images

সারাদেশ

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব: লণ্ডভণ্ড শাহিনুদের বসতঘর

জেলা প্রতিনিধি

২৮ মে ২০২৪, ০৬:০৭ পিএম

বেড়িবাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করছেন শাহিনুর বেগম (৪৭)। সন্তানদের নিয়ে কার কাছে ঠাঁই পাবেন। কীভাবে ঘর তৈরি করবেন। তাদের সবকিছুই শেষ। ঘরে একমুঠো ভাতের চালও নেই। পাশে দাঁড়ানো এক নারীর কাছে কথাগুলো বলছেন শাহিনুর, একইসাথে হাউমাউ করে কান্নাকাটি করছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে কমলনগর উপজেলার মতির হাট থেকে একটু অদূরে মোল্লা বাড়ি সংলগ্ন পুরাতন বেড়িবাঁধের ওপরে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন ওই দুস্থ নারী।

আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে তীব্র ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি 

তার সঙ্গে কথা হয় ঢাকা মেইলের লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি রুবেল হোসেনের। তখন শাহিনুর বেগম এ প্রতিবেদককে জানান, তার সবকিছু মেঘনা নদীর জোয়ারে পানির সঙ্গে ভেসে গেছে। থাকার ঘর ও রান্নাঘর দু’দিনের ঝড়ো হাওয়ায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। সেখানে বসবাস করার মতো সুযোগ নেই। তাই ঘর দু’টি খুলে নিয়ে আসছেন স্বামী মোসলেহ উদ্দিন।

Screenshot_2024-05-28_180849এখন এ ঘরগুলো কোথায় গিয়ে নতুন করে তৈরি করা হবে - তা তারা জানেন না। তাদের তো ভিটেমাটি ছাড়া কোনো জমিজমা নেই। কে তাদের এক টুকরো জায়গা দান করবে। এ কথাগুলো বলছেন আর বিলাপ করে কান্না করছেন শাহিনুর বেগম।

তিনি জানান যে তার চার মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। এখনও দুই মেয়ে ঘরে আছে। স্বামী মোসলেহ উদ্দিন নদীতে মাছ ধরতেন। কিন্তু ঝড়ের কারণে মাছ ধরাও বন্ধ আছে। গত দু’দিন রান্না করারও সুযোগ হয়নি তাদের।

শাহিনুর বেগম ঢাকা মেইলকে বলেন, শুনছি যাদের ঘর-বাড়ি নেই, তাদের সরকারিভাবে ঘর দেওয়া হয়। আশপাশের কোথাও সরকার যদি আমাদের একটু জমি দান করতো - তবে আমরা ঘর তৈরি করে বাকি জীবনটা পার করতে পারতাম।

আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ১৫৩ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত

শাহিনুর বেগমের কাছ থেকে ৫০ গজ দূরে গিয়ে দেখা গেল যে তার স্বামী মোসলেহ উদ্দিন তাদের ঘর দু’টি খুলছেন। তার পাশ থেকেই নদীর গর্জন শোনা যাচ্ছে। যখন শুনলেন সাংবাদিক আসছে, তখন তিনিও তার স্ত্রীর মতোই কেঁদে উঠলেন। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, যেভাবেই হোক আমাদের একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেন। আমরা এখন খুবই নিঃস্ব। দু’মেয়ে নিয়ে কোথায় যাবো?

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান ঢাকা মেইলকে মুঠোফোনে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে উপকূলীয় যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের তালিকা করার জন্য উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রতিনিধি/ এমইউ