ইরানে নারীদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে এই নিয়ম কঠোরভাবে চলেছে। কিন্তু যারা হিজাব না পরে ঘুরেন, তাদের জন্য কী শাস্তি হতে পারে জানেন? আসুন এই প্রতিবেদন থেকে জেনে নিই।
আইন কী বলে?
ইরানের সংবিধান ও ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী, নারীদের মাথা ও শরীর ঢাকার জন্য হিজাব বাধ্যতামূলক। ১৯৮৩ সাল থেকে এই আইন কার্যকর, আর তা না মানলে সরকার নানা রকম শাস্তি দেয়।

শাস্তির ধরণ কী কী?
জরিমানা: হিজাব না পরলে প্রথমে জরিমানা করা হয়, যা শহরভেদে কিছুটা ভিন্ন।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার: ‘হিজাব পুলিশ’ অনেক সময় নারীদের গ্রেফতার করে।
কারাদণ্ড: কিছু ক্ষেত্রে নারীদের ৭ দিন থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে।
কঠোর শাস্তি: নতুন আইন অনুযায়ী, হিজাব না পরার জন্য ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা কঠোর শাস্তি হতে পারে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থা: স্কুল-কলেজে হিজাব না পরার জন্য শাস্তি বা বরখাস্তও হতে হয়।
সামাজিক চাপ: শুধু আইন নয়, পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে হিজাবের ব্যাপারে।

আরও পড়ুন: হিজাব না-পরা নারীদের খুঁজতে ড্রোন ওড়াচ্ছে ইরান!
হিজাব পুলিশ কী করে?
ইরান পুলিশের বিশেষ দল ‘মরাল পুলিশ’ বা ‘হিজাব পুলিশ’ নিয়মিত টহল দেয়। মোবাইল অ্যাপ ‘নাজের’ ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ নেয়। রাস্তাঘাটে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি করা হয়।
আন্তর্জাতিক সমালোচনা
বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা ও পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের এই নীতিকে নারীর স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলে সমালোচনা করে। ২০২২ সালে মাহসা আমিনির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা এই বিতর্ককে আরও বাড়িয়ে তোলে।

আরও পড়ুন: ইরানে বিক্ষোভ: হিজাব বিতর্কের আড়ালে কী?
ইরানের হিজাব আইন শুধু ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক নিয়ম নয়, এটি রাষ্ট্রীয় আইন। এটি মেনে চলা ইরানি নারীদের জন্য জরুরি। এই আইন না মানলে জরিমানা থেকে শুরু করে কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে এই আইন নিয়ে বিতর্ক ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন তোলা হয় বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোতে।
সূত্র: আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, ইরানি আইন ও সংবাদ প্রতিবেদন

