বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

নবীজির জীবনের দুঃখের বছর

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

মহানবী (স.)-এর জীবনের একটি বছরকে বলা হয় দুঃখের বছর। এর কারণ হলো— সে বছর নবীজি (স.) তাঁর দুই প্রিয় মানুষকে হারিয়েছেন। একজন হলেন তাঁর আশ্রয়স্থল চাচা আবু তালেব। অপরজন উম্মুল মুমিনিন হজরত খাদিজা (রা.)। কয়েকদিনের মধ্যেই দুজনের মৃত্যু হয়েছিল।

দুঃখ, দুশ্চিন্তা ও মনোবেদনায় কাতর হয়ে পড়েন প্রিয়নবী (স.)। অন্যদিকে কাফেররা প্রকাশ্যে রাসুল (স.)-কে কষ্ট দিতে শুরু করল। তিনি আশ্রয়ের খোঁজে তায়েফ চলে যান। কিন্তু সেখানে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে ওঠে।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ঈমানি দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার উপায়

ইবনে ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আবু তালেবের ইন্তেকালের পর কোরাইশরা নবী (স.)-এর ওপর এত বেশি নির্যাতন চালিয়েছিল, যা তাঁর জীবদ্দশায় তারা চিন্তাও করতে পারেনি। (ইবনে হিশাম, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪১৬)

মনোবেদনা ও অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে রাসুল (স.) ওই বছরের নাম রেখেছিলেন আমুল হোজন বা দুঃখের বছর। সেটি ছিল নবুয়তের দশম বছর।

চাচা আবু তালেবের ইন্তেকাল
আবু তালেব ঘাঁটিতে কয়েক বছরের অবরুদ্ধ জীবন থেকে মুক্ত হওয়ার ছয় মাস পর নবুয়তের ১০ম বর্ষে রজব মাসে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর চাচা আবু তালেব ইন্তেকাল করেন। (বুখারি: আবু তালেবের কিসসা অধ্যায়)


বিজ্ঞাপন


অন্য বর্ণনায় এ কথা উল্লেখ রয়েছে যে, খাদিজা (রা.)-এর ইন্তেকালের তিন দিন আগে রমজান মাসে তিনি ইন্তেকাল করেন।

আবু তালেবের ইন্তেকালের সময় ঘনিয়ে এলে রাসুলুল্লাহ (স.) তাঁর কাছে যান। সেখানে আবু জেহেলও উপস্থিত ছিল। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, চাচাজান আপনি শুধু ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলুন—এই স্বীকারোক্তি করলেই আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য সুপারিশ করতে পারব। আবু জেহেল ও আবদুল্লাহ ইবনে উমাইয়া বলল, আবু তালেব! আপনি কি আবদুল মোত্তালেবের ধর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন? এরপর তারা দুজন আবু তালেবের সঙ্গে কথা বলতে লাগল। আবু তালেব শেষ কথা বলেছিলেন যে, আবদুল মোত্তালেবের ধর্মের ওপর...। নবী কারিম (স.) বলেন, আমাকে নিষেধ না করা পর্যন্ত আমি আপনার জন্য মাগফেরাতের দোয়া করতে থাকব। এরপর মহান আল্লাহ এই আয়াত নাজিল করেন ‘আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী ও মুমিনদের জন্য সংগত নয়, যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে ওরা আগুনের অধিবাসী।’ (সুরা তাওবা: ১১৩)

আরও পড়ুন: অবৈধ সম্পর্ক থাকাবস্থায় ইবাদত কবুল হবে?

এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা এই আয়াতও নাজিল করেন, ‘আপনি ইচ্ছা করলেই কাউকে সৎপথে আনতে পারবে না, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনেন এবং সৎপথ অনুসারীদের সম্পর্কে তিনিই ভালো জানেন।’ (সুরা কাসাস: ৫৬)

খাদিজা (রা.)-এর ইন্তেকাল
আবু তালেবের ইন্তেকালের দুই মাস, অন্য বর্ণনা মতে, তিন দিন পর উম্মুল মুমিমিন খাদিজাতুল কোবরা (রা.) ইহলোক ত্যাগ করেন, নবুয়তের ১০ম বর্ষের রমজান মাসে তাঁর ইন্তেকাল হয়েছিল। সেই সময় তাঁর বয়স ছিল ৬৫ বছর। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বয়স ছিল ৫০।

খাদিজা (রা.) দীর্ঘ ২৫ বছর রাসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবনসঙ্গী ছিলেন। এ সময় দুঃখ-কষ্ট ও বিপদের সময় প্রিয় স্বামীর জন্য তাঁর প্রাণ কেঁদে উঠত। বিপদের সময় তিনি তাঁকে ভরসা দিতেন, ইসলাম প্রচারে নিত্য সঙ্গী থাকতেন, নিজের জীবন ও সম্পদ দিয়ে তাঁর দুঃখ-কষ্ট দূর করতেন।

 (তথ্যসূত্র: আর-রাহিকুল মাখতুম)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর