কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের এক মহান মাধ্যম। অনেক সময় দেখা যায়, কেউ কোরবানির উদ্দেশ্যে পশু কেনার পর তা ব্যবসার উদ্দেশে বিক্রি করে দেয় বা অন্যকোনো কারণে বিক্রির চিন্তা করে। শরিয়তের দৃষ্টিতে এটি কতটা বৈধ? এই প্রশ্নের উত্তর দলিলভিত্তিকভাবে তুলে ধরা হলো।
কোরবানির নিয়তে পশু কেনার পর বিক্রি করা
যদি কেউ কোরবানির উদ্দেশ্যে পশু ক্রয় করে, তাহলে সেই পশু আল্লাহর নামে নির্ধারিত হয়ে যায়। একে বিক্রি করা বৈধ নয়। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৯৫; আলবাহরুর রায়েক, খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ১৯৯; আদদুররুল মুখতার: ৬/৩১৮; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩১৮)
আরও পড়ুন: কোরবানির গোশত বিক্রি করা জায়েজ?
যদি পশু কোরবানির অযোগ্য হয়ে যায়?
যদি নির্ধারিত পশুটি অসুস্থ হয়ে যায়, জখম হয় বা ত্রুটিযুক্ত হয়, তাহলে সেটি বিক্রি করে সমমূল্যের বা আরও উত্তম মানের পশু কোরবানির জন্য কিনতে হবে। আগের পশু বিক্রির অর্থ ব্যক্তি নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে না; তা নতুন পশু কেনায়ই খরচ করতে হবে। (আদদুররুল মুখতার, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৩১৮: রদ্দুল মুহতার আলা দুররুল মুখতার: ৬/৩১৮; হিন্দিয়া: ৫/২৯৫)
বিজ্ঞাপন
কোরবানির পশুর অংশ বিক্রি করা
কোরবানির পশুর মাংস, চামড়া বা চর্বি বিক্রি করা জায়েজ নয়। এমনকি কসাইয়ের পারিশ্রমিকও এসব থেকে দেওয়া যাবে না। এসব বিক্রি করে অর্থ নিলে তা সদকা করে দিতে হবে। (আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩১৯; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩১৯; হিন্দিয়া: ৫/৩০০)
হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) আমাকে তাঁর কোরবানির উটগুলো তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দিলেন আর বললেন—তার গোশত, চামড়া ও কাপড় বিতরণ করো; তবে কসাইকে এসব থেকে কিছু দিয়ো না। আমরা চাইলে নিজের পক্ষ থেকে তাকে পারিশ্রমিক দেব।’ (সহিহ বুখারি: ১৭১৭, সহিহ মুসলিম: ১৩১৭) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোরবানির চামড়া বিক্রি করে, তার কোরবানি নেই।’ (মুসনাদে আহমদ: ৪/৩০৩)

