images

অর্থনীতি

সবজির বাজারে অস্থিরতা, স্বস্তি ফিরেছে মাছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫৬ পিএম

এক সপ্তাহ আগেও মাছের বাজারে স্বস্তি ছিল না। তবে এখন বদলাতে শুরু করেছে সেই চিত্র। দাম কমেছে গরুর মাংসের, ফলে ব্যবসায়ীরা এখন সতর্ক, দাম বেশি হাঁকাছেন না মাছের। অন্যদিকে দু’দিন আগেও দেশি নতুন পেঁয়াজের দাম যা ছিল তা থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে লাউ, করলা, সিম, বেগুন, বাধাকপি, ফুলকপি এমনকি কাঁচা মরিচেরও। আজকের চিত্র অনুযায়ী মাছ-মাংস কিছুটা কম দামে পেলেও বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে সবজির বাজারে। 

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুর, বেড়িবাঁধ ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আঁটিবাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। তবে এই তিন বাজার ছাড়াও এলাকা ভেদে কাঁচা সবজির দামে ভিন্নতা রয়েছে। 

ক্রেতার বলছেন, অভিযান চললে বাজারে কিছুটা স্বস্তি মিলে। কিন্তু পরে আবারও শুরু হয় চড়া দাম হাঁকানোর প্রতিযোগিতা। 

সকালে আঁটিবাজারে এসেছেন ‍রবিউল ইসলাম। কিনেছেন সবজি। এরপর মাছের  বাজারে ঢুকতেই কিছুটা বিস্মৃত তিনি। ২৭০ টাকা কেজিতে কিনেছেন বড় রুই মাছ। 

রবিউল বলেন, এই রুই মাছ দুই সপ্তাহ আগেও ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু আজ বিক্রি হচ্ছে অর্ধেক দামে। গরুর মাংসের দাম কমায় মাছের বাজারে প্রভাব পড়েছে। 

এদিকে আজ ছুটির দিন। গরু-মুরগির দোকানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৮০ টাকা কেজিতে। এছাড়া পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৩০ টাকায়। তবে দাম কিছুটা বেশি ছিল দেশি মুরগির, প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকায়।

অন্যদিকে সরকার নির্ধারিত ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। তবে কোথাও কোথায় এই মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে ৭০০ টাকায়। আঁটিবাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। তবে টাউন হল, কৃষি মার্কেট এবং শ্যামলী এলাকায় ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই মাংস। 

আরও পড়ুন

তবে আমিষের ঘাটতি মেটাতে ব্রয়লারকেই বেছে নিচ্ছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষজন। নয়ন আহমেদ আঁটিবাজারে এসেছেন মোহাম্মদপুর থেকে। দেশি মাছ কিনবেন তিনি। নয়ন বলেন, ১ হাজার ৬০০ টাকায় একটি বোয়াল মাছ কিনেছেন তিনি। 

আজকের বাজারে খুচরা মূল্যে মাঝারি পাঙ্গাস প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা, পাবদা ৪৫০ টাকা, বড় রুই ৬০০ টাকা, সিলভার ও স্বরপুঁটি ২২০ টাক, দেশি সিং ৭০০ টাকা, টাকি ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, খইলসা ৬০০ টাকা। এছাড়াও ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৭০০ টাকা এবং ২০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি। যা প্রতি কেজিতে ৫-৬টি উঠছে।

জসিম একজন মাছ বিক্রেতা। তিনি জানান, তারা দেশি মাছ কম দামে কেনা যাচ্ছে না। নদী ও খালগুলো শুকালেও দেশি মাছ তেমন আসছে না। সরবরাহ কম থাকায় দামটা চড়া। 

অপরদিকে গত দু’দিন আগে নতুন পাতা পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। রাস্তা-ঘাটে ভ্যানে ডেকে অনেকে বিক্রি করেছেন অনেকে। তবে আজকের চিত্র ভিন্ন। 

বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজিতে বিশ টাকা বেড়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। এরপরও লোকজন পেঁয়াজ কিনছেন। 

দু’দিন আগে বড় ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। কিন্তু আজ সেই ফুলকপি জোড়া ১২০ টাকা ছাড়া দোকানি দিতে নারাজ। একই অবস্থা বাঁধাকপিতেও। প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। অন্য সবজির মধ্যে করলা, পটল প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ৯০ থেকে ১০০ টাকা, শিম ৭০ টাকা, লাউ ৯০ টাকা। 

বেড়েছে পেঁপে ও মরিচের দাম
লিটন রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় রিকশা চালান। সপ্তাহখানেক আগে পেঁপে কিনেছেন ২৫ টাকা কেজি। এখন পেঁপের কেজি ৪০ টাকা। কিছুটা দোটানার মধ্যে পড়েছেন তিনি। কিনবেন কি না সেই চিন্তায় মগ্ন লিটনকে সবজি দোকানি সজল জানিয়েছেন, নিলে নেন, না নিলে অন্যে নেবো। 

অন্যদিকে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ আজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই, তবুও এত দামে কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। তারা প্রতিকেজি মরিচ পাইকারি ধরে নিয়ে আসেন ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। কিন্তু সেই মরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি করছেন দ্বিগুণ দামে। 

এছাড়াও চায়না আদা ও রসুন ২২০ টাকা কেজি, বেগুন গোল বড়-৭০ টাকা, ছোট লম্বা ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এমআইকে/এইউ