কোরবানি একটি পবিত্র ইবাদত, যা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিখুঁত ও দোষমুক্ত পশু দিয়ে করা আবশ্যক। কোরবানির পশু যেন শরীর ও স্বাস্থ্যের দিক থেকে সুস্থ ও ত্রুটিমুক্ত হয়, সে বিষয়ে ইসলামে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি সব জাতির জন্য কোরবানির বিধান রেখেছি, যেন আমি তাদের জীবনোকরণ হিসেবে যে চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি তাতে (জবাই করার সময়) আল্লাহর নাম স্মরণ করে।’ (সুরা হজ: ৩৪)
কোরবানির পশুর গুণগত মান
কোরবানির পশুটি দেখতে সুন্দর, হৃষ্টপুষ্ট ও দোষত্রুটিমুক্ত হওয়া উচিত। একে যেন দেখেই ভালো লাগে। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) শিংবিশিষ্ট, মোটাতাজা ও মিটমিটে কালো চোখের একটি মেষ কোরবানি করেছেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২৮)
আরও পড়ুন: কোরবানির অংশীদারদের কি সমমনা হতে হয়?
যেসব পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ নয়
১. অন্ধ পশু: যে পশু চোখে দেখতে পায় না।
২. রোগাক্রান্ত পশু: যেকোনো রোগে আক্রান্ত বা অসুস্থ।
৩. পঙ্গু পশু: হাঁটাচলা করতে অক্ষম।
৪. আহত পশু: যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে বা গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত।
৫. দাঁতহীন পশু: যার একটি দাঁতও না থাকে বা এত বেশি দাঁত পড়ে গেছে যে খাদ্য চিবাতে পারে না।
৬. শিং ভাঙা পশু: যদি শিং গোড়া থেকে পুরোপুরি ভেঙে যায় এবং মস্তিষ্কে ক্ষতি ঘটে, তাহলে কোরবানি জায়েজ নয়। তবে অর্ধেক শিং বা কিছু অংশ ভাঙা হলে সমস্যা নেই।
৭. লেজ বা কান কাটা: যদি লেজ বা কোনো কান অর্ধেক বা তার বেশি কাটা থাকে, কোরবানি জায়েজ নয়। জন্মগতভাবে ছোট কান থাকলে অসুবিধা নেই। (সুনানে তিরমিজ; বাদায়িউস সানায়ে: ৪/২১৫; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩২৪)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ১০ কারণে কোরবানি শুদ্ধ হয় না
কোরবানির পশু কেনার ক্ষেত্রে সতর্কতা
কোরবানির পশু ক্রয়ের সময় ভালোভাবে পশুর চোখ, কান এবং শিং পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। আলী (রা.) বলেছেন, রাসুল (স.) আদেশ দিয়েছেন যেন কোরবানির পশুর চোখ ও কান ভালো করে পরীক্ষা করা হয় এবং কাটা বা ছেঁড়া কানসহ পশু দিয়ে কোরবানি না করা হয়। (সুনানে আবু দাউদ: ২৮০৪)
শেষ কথা, কোরবানির পশু যত্নসহকারে নির্বাচন করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সহজ হয়। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক নিয়মে কোরবানি করার তাওফিক দিন এবং আমাদের ইবাদত কবুল করুন। আমিন।

