images

বিনোদন

জুলাই আন্দোলনের পর ‘পুষ্প ২’ ছবিটি আমদানি করতে দেয়া হয়নি: অনন্য মামুন

বিনোদন ডেস্ক

০১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৪ পিএম

বছর দুয়েক আগে দেশে হিন্দি সিনেমা আমদানি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছিল। নির্মাতা অনন্য মামুন তাঁর অ্যাকশন কাট নামের প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ সিনেমাটি আমদানি করার আগ্রহ দেখালে পুরোনো আলোচনায় নতুন করে রশদ যুগিয়েছিল। শিল্পীদের মতানৈক্য থাকলেও সেবার ছবি আমদানি করেছিলেন মামুন। 

চলচ্চিত্র সমিতিগুলোর শর্ত মেনে ছবি আমদানি ও মুক্তি দিয়েছিলেন তিনি। এরপর গেল বছর আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্প ২’ সিনেমা আমদানির সব আয়োজন সম্পূর্ণ করলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল মাফিয়া’র ইশারায় সিনেমাটি আমদানি আটকে যায়। আজ শনিবার (১ নভেম্বর) সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন অনন্য মামুন।  

তিনি লিখেছেন, ‘আমি সিনেমা ব্যবসায়ী। জুলাই আন্দোলনের আগেই ‘পুষ্পা ২’ সিনেমার অনুমতি পাই আমি। সেজন্য আমাকে ইন্ডিয়ার কোম্পানির সাথে চুক্তিপত্র সম্পূর্ণ করতে হয়। সব যাচাই-বাছাই করে তথ্য মন্ত্রণালয় আমাকে অনুমতি দিয়েছিল। আন্দোলনের পরে আমার অনুমতি পাওয়া ছবিটিও বাংলাদেশে আনতে দেয়া হয়নি। সেটা রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণে তারা নাই দিতে পারেন। মূল কথাটা সেখানে নয়,তখন আমি দেখেছি ক্ষমতার অপব্যবহার কি, কাকে বলে, প্রকার।’ 

কথার সূত্র ধরে তিনি আরও লিখেছেন, ‘ছবিটি বাংলাদেশে আনার সিদ্ধান্ত দেয়ার চেষ্টা চলছিল। তখন ইন্টারন্যাশনাল মাফিয়ারা আমাকে চাপ দেওয়া শুরু করল। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া থেকে ফোন।  আমার ‘একশন কাট’-এর লাইসেন্সের ছবি ইমপোর্ট করা যাবে না। এবং তারা এটাও জানত মূল কোম্পানির সাথে আমার চুক্তি হয়ে গেছে। আমার কোম্পানি ছাড়া ছবিটিও বাংলাদেশে আসবে না। তখন আমাকে বলা শুরু হলো আমি যেন অন্য কোম্পানিকে ছবিটি লিখে দেই। তারা তাদের নামে বাংলাদেশে ইমপোর্ট করবে। এবং আমাদের চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির কয়েকজন নেতাকেও দেখলাম তাদের সাথে মিলে যেতে। চোখের সামনে এরা গিরগিটির মতো রং চেঞ্জ করে ফেলল। নিজেদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মামুন (অনন্য মামুন) ঠেকাও জোট শুরু করল। ফলাফল কি ‘পুষ্পা ২’-এর মতো হিট ছবি বাংলাদেশ আসল না।’

এরপর মামুন যোগ করেন, ‘হিন্দি ছবি আনার (আমদানি) সকল দরজা জানালা বন্ধ হয়ে গেল। এখন সেই লোকগুলোকেই যখন বলতে শুনি হিন্দি ছবি গুলোর জন্য আমাদের হল গুলো ভালোই চলছিল তখন একা একাই হাসি। তবে হিসাব এখন অনেক বাকি।  ব্যবসা শক্তি দিয়ে হয় না, ব্যবসা হয় বুদ্ধি দিয়ে। আজ হয়তোবা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেকেই আমার পোষ্টের বিপক্ষে যাবেন। কিন্তু আমার কথা হল আপনি যদি নীতিতে থাকতে চান, তাহলে এক নীতিতেই থাকতে হবে। এমনও হয়েছে  সেই নতুন দালালগুলো তাড়াহুড়া করে ট্রেড লাইসেন্স করল হিন্দি ছবির ব্যবসা তারা করবে। মানে তারা কোনো নীতি তো ছিল না, ওরা ছিল ভণ্ড স্বার্থপর।’ 

এই পরিচালক আরও লিখেছেন, ‘আমি কখনও ক্ষমতা দিয়ে কোনো কাজ করিনি। সকল সমিতির সহযোগিতা নিয়েই বাংলাদেশে হিন্দি (বলিউড) ছবি এসেছিল। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির কিছু নেতা, সিনিয়র কিছু প্রযোজক,সিনেমাকে ভালবাসে এমন কিছু শিল্পী,পরিচালক সহযোগিতা করেছিল। কিন্তু বুকে হাত দিয়ে আমি একা গর্ব করে বলতে পারি টানা দুই মাস বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দরজা আর তথ্য মন্ত্রণালয়ের দরজায় চাতক পাখির মতো দৌড়াদৌড়ি করে অনুমতিগুলো বের করেছিলাম।’  

সবশেষে মামুন ক্ষোভ উগড়ে বলেন, ‘মিনিস্ট্রি মিটিংয়ে সেই নব্য নেতা গুলো বলতে শুনেছি আমি নাকি আওয়ামী লীগের দালাল ছিলাম। আমি যদি সত্যিই আওয়ামী লীগের দালালি করতাম তাহলে গত ১৭ বছরে আমার তো সরকারী অনুদানের ছবি পাওয়ার কথা। আমার তো মিনিস্ট্রিট বিভিন্ন ধরনের প্রচার প্রচারণার কাজ টিভিসি পাওয়ার কথা। কিন্তু বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আজ পর্যন্ত কোনো সরকারি কাজের অংশ হইনি। চাইলেও পারতাম না কারণ কথা বলে একটা কথাই বলতো, ওর বাড়ি তো বগুড়া। আমার বলার বিষয় এটাই ছিল চলচ্চিত্র নিয়ে রাজনীতি করে লাভ নাই। চলচ্চিত্র ভালোবাসার জিনিস সেটাকে রাজনীতির উর্ধ্বে রাখায় ভালো।’

ইএইচ/