শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ঢাকা

সহবাসের মাধ্যমে রোজা ভাঙলে কাফফারার নিয়ম কী

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৩, ০১:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

সহবাসের মাধ্যমে রোজা ভাঙলে কাফফারার নিয়ম কী

প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর রমজানের রোজা ফরজ। ইচ্ছাকৃত রোজা না রাখা বা ভেঙে ফেলা— মারাত্মক গুনাহের কাজ। কারণ, সারা বছর রোজা রাখলেও রমজানের একটি রোজার সমান হবে না। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভাঙে, তার ওই রোজার বিপরীতে সারা জীবনের রোজাও রমজানের একটি রোজার সমমর্যাদা ও স্থলাভিষিক্ত হবে না।’ (সুনানে তিরমিজি: ৭২৩)

শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া ইচ্ছাকৃত পানাহার বা সহবাসের মাধ্যমে রমজানের রোজা ভেঙে ফেললে তার কাজা ও কাফফারা অর্থাৎ লাগাতার ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে। পানাহার ও সহবাস ছাড়া অন্য পদ্ধতিতে ইচ্ছাকৃত ভাঙলে কাফফারা দিতে হবে না, তবে কাজা করতে হবে। (আল-মাবসুত লিস-সারাখসি: ৩/৭২)

যেমন—মুসাফির ও অসুস্থ ব্যক্তি রোজা রাখতে কষ্ট হলে, অনুরূপ গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী নারী যদি নিজের বা বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা করে, তাহলে রমজানে রোজা না রেখে পরে তা কাজা করে নিতে পারবে, এক্ষেত্রে কাফফারা দিতে হবে না। (দ্রষ্টব্য: সুরা বাকারা১৮৫; সুনানে তিরমিজি: ৭১৫)

আরও পড়ুন: রমজানে শয়তান শেকলবন্দি, তবুও পাপাচার হয় কেন

কাফফারা আদায়ের ক্ষেত্রে লাগাতার ৬০ দিন রোজা রাখার সময় যদি মাঝখানে একদিনও বাদ যায়, তাহলে আবার শুরু থেকে গণনা আরম্ভ হবে, আগেরগুলো বাদ হয়ে যাবে। (মাবসুতে সারাখসি: ৩/৮২)

কোনো ব্যক্তির ইচ্ছাকৃতভাবে একাধিকবার একই রমজানের রোজা ভাঙার কারণে এক কাফফারাই যথেষ্ট হবে। অর্থাৎ ভেঙে ফেলা সব রোজার জন্য ৬০ জন মিসকিনকে দুবেলা খানা খাওয়াবে, অথবা প্রতি মিসকিনকে এক ফিতরা পরিমাণ সম্পদ সদকার মাধ্যমেও কাফফারা আদায় করা যাবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ২/১০১, রদ্দুল মুহতার: ২/৪১৩)


বিজ্ঞাপন


৬০ মিসকিনকে দুইবেলা খানা খাওয়ানোর পরিবর্তে প্রত্যেককে এক ফিতরা পরিমাণ অর্থাৎ এক কেজি (৬৩৫ গ্রামের কিছু বেশি) গম বা তার সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া যেতে পারে। তবে শর্ত হলো— ওই টাকা দিয়ে মিসকিনকে খানা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। একজন গরিবকে প্রতিদিন এক ফিতরা পরিমাণ করে ৬০ দিন দিলেও আদায় হবে। ৬০ দিনের ফিতরা পরিমাণ একত্রে বা এক দিনে দিলে আদায় হবে না। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/৫১৩, রদ্দুল মুহতার: ৩/৪৭৮)

কাফফারার রোজা রাখার সময় বছরের যে পাঁচদিন রোজা রাখা হারাম, সেই দিনগুলোতে রোজা রাখা যাবে না। আর স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে যদি কাফফারা আদায় করার সময় হায়েজ শুরু হয়, তবে সেসময়ের মধ্যে রোজা না রেখে পবিত্র হওয়ামাত্রই রোজা রাখা আরম্ভ করতে হবে।

ফিদিয়া, কাফফারা ও সদকাতুল ফিতর তাদেরকেই দেওয়া যাবে, যাদেরকে জাকাত প্রদান করা যায়। যথা ‘ফকির, মিসকিন, নওমুসলিম, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদরত প্রভৃতি।’(সুরা-৯ তওবা: ৬০)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের রোজার হক আদায় এবং শরিয়তসম্মত ওজর ছাড়া রোজা যেন ভাঙতে না হয়, সেই তাওফিক দান করুন। রোজার সকল মাসয়ালা জানার, বোঝার ও মানার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর