রমজানে সৌভাগ্যের অধিকারী হবেন যেভাবে

আরও পড়ুন: রমজানে দান-সদকায় অফুরন্ত সওয়াব

অজু ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ গুরুত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করা
আমর ইবনু সাঈদ ইবনুল আস (রা.) বলেন, আমি উসমান (রা.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তিনি পানি আনার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি বলেন, আমি রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, কোনো মুসলিমের যখন কোনো ফরজ নামাজের ওয়াক্ত হয় আর সে উত্তমরূপে নামাজের অজু করে, নামাজের নিয়ম ও রুকুকে উত্তমরূপে আদায় করে, তাহলে যতক্ষণ না সে কোনো কবিরা গুনাহে লিপ্ত হবে তার এই নামাজ তার পেছনের সব গুনাহর জন্য কাফফারা হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আর এ অবস্থা সর্বযুগেই বিদ্যমান। (মুসলিম: ৪৩১)

রাত জেগে ইবাদত করা
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রাতে ঈমানসহ পুণ্যের আশায় রাত জেগে ইবাদত করে, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৩৬)

আরও পড়ুন: তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম কানুন

বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত 
আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সিয়াম এবং কোরআন বান্দার জন্য শাফাআত করবে। সিয়াম বলবে, হে রব! আমি তাকে দিনে খাবার গ্রহণ করতে ও প্রবৃত্তির তাড়না মেটাতে বাধা দিয়েছি। অতএব তার ব্যাপারে এখন আমার শাফাআত কবুল করুন। কোরআন বলবে, হে রব! আমি তাকে রাতে ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। অতএব তার ব্যাপারে এখন আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।’ (শুআবুল ঈমান: ১৮৩৯)

লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করা 
পবিত্র রমজানে এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর আপনি কি জানেন কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। সেই রাতে ফেরেশতার রুহ (জিব্রাইল) অবতীর্ণ হয়, প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।’ (সুরা কদর: ১-৫)

আরও পড়ুন: শবে কদরে চারটি আমল অবশ্যই করবেন

তাই সৌভাগ্যবানদের কাতারে জায়গা করে নিতে প্রিয়নবী (স.) এই রাতের সন্ধান করার ব্যাপারে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। আয়েশা (রা.) বলেন, মহানবী (স.) বলেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান করো।’ (সহিহ বুখারি: ২০১৭)

ইতেকাফ করা
আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফ করতেন। তাঁর ওফাত পর্যন্ত এই নিয়মই ছিল। (সহিহ বুখারি: ২০২৬)
ইতেকাফের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এক দিন ইতেকাফ করবে আল্লাহ তায়ালা তার ও জাহান্নামের মাঝে তিন পরিখা পরিমাণ দূরত্ব সৃষ্টি করবেন; যার দূরত্ব দুই দিগন্তের দূরত্বের থেকে বেশি দূরত্ব হবে।’ (কানযুল উম্মাল: ২৪০১৯)

দোয়া, জিকির ও ইস্তেগফারে মগ্ন থাকা
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তিন ধরনের লোকের দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ১. রোজাদার যখন ইফতার করে, ২. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া, ৩. মজলুমের দোয়া। মজলুম ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ মেঘমালার ওপর উঠিয়ে নেন এবং এজন্য আসমানের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার ইজ্জতের কসম! আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব, যদিও তা কিছুকাল পরে হয়।’ (তিরমিজি: ৩৫৯৮)

অতএব, রমজানে আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত হতে বেশি বেশি দোয়া-জিকিরে সময় কাটানো আবশ্যক। মহান আল্লাহ সবাইকে উপরোক্ত আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করার মাধ্যমে রমজানের সৌভাগ্য অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।