জেলা প্রতিনিধি
২৫ জুন ২০২৪, ০৯:৫০ এএম
শেরপুরের নকলায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক পরিবারের বাড়ির প্রবেশ পথে বাঁশের বেড়া দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিবেশী।
উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআগলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নকলা থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
এ ঘট্নায় রোববার (২৩ জুন) থেকে ভুক্তভোগী ভ্যানচালক আব্দুল মিয়াসহ তার পরিবারের দিন কাটছে অবরুদ্ধ অবস্থায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাছুরআলগা গ্রামের মৃত জিন্নাত আলীর ছেলে মো. নবেল আলম গংদের সঙ্গে দীর্ঘদিন শত্রুতা ও পাল্টাপাল্টি মামলা-মোকদ্দমা চলে আসছে। গত কয়েকদিন আগে নোবেল আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ জেলা কারাগারে পাঠায়।
রোববার নোবেল আদালত থেকে জামিনে এসে আব্দুল মিয়ার বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়।
সোমবার (২৪ জুন) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আব্দুল মিয়ার বাড়ির বের হওয়ার রাস্তায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়ায় তারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। এতে চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তারা। চলাফেরায় বিপাকে পড়েছেন বয়োজ্যেষ্ঠরাও। পাশের একটি বাঁশঝাড়ের সরু পথ দিয়ে কোনোমতে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন তারা। তবে তাদের বাড়িতে থাকা ভ্যানগাড়ি বের করতে পারছেন না আব্দুল মিয়া। দ্রুত বাঁশের বেড়া অপসারণ করে চলাচলের পথ স্বাভাবিক করে দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্যরা।
অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্য আব্দুল মিয়া বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে এ পথটি চলাচলের জন্য আমরা ব্যবহার করে আসছি। গতকাল প্রতিবেশী নোবেল আলম গংরা আমাদের বাড়ির প্রবেশ পথে বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে দিয়েছে। এতে আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়ার একমাত্র পথ বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের বাড়ি থেকে বের হতে পথের ব্যবস্থা করে দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্থানীয় আমজাদ হোসেন, নোবেল আলমসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা সবসময় আমাদের মারধরসহ মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এর আগেও তারা আমাদের বাড়িঘর কুপিয়েছে, আমাদের মারধর করেছে। আমরা এর বিচার চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেশী নোবেল আলম বলেন, ওখানে কোনো পথ ছিল না। আমরা আমাদের জায়গায় বেড়া দিয়েছি। আব্দুল মিয়ারা আমাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করেছে। বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই বেড়া খোলা যাবে না।
মানবাধিকার সংস্থা সৃষ্টি হিউম্যান রাইটস সোসাইটির শেরপুর জেলা সভাপতি আলমগীর আল আমিন হারুন বলেন, কারও বাড়িতে প্রবেশের পথ রদ্ধ বা বন্ধ করে দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন। ঘটনাটির ব্যপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল দ্রুত একটা সুরাহা করে দিবে এবং অবরুদ্ধ পরিবারের পথ খুলে দিবে, এই প্রত্যাশা করছি।
জানতে চাইলে চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান গেন্দু বলেন, একটি পরিবারের চলাচলের পথ বন্ধের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যারা পথ বন্ধ করে দিয়েছে, তাদের ওই জমি। তারপরও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করব।
এ ব্যাপারে নকলা থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, আমি এ বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি এবং ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস