পাকিস্তান ক্রিকেট দল যেন বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল যে রহস্যের কূল-কিনারা করতে পারছে না কেউ। সংকটের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দলের দুই স্তম্ভ বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। এক সময় যাঁরা পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের প্রাণভ্রমরা ছিলেন, আজ তাঁরাই দলের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৪ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ জয়ের পেছনে বড় দায় এই দুই তারকার। এই ব্যর্থতার ধাক্কা এখন পাকিস্তান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, বাবর-রিজওয়ানের সময় কি সত্যিই ফুরিয়ে এসেছে?
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তিন ম্যাচে মোহাম্মদ রিজওয়ানের রান মাত্র ৬৯। বাবর আজমের অবস্থা আরও নাজুক, ৫৬ রান। আরও স্পষ্ট করলে এখন পর্যন্ত চলতি বছরে এই দুই ব্যাটারের তেমন বড় ইনিংস নেই, রিজওয়ানের ১২২ রানের একটি ইনিংস ছাড়া। চলতি বছরে ১১ ম্যাচে একটি শতক ও একটি অর্ধশতকে ৭১.২০ স্ট্রাইক রেটে ৩৬১ রান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারের।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- ভাগ্যিস স্টার্ক-কামিন্সরা ছিল না— পাকিস্তান দল নিয়ে ঠাট্টা শোয়েবের
আরও পড়ুন- এ লজ্জা রশিদ খান রাখবেন কোথায়
অন্যদিকে বাবর যেনো নিজেকে হারিয়েছে সেই ২০২৩ সালেই। সে বছর নেপালের বিপক্ষে শতকের দেখা পেয়েছিলেন তিনি; এরপর আর তার ব্যাটে কোনো ফরম্যাটেই শতকের দেখা নেই। শতক তো নেই, এমনকি ব্যাটে রানও পাচ্ছেন কালে-ভদ্রে। এ বছরে ১১ ইনিংসে তিন অর্ধশতকে ৭৮.৪০ স্টাইক রেটে করেছেন ৩৩৪ রান।
আধুনিক ক্রিকেটে এমন পারফরম্যান্সে ম্যাচ জেতা তো দূর, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাও অসম্ভব। ত্রিনিদাদের কঠিন উইকেটে যখন শাই হোপের মতো ব্যাটার সেঞ্চুরি করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছেন, তখন বাবর-রিজওয়ান ব্যাট হাতে নিশ্চুপ। পাওয়ার প্লে-তেই তাঁদের বিদায় দলের ওপর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
বিজ্ঞাপন

প্রথম ম্যাচে এই দুই তারকা দলকে জয়ের পথে রেখেছিলেন। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে তাঁদের ব্যর্থতা পাকিস্তানের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। এই ব্যর্থতা পুরনো প্রশ্নকে আবার সামনে এনেছে। এই জুটির উপর আর কতটা ভরসা করা যায়?
ফলে আসন্ন এশিয়া কাপ এখন বাবর ও রিজওয়ানের ক্যারিয়ারের জন্য ডু অর ডাই সিচুয়েশন। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নেবে পাকিস্তান। ধারণা করা হচ্ছে, এই সিরিজে এশিয়া কাপের মূল দলই খেলবে। কিন্তু বড় প্রশ্ন বাবর ও রিজওয়ান কি সেই দলে জায়গা পাবেন?

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এখন দ্বিধার দোলাচলে। পাকিস্তানের একাধিক গণমাধ্যমের খবর, বোর্ডের একাংশ এই দুই সিনিয়র তারকাকে নিয়ে হতাশ। কেউ কেউ এমনকি নতুন সূচনার নামে তাঁদের দল থেকে বাদ দেওয়ার পক্ষে। এই প্রেক্ষাপটে এশিয়া কাপ হয়ে উঠেছে তাঁদের ক্যারিয়ারের শেষ লাইফলাইন! এখানে ব্যর্থ হলে পাকিস্তান দলে তাঁদের অধ্যায় চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

