সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

শেষ বলে ঐতিহাসিক ছক্কায় যেভাবে পাকিস্তানকে জিতিয়েছেন জাভেদ মিয়াঁদাদ

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৫, ০৪:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

ভারতের বিপক্ষে শেষ বলে জাভেদ মিয়াঁদাদের সেই ঐতিহাসিক ছক্কা

ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট মানেই তুমুল উত্তেজনা! দুই দেশের রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে এখন এ দুই দলের দেখা মেলে শুধু বিশ্বকাপ বা কোনো বড় টুর্নামেন্টে। তাই যখনই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল মুখোমুখি হয়, দর্শক-সমর্থকদের উত্তেজনা থাকে তুঙ্গে। আজ থেকে ঠিক ৩৯ বছর আগে এমনই এক ম্যাচে শেষ বলে ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে প্রথম শিরোপা এনে দিয়েছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ, যে অর্জনের কথা চিরকাল থেকে যাবে ক্রিকেট ইতিহাসে।

সালটা ১৯৮৬। তখনও ওয়ানডে ক্রিকেটে সাদা পোশাক, লাল বল। এশিয়া আর অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি শীর্ষ দল নিয়ে আয়োজন হয়েছিল ‘অস্ট্রাল-এশিয়া কাপ’। আর এই টুর্নামেন্টের ফাইনালেই ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তান পায় সেই ঐতিহাসিক জয়।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন- পিএসএল জিতে কত টাকা পেলেন সাকিব-রিশাদ-মিরাজরা

আরও পড়ুন- আইপিএলের চিয়ারলিডাররা এক ম্যাচে কত টাকা আয় করেন?

সে সময় দুই দলেই তারকার মেলা। ভারতের হয়ে খেলতেন সুনীল গাভাস্কার, কপিল দেব, রবি শাস্ত্রী, চেতন শর্মার মতো তারকারা। আর পাকিস্তান দলে ছিলেন ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, রমিজ রাজা, আর জাভেদ মিয়াদাদ, যারা পরে কিংবদন্তি হয়ে উঠেছেন।

pjimage-2020-04-18t122850-1587193137-20230813142136


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন- আইপিএলে আর খেলবেন কি না, জানালেন ধোনি
আরও পড়ুন- অবিশ্বাস্য জয়ে পিএসএল চ্যাম্পিয়ন সাকিব-রিশাদের লাহোর

ফাইনাল ম্যাচটি ছিল শারজায়। পাকিস্তানের অধিনায়ক ইমরান খান টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান। ভারতের হয়ে সে ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছিলেন সুনীল গাভাস্কার আর শ্রীকান্ত। গাভাস্কারের ৯০ আর শ্রীকান্তের ৭৫ রানে। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ভারত তোলে ২৪৫ রান, সে সময়ের ওয়ানডেতে যা ছিল বেশ বড় লক্ষ্য।

ভারতের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যায়। ইমরান খানের দল ৬১ রানে হারায় ৩ উইকেট। তখন মাঠে নামেন মিয়াদাদ। একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দলকে টেনে নিয়ে যান তিনি, যদিও অন্যপ্রান্তে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। মিয়াদাদের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি পাকিস্তানকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যায়। 

তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে পাকিস্তানের এ ম্যাচে তখনও বাকি ছিল চরম নাটকীয়তার। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইমরান খানের দলটির দরকার ছিল ১১ রান।

images-20230813142450

আরও পড়ুন-পাকিস্তান সফর থেকে ছিটকে গেলেন মুস্তাফিজ, ডাক পেলেন যিনি

আরও পড়ুন- মায়ের জন্য ক্যানসার হাসপাতাল গড়ার স্বপ্ন থেকে বিশ্বকাপ জয় ইমরান খানের

প্রথম বলেই দৌড়ে দুই রান নিতে গিয়ে সেদিন আউট হন ওয়াসিম আকরাম। পাকিস্তানের হাতে আছে তখন আর দুই উইকেট। এ সময় দ্বিতীয় বলে দারুণ এক চার হাঁকান মিয়াদাদ। ফলে চার বলে প্রয়োজন হয় ৬ রান। এরপর তৃতীয় বলে আসে আরও এক রান। কিন্তু চতুর্থ বলেই বোল্ড হয়ে ফিরে যান জুলকারনাইন।

পাকিস্তানের তখন ২ বলে প্রয়োজন ৫ রান, হাতে আছে এক উইকেট, মিয়াঁদাদও নেই স্ট্রাইকে। পঞ্চম বলে তৌসিফ আহমেদ এক রান নিয়ে শেষ বলে স্ট্রাইক দেন মিয়াঁদাদকে। জয়ের জন্য তখনও প্রয়োজন চারটি রান। এমন সময় তৌসিফের সঙ্গে কিছু একটা পরামর্শ করতে দেখা যায় মিয়াদাদকে।

javed-miandad-543

চেতন শর্মা শেষ বলে সম্ভবত ইয়র্কার দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বলটি হয়ে যায় ফুলটস। কিন্তু ওদিকে মিয়াঁদাদও যেন প্রস্তুত ছিলেন, কোনো ভুল করেননি। ব্যাট চালিয়ে বল মিডউইকেটের উপর দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠান। শেষ বলে ছক্কা! পাকিস্তান পেয়ে যায় প্রথম শিরোপার স্বাদ, গ্যালারিতে শুরু হয় উল্লাস, পাকিস্তান শিবিরে বাঁধভাঙা আনন্দ।

পরে এক সাক্ষাৎকারে ইএসপিএন ক্রিকিনফোকে তৌসিফ জানিয়েছিলেন, শেষ বলের আগে মিয়াদাদ আর তিনি কথা বলেছিলেন, শেষ বলটা হয়তো ইয়োর্কার করতে পারেন চেতন। তখন মিয়াঁদাদ বলেছিলেন, ইয়োর্কার করতে ভুল করলে সেটা ফুল টসও হয়ে যেতে পারে। হয়েছিলও তাই! সৃষ্টিকর্তাও হয়তো সেদিন চেয়েছিলেন পাকিস্তানই জয়ী হোক। তাই হয়তো আগাম ধারণা করতে পেরেছিলেন মিয়াঁদাদ।

ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের প্রথম শিরোপা জয়ে জাভেদ মিয়াঁদাদের সেই অবদান আজও অমলিন। ৩৯ বছর পেরিয়ে গেলেও ক্রিকেট ভক্তরা আজও মনে রাখে সেই মুহূর্ত- শেষ বলে ছক্কার সেই নাটকীয়তা, আর মিয়াদাদের অদম্য আত্মবিশ্বাস। সেই জয় আজও পাকিস্তান ক্রিকেটের গর্বের গল্প।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর