আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০২ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:২০ পিএম
ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ৬১ জন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য দিয়েছে। তারা গাজায় চলমান ইসরায়েলি বোমা হামলায় হতাহতের হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মতে, ‘৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় অন্তত ৯ হাজার ৬১ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তিন হাজার ৭৬০ জনই শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে দু’হাজার ৩২৬ জন নারী আছে।
বর্বর ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ৩২ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: গাজাকে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলার আহ্বান এক ইসরায়েলি এমপির
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে যে শুধুমাত্র গত ২৪ ঘন্টায় ১৫টি ভিন্ন গণহত্যায় আরও ২৫৬ জন নিহত হয়েছেন।
গাজায় ১১,০০ শিশুসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এসব মানুষের অধিকাংশই মৃত এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উপরন্তু, ইসরায়েলি বাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীরা একই সময়ে পশ্চিম তীরে কমপক্ষে ১৩১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় অধিকৃত অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের মাসিক মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এ বছর পশ্চিম তীরে নিহত হওয়া ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা ৩৪৩ জনের ওপরে।
ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার ১৩০ প্যারামেডিক এবং মেডিকেল ক্রু নিহত হয়েছেন। সেখানে ২৮টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়েছে এবং ২৭০টিরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় বিমান হামলা হয়।
এদিকে নিরাপত্তা কাউন্সিলে জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক সংস্থাগুলো আবারও মানবিক অস্ত্র বিরতির জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজার জাবালিয়া ক্যাম্পের ১০০০ মানুষ হতাহত
ইউনিসেফ বলেছে, প্রতি ঘণ্টায় গাজার অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। আর “সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির মূল্য শিশুদের জীবনের বিনিময়ে পরিশোধ করতে হবে।”
জাতিসংঘের এ শিশু বিষয়ক সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘গাজার পাঁচ শতাংশ পানি সুপেয়। এ কারণে সেখানে শিশুদের মধ্যে পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে। এটা একটি ক্রমবর্ধমান হুমকি।’
জেনেভায় জাতিসংঘের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেন, গাজা এখন শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘের এ শিশু বিষয়ক সংস্থাটি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চায়। তারা গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর কথাও পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, গাজার শিশুরা শুধু ইসরায়েলি বিমান হামলায় নয়, চিকিৎসা সেবার অভাবের কারণেও মারা যাচ্ছে।
দাতব্য সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেনের ফিলিস্তিনি শাখার কর্মকর্তা জেসন লি গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, সেখানে প্রতি ১০ মিনিটে একটি করে শিশু মারা যায়।
জেরুসালেম থেকে কথা বলার সময় তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যে ২০ হাজারের মতো মানুষ আহত হয়েছে - তাদের প্রতি তিন জনের মধ্যে একজন শিশু।
লি বলেন, জনাকীর্ণ পরিবেশ এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না থাকার কারণে সংক্রামক রোগ বাড়ছে। তিনি বলেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, গাজায় ট্রাকের মাধ্যমে যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে তা “সাগরে এক ফোটা পানির মতো।”
“সার্জনরা অ্যানেসথেটিক ছাড়াই অস্ত্রোপচার করছেন, হাসপাতালগুলোতে আলোর উৎস হিসেবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে মানুষ।”
সূত্র : মিডল ইস্ট আই, বিবিসি, আল-জাজিরা
এমইউ