সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

হিজাব না-পরা নারীদের খুঁজতে ড্রোন ওড়াচ্ছে ইরান! 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫১ এএম

শেয়ার করুন:

loading/img

ইরানে নারীরা রাস্তাঘাটে হিজাব পরছেন কি-না, তা পর্যবেক্ষণ করতে ড্রোন ব্যবহার করছে সে দেশের প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন সড়কেও চলছে নজরদারি। 

তৈরি করা হয়েছে বিশেষ একটি অ্যাপও। কোন নারী হিজাব পরছেন না, তার উপর নজর রাখতে এবার ড্রোন ব্যবহার করছে ইরান। তৈরি করেছে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও (অ্যাপ)। 


বিজ্ঞাপন


ইরান সরকারের সহায়তায় তৈরি ওই অ্যাপটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘নাজের’। কোনো নারী হিজাব না-পরে ঘুরছেন কি না, তা ওই অ্যাপের মাধ্যমে পুলিশকে জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ। 

সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা অনুমান করছেন, ইরান পোশাকবিধির উপর নজর রাখার জন্য বৈদ্যুতিন নজরদারি যন্ত্রের সাহায্য নিচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হল ড্রোনের ব্যবহার। 

রাস্তাঘাটে নারীদের উপর নজর রাখতে এই ড্রোনগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তেহরানের আমিরকবির বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ পথে এক বিশেষ ধরনের সফ্‌টওয়্যার বসানো হয়েছে। 

সফ্‌টওয়্যারটি মুখ শনাক্তকরণের জন্য। তবে এপি জানিয়েছে, কেউ হিজাব না-পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করছেন কি না, তা-ও ওই সফ্‌টওয়্যারের মাধ্যমে ধরা হচ্ছে। 


বিজ্ঞাপন


ইরানের প্রধান সড়কগুলির ধারে বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেগুলিও মূলত পোশাকবিধির উপর নজরদারির জন্যও বসানো হয়েছে।

জাতিসংঘের অনুসন্ধানকারী দল জানিয়েছে, ইরান পুলিশ ‘নাজের’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও চালু করেছে। রাস্তাঘাটে, গাড়ি, বাসে বা অন্য কোনও প্রকাশ্য জায়গায় কোনো নারীকে হিজাব ছাড়া ঘুরতে দেখলে ওই অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। 

অ্যাম্বুলেন্সেও হিজাব ছাড়া কাউকে দেখা গেলে ওই অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ জানানো যাবে। কবে, কোন সময়ে, কোথায় ওই নারীকে হিজাব ছাড়া দেখা গিয়েছে, তা-ও পুলিশকে জানানো যাবে ওই অ্যাপের মাধ্যমে। কোনো গাড়িতে হিজাবহীন অবস্থায় দেখা গেলে, সেই গাড়ির নম্বরও পুলিশকে জানানো যাবে।

ইরানে নারীদের পোশাকের ক্ষেত্রে কড়া ফতোয়া রয়েছে। সে দেশে মহিলাদের আবশ্যিক ভাবে মাথা ঢেকে রাখতে হয় হিজাব পরে। রাস্তায় বের হলে সব সময় ঢিলেঢালা পোশাক পরার নিয়ম। 

তা ভাঙলে কড়া শাস্তির বিধানও রয়েছে সে দেশে। ২০২২ সালে ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকে হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের পুলিশ। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল তার। মাহসার মৃত্যুর পর গোটা ইরানে তখন প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল।

সম্প্রতি এই পোশাক-ফতোয়ার প্রতিবাদে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আহু দারইয়াই প্রকাশ্যে অন্তর্বাস পরে হেঁটেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের পুলিশ। 

পরে প্রশাসন থেকে জানানো হয়, তরুণী মানসিক ভাবে সুস্থ নন। একাধিক সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, তাকে এক মানসিক রোগের চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই মানিসক রোগের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে দারইয়াই ছাড়া পেয়েছেন কি না, তা পরবর্তীতে প্রকাশ্যে আসেনি।

-এমএমএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন