হজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুকন ও ফরজ ইবাদত। হজ কবুল হওয়ার জন্য কিছু শর্ত পূরণ করা জরুরি। যেমন- আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত করা, ইখলাস থাকা, হালাল অর্থ থেকে হজ সম্পাদন করা, গুনাহ থেকে বিরত থাকা, কোমল ও সদাচারী হওয়া ইত্যাদি। এসব শর্তপূরণ করলে আল্লাহ তাআলা হজ কবুল করেন। আর ‘কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া কিছুই নয়।’ (সহিহ বুখারি: ১৭৭৩; সহিহ মুসলিম: ১৩৪৯; মুসনাদে আহমদ: ৭৩৫৪; সহিহ ইবনে হিববান: ৩৬৯৫)
অন্য হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করল এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ হতে বিরত রইল, সে সেদিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ থেকে ফিরে আসবে, যেদিন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছিল।’ (সহিহ বুখারি: ১৫২১)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: মাবরুর হজের জন্য যা যা করবেন
হজ কবুল হয়েছে কি না কীভাবে বুঝব
হজ কবুলের কিছু আলামত রয়েছে। অর্থাৎ কারো হজ কবুল হলে তার মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। ওলামায়ে কেরাম কোরআন-হাদিসের বিশ্লেষণ ও অভিজ্ঞতার আলোকে হজ কবুলের যেসব আলামতের কথা বলেছেন সেগুলো হলো—
ঈমানে দৃঢ়তা সৃষ্টি হওয়া
দুনিয়াবি বিষয়ের প্রতি অনীহা তৈরি হওয়া
পরকালের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাওয়া
যেকোনো গুনাহের কাজে ভয় করা ও সরে আসা
আরও পড়ুন: আরাফার দিন যে দোয়া পড়তে ভুলবেন না
বেশি বেশি আমল করার ইচ্ছা সৃষ্টি হওয়া
যত আমলই করুক অল্প মনে হওয়া
অহংকারমুক্ত ও সহজ-সরল জীবনের আগ্রহ তৈরি হওয়া
যেকোনো আমল কবুল না হওয়ার ভয় করা
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যাওয়া
ইস্তেগফার ও তাওবার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
এগুলো মকবুল হজ বা হজ্জে মাবরুর এর আলামত। ‘হজ করার পর জীবনে পরিবর্তন না এলে, ভবিষ্যতে গুনাহ থেকে বিরত থাকার আগ্রহ না বাড়লে, আল্লাহর আনুগত্যের প্রতি যত্নবান না হলে, তার হজ কবুল হওয়ার বিষয়টি সন্দেহমুক্ত নয়।’ (আপকে মাসায়েল: ৪/২৫)
কবুল হজের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হালাল টাকায় গুনাহমুক্ত হয়ে হজ করতে হবে। যাতে হজের পরে কাজে–কর্মে, আমলে–আখলাকে, চিন্তাচেতনায় পরিশুদ্ধি অর্জন ও আগের চেয়ে ঈমানি উন্নতি লাভ করা যায়। হজ করা বড় কথা নয়; হজ কবুলের জন্য ইসলামের নির্দেশনা মেনে চলা এবং জীবনব্যাপী হজ ধারণ করাই আসল সার্থকতা। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।

