গুগলের অধীন বিশ্বের জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। এই মাধ্যমে ভিডিও আপলোড করতে চাইলে চ্যানেল খুলতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় চ্যানেলে শত শত ভিডিও আপলোড করেও ভিউ নেই। ফলে যারা কনটেন্ট ক্রিয়েটর তারা হতাশ হয়ে যান।
অর্থের আশায় ইউটিউবে চ্যানেল খুলে বিভিন্ন রকম কনটেন্ট ক্রিয়েটে মজছে সাধারণ মানুষ ৷ এককথায় সোশাল মিডিয়ায় মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে চাইলে ইউটিউব হয়ে উঠেছে সুরাহা ৷ শুধু মাত্র অর্থ উপার্জন নয়, ইউটিউবের মাধ্যমে নিমেষের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায় মানুষের মধ্যে ৷ শিক্ষা থেকে শুরু করে বিনোদন যে কোনও বিষয়ের উপর তৈরি করা যায় কনটেন্ট ৷ ইউটিউব চ্যানেল থেকে কী কী ভাবে লাভবান হতে পারেন আপনি, তার খোঁজ রইল এই প্রতিবেদনে।
বিজ্ঞাপন

কীভাবে বাড়াবেন ইউটিউবের গ্রাহক বা সাবস্ক্রাইবার?
১. সঠিক নিশ নির্বাচন
নিজের পছন্দের বিষয় নিয়ে কনটেন্ট বানানো যায় ইউটিউবে ৷ তবে তার আগে খেয়াল রাখতে হবে নির্দিষ্ট বিষয়ে যেন যথেষ্ট অভিজ্ঞতা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি শিক্ষক হন তবে, শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী টিউটোরিয়াল তৈরি করুন। ফলে সহজেই তা মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে ৷ এইভাবে রান্না, গেমিং এবং ভ্রমণ বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো তৈরি করতে পারেন। তেমনই আপনি প্রযুক্তি, অটোমোবাইল এবং চলচ্চিত্র পর্যালোচনা করতে পারেন। ইউটিউব চ্যানেলে কোনও কোনও কনটেন্ট তৈরি করা সময় দর্শকদের কথা মাথায় রাখতে হবে ৷ কী ধরনের বিষয়বস্তু তাদের জন্য ভালো হবে? গ্রাহকরা কী ধরনের সামগ্রী পছন্দ করেন? সেই সমস্ত বিষয়ের উপর নজর রেখে ভিডিও তৈরি করুন।
বিজ্ঞাপন

২. কনটেন্ট ক্রিয়েট করতে ভালো মানের টুলস ব্যবহার করুন
ইউটিবিউ চ্যানেলের ক্ষেত্রে ভিডিও এবং অডিও কোয়ালিটি উপর নজর দিতে হবে ৷ এই দুইটি বিষয় ঠিক না থাকলে আপনার কন্টেন্ট যত ভালোই হোক না কেন, দর্শকরা তা পছন্দ করবেন না। তাই ভালো ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও লাইটিং সেটআপ করতে হবে চ্যানেলের ভিডিওর জন্য ৷
আরও পড়ুন: ইউটিউবে সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর সেরা উপায়
৩. বিষয়বস্তু নির্বাচন করুন
নিজের জন্য একটি বিষয়বস্তু ক্যালেন্ডার তৈরি করুন। নিয়মিত ভিডিও বানান। দর্শকদের করা মন্তব্যে বা চ্যানেলের কমেন্ট সেকশনে গ্রাহকদের প্রশ্নের জবাব দিন। গ্রাহকদের মতামতও সেক্ষেত্রে গ্রহণ করতে হবে।

৪. সঠিক কি-ওয়ার্ডের ব্যবহার করুন
মনে রাখতে হবে কন্টেন্ট যত ভালোই হোক না কেন কি-ওয়ার্ড অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ ৷ সঠিক কী ওয়ার্ড না দিলে ইউটিউবের ভিডিও ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছাবে না। চ্যানেলের জনপ্রিয়তা বাড়বে না। তাই গুগল কি-ওয়ার্ড প্ল্যানার এবং টিউব বাডি টুলস ব্যবহার করে উপযুক্ত কি-ওয়ার্ড, শিরোনাম, বিবরণ এবং ট্যাগ দেওয়া দরকার। এর ফলে ভিডিওর জনপ্রিয়তা বাড়বে ৷ পাশাপাশি আকর্ষণীয় থাম্বনেইল তৈরি করতে হবে। তবেই ব্যবহারকারীরা আপনার ভিডিওতে ক্লিক করবে। আপনার কন্টেন্ট ভালো হলে সাবস্ক্রাইব করবে।
৫. চ্যানেল প্রচার করুন
নিজের ইউটিউব চ্যানেলের প্রচার নিজেকেই করতে হবে। এর জন্য, আপনাকে আপনার ভিডিওগুলো ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করতে হবে। পাশাপাশি ইউটিউবারদের সঙ্গে ক্রস-প্রমোট করতে পারেন। এতে চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়বে।
আরও পড়ুন: ইউটিউবের এই নিয়ম না মানলে বন্ধ হতে পারে চ্যানেল
৬. বিশ্লেষণ-সঠিক
কোনও সময়ে চ্যানেলে দর্শকের সংখ্যা বেশি হবে সেই দিকে নজর রাখতে হবে ৷ সেগুলো খুব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা উচিত। কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তা সংশোধন করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ ও সহযোগী ইউটিউবারদের পরামর্শ নিতে হবে।

৭. সাম্প্রতিক ট্রেন্ড এবং টিপস অনুসরণ করুন
ইউটিউব শর্টস: বর্তমানে ইউটিউবে শর্ট ভিডিয়ো প্রচুর দেখা হচ্ছে। সুতরাং, আকর্ষণীয় শর্টস তৈরি করার চেষ্টা করুন ৷ এতে চ্যানেলের জনপ্রিয়তা আরও বাড়েব ৷
লাইভ স্ট্রিমিং: নিজেকে হোস্ট করুন ৷ ব্যবহারকারীদের প্রশ্নের উত্তর দিন। পণ্য চালু করুন।এছাড়াও, আপনার গ্রাহকদের সঙ্গে আপনার ভিডিও তৈরির প্রক্রিয়া (ঝলক) শেয়ার করুন। রিয়েল টাইমে দর্শকদের সঙ্গে কথা বলুন ৷ গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সংযুক্তি গড়ে তুলুন।
আরও পড়ুন: ইউটিউবে ৫০০ ভিউ হলে কত আয় হয়?
গল্প বলা: মাঝে মাঝে আপনার নিজের গল্প এবং এমনকি গ্রাহকদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন। তবেই তারা আপনার সঙ্গে মিশে যেতে পারবে।
মোবাইল অপটিমাইজেশন: আজকাল স্মার্ট ফোনে ভিডিয়ো দেখার প্রচলন বেশি । সুতরাং, আপনার সামগ্রীটি ছোট পর্দায়ও দুর্দান্ত দেখা উচিত। এর জন্য ভালো ভিডিও এডিটিং স্কিলের প্রয়োজন ৷
ধৈর্য্য আবশ্যক: ইউটিউবে সফল হওয়া সহজ নয়। এর জন্য আপনাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে ধৈর্য্য, নিষ্ঠা ও সৃজনশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আপনি যদি ট্রেন্ড অনুযায়ী কাজ করেন এবং ধৈর্য্য ধরে থাকেন তাহলে ইউটিউবে সফল হওয়ার সুযোগ পাবেন।
এজেড

