আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হয়ে ওঠাই একজন মুমিনের প্রকৃত সফলতা। আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, দুনিয়ার ও আখেরাতের কল্যাণ লাভ তার জন্য সহজ হয়ে যায়। কিন্তু কীভাবে একজন বান্দা আল্লাহর প্রিয় হতে পারে? পবিত্র কোরআন এমন তিনটি গুণের কথা উল্লেখ করেছে, যা যেকারও মাঝে থাকলে সে আল্লাহর প্রিয় হয়ে ওঠে এবং লাভ করে এমন প্রতিদান—যার কোনো ক্ষতি বা লোকসান নেই। আসুন, সেই গুণগুলো কী এবং কীভাবে এগুলো অর্জন করা যায়, তা জেনে নিই।
আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের ৩ গুণ
১. আল্লাহর কিতাব পাঠ ও অধ্যয়ন
আল্লাহর প্রিয় বান্দারা নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করেন, তা বোঝার চেষ্টা করেন এবং এর ওপর আমল করেন। এটি তাদের অন্তরকে আলোকিত করে এবং আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করে।
২. নামাজ পড়া ও প্রতিষ্ঠা করা
শুধু নামাজ পড়া নয়, বরং যথাযথভাবে নিয়ম অনুযায়ী তা আদায় করা এবং সমাজে নামাজ প্রতিষ্ঠিত করা আল্লাহর প্রিয়ত্বের অন্যতম চাবিকাঠি।
আরও পড়ুন: নামাজের পূর্ণ স্বাদ ও তৃপ্তি পেতে করণীয়
৩. দান-সদকা: গোপনে ও প্রকাশ্যে
আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে দিন-রাত, প্রকাশ্যে ও গোপনে দান করা—রিয়া থেকে বাঁচা এবং সওয়াব কামনার ভারসাম্য রক্ষা করে আল্লাহর সন্তুষ্টির বড় মাধ্যম। ফরজ, ওয়াজিব বা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা দান প্রকাশ্যে করলেও নফল দান গোপনে করাই উত্তম।
বিজ্ঞাপন
কোরআনের প্রতিশ্রুতি
‘যারা আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং যে রিজিক আমরা তাদের দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে—তারা এমন এক ব্যবসার আশা রাখতে পারে যা কখনও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আমি তাদের প্রতিফল পূর্ণরূপে দেব এবং নিজের অনুগ্রহ থেকে আরও বেশি দান করব। নিশ্চয়ই আমি পরম ক্ষমাশীল, কৃতজ্ঞ বান্দাদের মর্যাদা দানকারী।’ (সুরা ফাতির: ২৯-৩০)
আরও পড়ুন: জান্নাতে যেতে ন্যূনতম যেসব আমল করতে বলা হয়েছে হাদিসে
আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের পথ জটিল নয়—তবে তা অর্জনের জন্য প্রয়োজন আন্তরিকতা ও ধারাবাহিকতা। কোরআন তেলাওয়াত, নামাজ প্রতিষ্ঠা এবং দান-সদকা—এই তিনটি গুণ যার জীবনে থাকবে, সে নিঃসন্দেহে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে গণ্য হবে। এই তিন গুণ এমন এক লোকসানবিহীন ব্যবসা, যার বিনিময়ে স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই প্রতিদান দেওয়ার ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ আমাদের সেই সৌভাগ্য অর্জনের তাওফিক দিন। আমিন।
(তথ্যসূত্র: তাফসিরে মারেফুল কোরআন: ৭/ ৩৩০, তাফসিরে ইবনে কাসির: ১৬/৮২৫)

