ফুটবল মাঠে নাটক-উত্তেজনা থাকবেই, কিন্তু জোসে মরিনিয়ো মানেই যেন নিয়মিত নতুন নতুন সব বিতর্ক। তবে এবার তিনি যা করলেন, সেটাকে কেউ কেউ রসিকতা বলতে পারেন, আবার কেউ বলতে পারেন চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ।
গতকাল রাতে টার্কিশ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইস্তাম্বুল ডার্বিতে নিজেদের মাঠেই গালাতাসারাইয়ের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায় মরিনিয়োর ফেনারবাচে। ম্যাচ শেষে রেফারির সঙ্গে কথা বলার সময় আচমকাই পেছন থেকে গালাতাসারাই কোচ ওকান বুরুকের নাক চেপে ধরেন মরিনিয়ো!
বিজ্ঞাপন
ভিডিওতে যা দেখা গেল…
ঘটনাটি চোখের পলকেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায়, বুরুক যখন মাঠ ছাড়ছিলেন, তখন পিছন থেকে এসে দুই আঙুল দিয়ে তার নাক ধরে টান দেন মরিনিয়ো। এতে বুরুক কিছুটা হতভম্ব হয়ে মুখে হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়েন। অন্যরা দ্রুত এসে মরিনিয়োকে সরিয়ে নেন।
ম্যাচেও ছিল উত্তেজনা, তিনজন লাল কার্ড দেখেছেন
শুধু ম্যাচ শেষে নয়, পুরো ম্যাচ জুড়েই ছিল তীব্র উত্তেজনা। যোগ করা সময়ে দুই দলের বেঞ্চে সংঘর্ষ বাধে এবং তিনজন খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখেন—গালাতাসারাইয়ের দুইজন এবং ফেনারবাচের একজন।
বুরুক বললেন, ‘এটা ভদ্রতার পরিচয় নয়’
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন গালাতাসারাই কোচ ওকান বুরুক। তিনি বলেন, "আমি যখন বের হচ্ছিলাম, তখন সে পেছন থেকে এসে আমার নাক চেপে ধরে। এতে হালকা একটা দাগও পড়েছে। অবশ্যই এটি ভালো কিছু নয়। আমি বিষয়টি বড় করে দেখাতে চাই না, তবে এটা কোনো ভদ্রতার পরিচয় নয়।"
বিজ্ঞাপন
তবে গালাতাসারাইয়ের সহ-সভাপতি মেতিন ওজতুর্ক এত সহজভাবে বিষয়টি দেখছেন না। তার কড়া মন্তব্য, "এটা শুধু গালাতাসারাইয়ের কোচের ওপর আঘাত নয়, বরং পুরো তুর্কি ফুটবলের জন্যই অপমানজনক। মরিনিয়ো তুরস্ককে কী মনে করে? কোথা থেকে সে এত সাহস পায়?"
এটাই কি প্রথমবার? না, মরিনিয়ো তো এমনই!
মরিনিয়ো নতুন করে বিতর্কে জড়ালেও এটাই প্রথমবার নয়। এর আগে ফেব্রুয়ারিতেই গালাতাসারাইয়ের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। গালাতাসারাই দাবি করেছিল, এক ম্যাচের পর মরিনিয়ো তাদের খেলোয়াড় ও স্টাফদের ‘বানরের মতো লাফালাফি করছে’ বলে মন্তব্য করেন। যদিও ফেনারবাচে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেয় এবং উল্টো গালাতাসারাইয়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে।
মরিনিয়োর আচরণের পর গালাতাসারাই নিজেদের অফিশিয়াল এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে ওকান বুরুকের হাস্যোজ্জ্বল একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছে, "আপনি কাউকে আঘাত করবেন না, সব হজম করে যাবেন।"
মরিনিয়োর জন্য শারীরিকভাবে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করা নতুন কিছু নয়। ২০১১ সালে যখন তিনি রিয়াল মাদ্রিদের কোচ ছিলেন, তখন বার্সেলোনার সহকারী কোচ টিটো ভিলানোভার চোখে আঙুল দিয়ে খোঁচা দিয়েছিলেন! তাহলে কি মরিনিয়ো শুধুই জয়ের জন্য নয়, বিতর্কের জন্যও ফুটবল মাঠে থাকেন? সেটা হয়তো তিনিই ভালো জানেন!