নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এশিয়া অঞ্চলের বাছাই পর্বে ঘটল ক্রিকেট ইতিহাসের এক বিরল ঘটনা। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে কাতারের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে পুরো ১০ জন ব্যাটারকে ‘রিটায়ার্ড আউট’ করল সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। স্কোরবোর্ডে তখন তাদের রান ১৬ ওভারে বিনা উইকেটে ১৯২!
নারী বা পুরুষ- কোন ধরনের ক্রিকেটেই এমনটা আগে কখনো দেখা যায়নি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক ম্যাচে এতজন ব্যাটারকে ইচ্ছা করে রিটায়ার্ড আউট করার ঘটনা এই প্রথম।
বিজ্ঞাপন
মজার ব্যাপার হলো, ব্যাট হাতে যেমন অবাক করেছে ইউএই নারীরা, বল হাতে তার চেয়েও বেশি বিধ্বংসী ছিল দলটি। কাতারকে গুটিয়ে দেয় মাত্র ২৯ রানে! ম্যাচটা শেষ হয় মাত্র ২৭.১ ওভারে, ইউএই জিতে যায় রেকর্ড ১৬৩ রানের ব্যবধানে।
আরও পড়ুন-পাকিস্তানের করা ক্ষতির জবাব দিতে ভারতের পাশে ইংল্যান্ড
এই ম্যাচে ছিল আরও এক ব্যতিক্রমী রেকর্ড, মোট ১৫টি ডাক! ইউএইর ব্যাটিং ইনিংসে ৮টি আর কাতারের ইনিংসে ৭টি। নারী আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা সর্বোচ্চ।
ব্যাটিংয়ে নামা ইউএইর দুই ওপেনার ঈশা ওজা (অধিনায়ক) ও থীর্থা সতীশ শুরু থেকেই আগ্রাসী খেলেন। মাত্র ১৪ ওভারে দলকে নিয়ে যান ১৫০ রানের ঘরে। ওজা ৫১ বলে তুলে নেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের চতুর্থ সেঞ্চুরি, শেষ করেন ১১৩ রানে। সতীশ করেন ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি, ইনিংস শেষ করেন ৭৪ রানে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- উত্তেজনার মাঝেই পাকিস্তানের কাছে হার মানল ভারত
১৬তম ওভারের শেষ দিকে ওজা চার বলে মারেন তিনটি চার, দলের রানরেট তখন ওভারপ্রতি ১২। তখনই ইউএই দল সিদ্ধান্ত নেয় ইনিংস শেষ করার। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে ‘ডিক্লেয়ার’ করার নিয়ম নেই। তাই ওজা, সতীশসহ বাকি আট ব্যাটারকে রিটায়ার্ড আউট ঘোষণা করা হয়, তাদের কেউই ব্যাট হাতে মাঠে নামেননি!
ফলে ১৬ ওভারে ‘অলআউট’ হয়ে যায় ইউএই। তবে ব্যতিক্রমী এক অলআউট। আর এই ১৯২ রানই নারী টি-টোয়েন্টিতে ‘অলআউট’ দলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ হিসেবে রেকর্ড গড়ে।
আরও পড়ুন- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পৌঁছে গেছে আমিরাতেও
জবাবে ব্যাট করতে নেমে কাতার পুরোপুরি অসহায়। মাত্র ১১.১ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় তারা। কেবল তিনজন ব্যাটারই রান তুলতে পারেন। ৫ রানের বেশি করতে পারেন মাত্র একজন, ওপেনার রিজফা বানু ইমানুয়েল, যিনি করেন ২০ রান।
কিন্তু সামনে দাঁড়াতে পারেননি কেউ। বাঁহাতি স্পিনার মিশেল বোথা মাত্র ১১ রানে নেন ৩ উইকেট। ৫ ওভারে ২৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ইমানুয়েল রানআউট হয়ে গেলে বাকিরা টিকতে পারেন মাত্র ২০ বল। সেই সময় কাতার স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারে মাত্র ৩ রান।
একই ম্যাচে ব্যাট হাতে রেকর্ড, বল হাতেও বিধ্বংসী। ক্রিকেটে এমন অদ্ভুত নাটকীয়তা খুব কমই দেখা যায়!
