images

সারাদেশ

জার্মানি দিয়ে শুরু হাঁড়িভাঙ্গা আমের রফতানি

জেলা প্রতিনিধি

২৬ জুন ২০২৪, ০২:৩০ পিএম

চলতি মৌসুমের প্রথম হাঁড়িভাঙ্গা আম রফতানি হলো জার্মানিতে। আর এরই মধ্য দিয়ে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রংপুরের হাঁড়িভাঙা আম রফতানি শুরু হয়েছে। 

প্রথম পর্যায়ে ২০০ কেজি আম জার্মানিতে রফতানি করেছে ঢাকার গ্রিন গ্লোবাল অ্যাগ্রো লিমিটেড। তবে জার্মানি দিয়ে শুরু হলেও অচিরেই অন্যান্য দেশে রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

thumbnail_mango_1

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন অনানুষ্ঠানিকভাবে হাঁড়িভাঙ্গা আম পাড়া শুরু হলেও ২১ জুন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে জিআই পণ্য হাঁড়িভাঙা আমের মেলা ও প্রদর্শনী হয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। আমের মেলা ও প্রদর্শনীর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী হাঁড়িভাঙা আম রফতানির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামে অন্য জেলার আম বিক্রি, প্রতারিত ভোক্তারা

কৃষি মন্ত্রীর আগ্রহে ঢাকার গ্রিন গ্লোবাল অ্যাগ্রো লিমিটেডের কর্ণধার কাওসার আহমেদ স্যাম্পল হিসেবে ২০০ কেজি হাঁড়িভাঙা আম জার্মানিতে পাঠিয়েছেন। প্রতি মণ আমের দাম ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা। যা আম চাষি খলিলুর রহমানের বাগান থেকে সরবরাহ করা হয়েছে।

mango_1_23

গ্রিন গ্লোবাল অ্যাগ্রো লিমিটেডের কর্ণধার কাওসার আহমেদ বলেন, এর আগে যে সব দেশে হাঁড়িভাঙ্গা আম রফতানি করা হয়েছিল, সেই সব দেশে রফতানির আলোচনা চলছে, পাশাপাশি আরও নতুন নতুন দেশে রফতানির চেষ্টা চলছে। এবারে নতুন দেশ হিসেবে জার্মানিতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি নেপাল ও থাইল্যান্ডে রফতানির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সব ঠিকঠাক থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে আম রফতানি করা হবে সেই সব দেশে। এ সময় তিনি কৃষি অধিদফতরের সহযোগিতা আরও বেশি প্রত্যাশা করেন।

আরও পড়ুন

আমসহ গাছ বিক্রি হচ্ছে বৃক্ষমেলায়

তিনি আরও বলেন, কৃষি মন্ত্রী খুবই আন্তরিক বিদেশে আম রফতানির ব্যাপারে। এ ক্ষেত্রে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমের বেশি বেশি প্রচার লাগবে। বেশি প্রচার হলে রফতানি বাড়বে।

thumbnail_harivanga_mango_photo_1

এ ব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, কয়েকবছর থেকে একটি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত বিভিন্ন জাতের আম রফতানি করে আসছে। যার কারণে এবারে রফতানিযোগ্য আম উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি অফিস থেকে প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। সেই প্রকল্পের পাঁচ একর আয়তনের বাগান মালিককে রফতানিযোগ্য উৎকৃষ্ট আম উৎপাদনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি সার ও কীটনাশক সরবরাহ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষি অফিস থেকে আম বাগানে সার্বক্ষণিক মনিটরিং হয়েছে এবং এখনও মনিটরিং করা হচ্ছে। জার্মানিতে যে স্যাম্পল হিসেবে আম পাঠানো হয়েছে, আশা করছি, জার্মানিতে আরও আম রফতানি হবে। এর আগে ভারত, ভুটান, শ্রীলংকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতে হাঁড়িভাঙ্গা আম রফতানি করা হয়েছিল। ওই সব দেশের পাশাপাশি হাঁড়িভাঙ্গা আম নেপাল ও থাইল্যান্ডে রফতানির চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

thumbnail_harivanga_mango_photo_2

এছাড়াও গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় রংপুরের হাঁড়িভাঙা আম রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় বিভিন্ন দেশে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও ব্রুনাই রয়েছে।

এদিকে প্রতিবারের মতো এবারেও শুরুতেই আমের চড়া দাম লক্ষ করা গেছে। বড় সাইজের আমের মণ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। মাঝারি সাইজের আমের মণ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। আর ছোট সাইজের আম বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২২০০ টাকা মণে। গতবারের চেয়ে এবারে ফলন বেশি হওয়ায় সব মিলিয়ে হাঁড়িভাঙা আম কেনাবেচায় ২৩০ থেকে ২৬০ কোটি টাকার লেনদেন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

thumbnail_harivanga_mango_photo

উল্লেখ্য, চলতি বছর রংপুর জেলায় হাঁড়িভাঙ্গা আমে চাষাবাদ করা হয়েছে ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি হাঁড়িভাঙা আম রংপুরের ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে।

প্রতিনিধি/এসএস