শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

উয়েফা নেশনস লিগের ইতিহাস 

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:৫০ পিএম

শেয়ার করুন:

উয়েফা নেশনস লিগের ইতিহাস 

ইউনিয়ন অব ইউরোপিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (উয়েফা)-র অধীনে থাকা জাতীয় দলগুলো এক সেশনে মাত্র দুটি পূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে থাকে। প্রথমটি হলো ফিফা বিশ্বকাপ। অপরটি ইউরো। এর মাঝের সময়ে বিশ্বকাপ ও ইউরোর বাছাইপর্ব খেলে থাকে দেশগুলি। এছাড়া বাকি সময়টায় নিজেদের মধ্যে প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করে থাকে। কিন্তু এইসব খেলাগুলোকে প্রায় প্রতিটি দলই খুব হালকাভাবে নিত। অন্যদিকে দলের মূল খেলোয়াড়দের বাইরে রেখে বেঞ্চের খেলোয়াড়দের নামিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা চালাতো। ফলে এই ‘ম্যাড়ম্যাড়ে’ আন্তর্জাতিক খেলা থেকে দর্শকরাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল। এতে করে প্রচারসহ অন্যান্য স্পন্সরে যারা ছিলেন, তাদের লাভের পরিমাণ দিন দিন তলানিতে যেয়ে ঠেকছিল। 

ফলে উয়েফা তাদের অধীনে থাকা জাতীয় দলগুলোকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তোলা ও তাদের মধ্যে আরো বেশি প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এছাড়া নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ‘উয়েফা নেশনস লিগ’ নামে এক নতুন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ২০১১ সালে সাইপ্রাসে অনুষ্ঠিত উয়েফার বার্ষিক পরিকল্পনা সভায় প্রথমবারের মতো উয়েফা নেশনস লিগ শুরু করার আলোচনা হয়। পরবর্তীতে উয়েফার বিভিন্ন কার্যনির্বাহী সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো এই লিগ চালুর ব্যাপারে সহমত পোষণ করে। ২০১৩ সালের অক্টোবরে নরওয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ইংভে হ্যালেন এই প্রতিযোগিতা শুরুর সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব মিডিয়ার কাছে স্বীকার করেন। 


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন-ছয় হাজার কোটি টাকায় বিক্রি হলো নারী আইপিএল ফ্রাঞ্চাইজি

এছাড়া ২০১৪ সালের মার্চ মাসে বর্তমান ফিফা প্রেসিডেন্ট ও তৎকালীন উয়েফার সাধারণ সম্পাদক জিয়ান্নি ইনফেন্তিনো এই প্রতিযোগিতা শুরুর মত প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান গ্রেগ ডাইক ও বেলজিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক স্টিভ মারটিন্স এই প্রতিযোগিতার ফলে ইউরোপ ফুটবলের যে উপকার হবে তা মিডিয়ার কাছে ব্যক্ত করেন। সর্বশেষে ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ কাজাখস্থানের রাজধানী আস্তানায় অনুষ্ঠিত ৩৮তম অরডিনাল উয়েফা কংগ্রেসে উয়েফার বর্তমান সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে উয়েফা নেশনস লিগ শুরুর ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করে। ফলে ২০১৮-১৯ মৌসুমে প্রথমবারের মতো মাঠে গড়ায় উয়েফা নেশনস লিগের প্রথম ও উদ্বোধনী আসর। যেখানে ইউরোপের ফুটবল সংস্থা উয়েফার অন্তর্ভুক্ত ৫৫টি জাতীয় ফুটবল দল প্রতিযোগিতা নেয়।  

আরও পড়ুন-বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন আবিষ্কার, কে এই ১৫০ কি.মি. গতির বোলার?


বিজ্ঞাপন


অপরদিকে এই প্রতিযোগিতার প্রস্তাব গৃহীত হলে। তখন থেকেই আলাদা করে একটি ফরম্যাট ঠিক করা হয় এই লিগের জন্য। উয়েফার সদস্য ৫৫টি দেশই একযোগে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। চারটি আলাদা লিগে ভাগ হয় প্রথমে। এই ভাগটি করা হয় নেশন্স কো-এফিসিয়েন্ট র‌্যাঙ্কিং  অবস্থান অনুযায়ী। লিগ 'এ' ও 'বি' তে থাকে ১২টি করে দল। মূলত ইউরোপিয়ান র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষ ১২ দল থাকে এই গ্রুপ দুটিতে। এছাড়া 'সি' ও 'ডি' তে খেলে ১৫টি ও ১৬টি করে দল।

এদিকে লিগ 'এ' তে যে ইউরোপিয়ান র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষ ১২ দল খেলবে। এই র‍্যাংকিং অবশ্য ফিফার মতো নয়। শুধুমাত্র প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে দলগুলোর হার-জিতের ওপর পয়েন্টের হিসেবে করা ইউয়েফার আলাদা র‍্যাংকিং। লিগ 'এ' তে শীর্ষে থাকা দলগুলো শীর্ষ বাছাই হিসেবে যোগ দেবে ইউরো বাছাইপর্বের ড্রতে। আর তলানিতে থাকা দলগুলোর অবনমন হবে লিগ 'বি'তে। তাঁদের জায়গায় আসবে লিগ 'বি' এর চার গ্রুপে থাকা শীর্ষ দল। লিগ 'সি' ও 'ডি' তে থাকবে একই নিয়ম।  

আরও পড়ুন-সাকিব-নারাইনকে টপকে নতুন রেকর্ড রশিদ খানের

এ পর্যন্ত নেশন্স লিগের দুইটি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৮-১৯ মৌসুমে হওয়া প্রথম টুর্নামেন্টটি জিতে নেয় পর্তুগাল, সেখানে রানারআপ হয় নেদারল্যান্ডস। ইংল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ড যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ হয়। এরপরের ২০২০-২১ মৌসুমের নেশন্স লিগের বিজয়ী হয় ফ্রান্স। ফাইনালে তারা স্পেনকে হারায় ২-১ গোলে। সেই মৌসুমে তৃতীয় হয় ইতালি ও চতুর্থ হয় বেলজিয়াম। উয়েফা নেশনস লিগের পরবর্তী প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে ২০২২-২৩ মৌসুমে অর্থাৎ এই বছরে।

এসসিএন/এসটি 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর