আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের প্রধান কোচ জোনাথন ট্রট। সম্প্রতি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ৭৩ রানে একমাত্র টেস্ট হারের পর তিনি অভিযোগ করেন, বোর্ডের কর্তারা দল নির্বাচনে কোচের মতামত উপেক্ষা করছেন এবং তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগই রাখছেন না।
ট্রট বলেন, “সবচেয়ে হতাশার বিষয় হচ্ছে, আমি দলের নির্বাচনে কোনো ইনপুট দিতে পারিনি। এসিবির শীর্ষ কর্তাদের বা প্রধান নির্বাচকের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি, কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি।” তিনি আরও যোগ করেন, “এমনকি এশিয়া কাপের পর থেকে একের পর এক দল গঠন হচ্ছে, কিন্তু তাতেও আমার কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। আমি মনে করি, একজন কোচ হিসেবে অন্তত স্কোয়াড বা একাদশ গঠনে কিছুটা মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেটি হচ্ছে না।”
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- ভারতে আতঙ্কিত অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা
আরও পড়ুন- ‘ভারতের সঙ্গে এই অবিচারের ব্যাখ্যা দিন’
৪৪ বছর বয়সী সাবেক ইংলিশ ব্যাটার ট্রট জিম্বাবুয়ের সংবাদমাধ্যম স্পোর্টসকাস্ট-কে বলেন, “অন্য দলে কাজ করার সময় আমি সবসময় দল নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে পারতাম। কিন্তু এখানে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। একজন কোচের জন্য এটি সত্যিই হতাশাজনক।”
সম্প্রতি সীমান্তে পাকিস্তানের গুলিতে তিনজন আফগান ক্লাব ক্রিকেটার নিহত হওয়ার ঘটনায় আফগানিস্তান পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয়। ঠিক তার পরেই আসে জিম্বাবুয়ে টেস্টে লজ্জাজনক হার, আর সেখানেই ট্রটের এই বিস্ফোরক মন্তব্য।
বিজ্ঞাপন
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে আফগানিস্তান রশিদ খানকে বিশ্রাম দেয়, যা নিয়েও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ট্রট। তিনি বলেন, “যখনই আফগানিস্তান টেস্ট জিতেছে, রশিদ দলে ছিল। শেষবার যখন সে খেলেছিল, তখনও আফগানিস্তান জিতেছিল। টেস্টে জিততে হলে সেরা খেলোয়াড়দের দরকার। যদিও আমি বুঝতে পারি, রশিদ অনেক ক্রিকেট খেলে শরীরের ওপর চাপ পড়েছে।”
“তাকে সতেজ রাখতে হবে, বিশেষ করে সামনে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। তাই তাকে বিশ্রাম দেওয়ার বিষয়টি আমি বুঝতে পারছি। এতে নতুন খেলোয়াড়রা সুযোগ পাচ্ছে, যদিও এই ম্যাচে তারা সেটা কাজে লাগাতে পারেনি। আশা করি এই অভিজ্ঞতা থেকে তারা শিখবে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে,” যোগ করেন তিনি।
কোচ হিসেবে নিজের অবস্থান নিয়েও এখন অনিশ্চিত ট্রট। তিনি বলেন, “সত্যি বলতে, আমি জানি না আমার ভবিষ্যৎ কী হবে। আমার সঙ্গে চুক্তি চলছে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। এরপর বোর্ড যদি দায়িত্বের পরিধি বদলায়, তখন দেখা যাবে। এখন আমার মনোযোগ আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজে। নিজেদের ছন্দে ফেরাই মূল লক্ষ্য।”
আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে ২৯ ও ৩১ অক্টোবর এবং ২ নভেম্বর, সব ম্যাচই হারারে স্পোর্টস ক্লাবে। বোর্ডের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে ট্রটের এই প্রকাশ্য অভিযোগ আফগান ক্রিকেটে আবারও ব্যবস্থাপনাগত বিশৃঙ্খলার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

