ইসলামের ইতিহাসে হাদিস শরিফ সংরক্ষণ ও চর্চার ক্ষেত্রে হাফেজে হাদিসদের অবদান অনন্য। যিনি হাদিসের সনদ (বর্ণনাকারীর ধারাবাহিকতা) ও মতন (মূল বক্তব্য) সহ বিপুলসংখ্যক হাদিস মুখস্থ রাখতে পারেন, তাকেই হাফেজে হাদিস বলা হয়। প্রাচীন যুগে সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈনসহ বহু আলেম এ সম্মান অর্জন করেছিলেন। তবে সময়ের প্রবাহে এ বিরল ঐতিহ্য ক্রমে ক্ষীণ হয়ে আসে।
এমন বাস্তবতায় হাদিসের সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ সহিহ আল-বুখারি পুরোপুরি মুখস্থ করে আলোচনায় এসেছেন তরুণ আলেম ও কোরআনের হাফেজ হাসনাইন সারওয়ার। এর আগে তিনি পবিত্র কোরআনুল কারিম হিফজ করেছিলেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: কোরআন-হাদিস মুখস্থ করতে চান? জেনে নিন স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায়
হাফেজ হাসনাইন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার ইন্দা গ্রামের আব্দুল করিমের সন্তান। তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের বাগমুছা এলাকার আল মারকাজুল ইসলামি মাদরাসার ‘উলুমুল হাদিস’ বিভাগে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন।
মাত্র ৮ মাস ৭ দিনের পরিশ্রমে তিনি সহিহ আল-বুখারির সবগুলো ৭ হাজার ২৭৫টি হাদিস হিফজ করেন। এই অসাধারণ অর্জন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিক্ষাজীবনের শুরুর দিকেই হাদিস মুখস্থ করা শুরু করি। বড় ভাই মুফতি শফিউল্লাহর অনুপ্রেরণা ও পূর্বসূরী মুহাদ্দিসদের জীবন পড়েই বুখারি শরিফ হিফজের সংকল্প করি। আল্লাহর মেহেরবানিতে তা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘পূর্বসূরী আলেমরা লাখো হাদিস মুখস্থ করতেন। আজ তা প্রায় বিস্মৃতপ্রায়। এই উপলব্ধিই আমাকে বুখারি শরিফ হিফজের দিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। নিয়ত দৃঢ় থাকলে এটি মোটেও কঠিন নয়।’
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: আল্লাহ যাদের দ্বীনি জ্ঞান দান করেন
এর আগে একই প্রতিষ্ঠানের ‘হিফজুল হাদিস’ বিভাগের শিক্ষার্থী ময়মনসিংহের মাসউদুর রহমান ৮ মাস ৯ দিনে বুখারি শরিফ মুখস্থের কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। এবার হাফেজ হাসনাইন সেই ধারাবাহিকতাকে আরও এগিয়ে নিলেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হাদিস শরিফ সংরক্ষণ ও চর্চার এই অসামান্য প্রয়াস ইসলামি জ্ঞানচর্চার ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করবে এবং আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

