগুন দেখা গেছে।

শনিবার হিজবুল্লাহর নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন যে সীমান্তের কাছাকাছি থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠনটি।

আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে ইসরায়েলে বিক্ষোভ

ইসরায়েলবিরোধী যুদ্ধে ফিলিস্তিনি ও লেবাননি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অবিচলতার ভূয়সী প্রশংসা করে হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাদের জন্য আরেকটি অপমানকর পরাজয় অপেক্ষা করছে।

তিনি বলেন, “ইসরায়েলের সময় ভালো যাচ্ছে না। ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে বন্দীদের মুক্ত করার জন্য তেল আবিবের ওপর চাপ বাড়ছে। আমাদেরকে ওই চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সংঘাতের মূল বোঝাটি বহন করতে হবে গাজাবাসীকে।”

সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরস্পরবিরোধী কথাবার্তায় শত্রু সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। গত ৩ নভেম্বর তার আগের ভাষণের পর থেকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান হিজবুল্লাহ নেতা। গত এক সপ্তাহে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের হামলার মাত্রা ও পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি ঘোষণা করেন।

হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেন, “আমরা লেবাননের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুদ্ধ ড্রোন ব্যবহার করছি। এছাড়া আমরা হেভি-ক্যালিবারের বুরকান (আগ্নেয়গিরি) ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে শত্রুসেনাদের বিরুদ্ধে হামলা করছি যা ৫০০ কেজি ওজনের ওয়ারহেড বহন করতে পারে।”

৭ অক্টোবর গাজার ওপর ইসরায়েলি আগ্রসন শুরু হওয়ার পর থেকে নিজের দ্বিতীয় ভাষণে হিজবুল্লাহ নেতা বলেন, “ইসরায়েলিরা যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের ক্ষয়-ক্ষতি ঢেকে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা ক্ষয়-ক্ষতির বিবরণ পেয়ে যাচ্ছি। আমরা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে গোয়েন্দা ড্রোন পাঠাচ্ছি যেগুলো হাইফা বা তার চেয়েও দূরে পৌঁছে আমাদেরকে তথ্য ও ছবি পাঠাচ্ছে।”

তিনি বলেন, গাজা আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য লেবানন ফ্রন্ট থেকে ইসরায়েলের ওপর প্রতিনিয়ত চাপ বাড়তে থাকবে।

আরও পড়ুন: এবার গাজা দখলের হুমকি দিলেন ইসরায়েলি মন্ত্রী 

সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের মাতৃভূমির স্বপ্ন ভুলিয়ে দিতে চায়। তারা আরও চায়, লেবাননবাসী পায়ের ওপর পা তুলে গাজায় তাদের ধ্বংসযজ্ঞ চেয়ে চেয়ে দেখুক। কিন্তু তা আর হবার নয় - বলে তিনি মন্তব্য করেন।

হিজবুল্লাহ নেতা জানান, ১৯৪৮ সাল থেকে গণহত্যা চালিয়ে ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের আকাঙ্ক্ষা থেকে বিরত রাখতে পারেনি ইসরায়েল। 

তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে দক্ষিণ লেবাননে আগ্রাসন চালিয়ে ইসরায়েলিরা হাজার হাজার ঘর-বাড়ি ধ্বংস এবং হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল। ২০০৬ সালেও তারা হাজার হাজার লেবাননিকে হত্যা করেছে। কিন্তু তাতে লেবাননের জনগণ তাদের প্রতিরোধ বন্ধ করে দেয়নি। বর্তমান প্রতিরোধ যুদ্ধেও গাজার ফিলিস্তিনিরা জয়ী হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সূত্র : বিবিসি, আল-মানার টিভি, আল-জাজিরা

এমইউ