এভিয়েশন ডেস্ক
২১ জুলাই ২০২৫, ০৪:১৮ পিএম
দুর্ঘটনার ঠিক আগ মুহূর্তে পাইলট যখন বুঝতে পারেন যে বিমান আর উদ্ধারযোগ্য নয়, তখন নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় তিনি ইজেকশন সিট ব্যবহার করে বিমান থেকে বের হন। এটা একটা অতি দ্রুত, সময়নির্ধারিত, এবং জীবনরক্ষাকারী পদ্ধতি।
দুর্ঘটনার আগে পাইলট কীভাবে বিমান থেকে বের হন (ইজেকশনের ধাপসমূহ):
১. বিপদ চিহ্নিতকরণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ
পাইলট বুঝতে পারেন—বিমান ক্র্যাশ করতে যাচ্ছে (যেমন- ইঞ্জিন ফেল, কন্ট্রোল লস, আগুন, শত্রু হামলা)।
দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন: ইজেক্ট করতে হবে।

২. ইজেকশন সিস্টেম সক্রিয়করণ
পাইলট তার সিটে থাকা ইজেকশন হ্যান্ডেল (কখনও সিটের নিচে বা মাথার সামনে) দুই হাতে টেনে ধরেন।
৩. ককপিটের কভার (canopy) বিস্ফোরণে খোলা হয়
ইজেকশন লিভার টানার সাথে সাথে ককপিটের ওপরের গ্লাস/কভার (canopy) স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিস্ফোরিত হয়ে সরে যায়।
যদি না সরে, কিছু সিটে সিট-সঙ্গেই ক্যানোপি ভেদ করে উপরে উঠে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকে।

৪. রকেট মোটর পাইলটসহ সিটকে উপরে ছুড়ে দেয়
ইজেকশন সিটের নিচে থাকা রকেট থ্রাস্টার বা কার্ট্রিজ বিস্ফোরিত হয়ে সিটটিকে জোরে ওপরে (প্রায় ৫০০–৬০০ কিমি/ঘণ্টা গতি) ছুড়ে দেয়।
৫. সিট থেকে পাইলট বিচ্ছিন্ন হন
নির্ধারিত উচ্চতায় পৌঁছালে পাইলট সিট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাদা হয়ে যান।
আরও পড়ুন: উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত
আধুনিক সিটে এটা পুরোপুরি অটো-কন্ট্রোলড।
৬. প্যারাস্যুট খুলে যায়
পাইলটের শরীরে থাকা প্যারাস্যুট নিজে থেকেই খুলে যায় বা পাইলট ম্যানুয়ালি খুলতে পারেন (নিচু উচ্চতায় থাকলে দ্রুত করতে হয়)।

৭. নিরাপদ অবতরণ ও উদ্ধার
পাইলট ধীরে ধীরে নিচে নামেন এবং মাটিতে অবতরণ করেন।
এরপর তিনি রেডিও বা বীকন দিয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে দেন, যাতে উদ্ধারকারী দল এসে তাকে উদ্ধার করতে পারে।
আরও পড়ুন: উড্ডয়নের ১২ মিনিটের মাথায় আছড়ে পড়ে বিমানটি
২০২২ সালে তানগাইল এলাকায় একটি F-7BGI যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হলে পাইলট সালাউদ্দিন আহমেদ ইজেকশনের মাধ্যমে বেঁচে যান। তিনি সময়মতো সঠিক পদ্ধতিতে ইজেকশন করেন এবং নিরাপদে নিচে নেমে আসেন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
পাইলটদের নিয়মিত ইজেকশন ট্রেনিং দেওয়া হয়।
সিদ্ধান্ত নিতে হয় সেকেন্ডের ভেতরে, তাই এটি খুব মানসিক প্রস্তুতির বিষয়ও।
ইজেকশনের সময় শরীরের উপর G-Force পড়ে, ফলে আঘাতের ঝুঁকি থাকে।
এজেড