মহিউদ্দিন রাব্বানি
০৪ জুন ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম
মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব—পবিত্র ঈদুল আজহা দুয়ারে হাজির। এই ঈদে রান্নার অপরিহার্য উপকরণ—বিভিন্ন ধরনের মসলার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। আর এই সুযোগে মসলার দাম বাড়িয়ে দেন সুযোগসন্ধানী বিক্রেতারা। তবে এবার কোরবানির ঈদকে ঘিরে বাজারে বিশেষ কোনো প্রভাব পড়েনি। মসলার বাজার অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সিন্ডিকেট ভেঙে গেছে। এজন্য বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্যান্য বছর কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়ে যায় সব ধরনের মসলার দাম। তবে এবার দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এবারে মসলার দাম কম। তবে কিছুটা দাম বেড়েছে এলাচ ও দারুচিনির।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শ্যামবাজারসহ কয়কটি বাজার ঘুরে গরম মসলা কেনাকাটায় ভিড় দেখা গেছে। তবে বাজারে চাহিদা বাড়লেও দাম তুলনামূলক কম রয়েছে।

পুরান ঢাকায় সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত শ্যামবাজারে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকায়, যা ঈদের আগের মাসের তুলনায় কিছুটা কম। দারুচিনি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৫০০ টাকা, জয়ফল ১ হাজার ২০০ টাকায় কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া, জিরার কেজি প্রকারভেদ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৫০০ টাকা ও কালো গোলমরিচ ১ হাজার ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এ বছর রকমভেদে আদা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, রসুন কেজি ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। শুকনা মরিচ ও তেজপাতা ২০০ টাকা করে। তেজপাতা কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিগত ৬ মাসেও এত কম দামে মসলা বিক্রি করিনি। এবার সিন্ডিকেটের নেই, তাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানা যায়৷
আরও পড়ুন
যাত্রাবাড়ী মসলার বাজারের ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বর্তমানে মসলার চাহিদা অনেক। অবশ্য সরবরাহও এবার ভালো। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে অনেক সিন্ডিকেট ভেঙে গেছে। ফলে ক্রেতারা স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে পারছে।’

সাগর নামের অপর ব্যবসায়ী জানান, মসলার মধ্যে এলাচ ও দারুচিনির দাম কিছুটা বেড়েছে, তবে বেশ কিছু পণ্যের দাম আগের তুলনায় স্থিতিশীল বা কম। আদা, দেশি রসুন, কালো গোলমরিচ, তেজপাতা ইত্যাদির দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অন্যদিকে, বিক্রেতারা বলছেন, প্রতি বছর আমরা দেখি কোরবানির আগে সবধরনের মসলার দাম চড়া। এবার দাম অনেকটা স্থিতিশীল। দাম বাজেটের মধ্যেই আছে।
আরও পড়ুন
তবে বাজার দর মনিটরিংয়ের ঘাটতি রয়েছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতি সহ-সভাপতি অমর কান্তি দাশ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘পাইকারি বাজার আর খুচরা বাজারে দামে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ভোক্তা অধিকার যদি খুচরা বাজারেও তদারকি করে তাহলে বাজার ঠিক থাকবে।’

যদিও জাতীয় ভোক্তা অধিকার বলছে, তারা নিয়মিত বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখছে। এবিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলিম আখতার খান জানিয়েছেন, বাজার তদারকির কোনো কমতি রাখা হচ্ছে না। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
তিনি জানান, ঈদ ঘিরে ভোক্তারা যাতে সহনীয় পর্যায়ে মসলা কিনতে পারেন সেজন্য এক মাস আগে থেকেই মসলা ব্যবসায়ী ও আমদানিকারদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে।
এমআর/জেবি