দোয়া একটি মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। যারা বেশি বেশি দোয়া করেন, আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন। দোয়ার মাধ্যমে মূলত বান্দার এই বিশ্বাস প্রকাশ পায় যে, আল্লাহ তাআলাই দেওয়ার মালিক; অন্য কেউ না। যারা বিনীতভাবে দোয়া করেন, আল্লাহ তাআলা তাদের দোয়া কবুল করেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন- ٱدْعُونِىٓ اَسْتَجِبْ لَكُمْ ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব।’ (সুরা মুমিন: ৬০)
কোরআন-হাদিসে বর্ণিত প্রত্যেকটি দোয়া দামি। কোনো দোয়াই এড়িয়ে যাওয়ার মতো নয়। তাই মাসনুন দোয়া যতবেশি মুখস্থ করা যায় এবং পড়া যায়, ততই ভালো। তবে যেসব দোয়া প্রিয়নবীজি বেশি পড়েছেন, উম্মতকে বেশি বেশি পড়তে বলেছেন এবং যেসব দোয়ার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন সেগুলো বেশি পড়া ভালো। আবার ব্যক্তির চাহিদানুযায়ী কিছু দোয়ার ভিন্ন গুরুত্ব রয়েছে। যেমন কেউ অসুস্থ, তার কাছে সে মুহূর্তে সুস্থতার দোয়া অনেক দামি। আবার কেউ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, তার কাছে তখন ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া দামি। তবে, দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতের কল্যাণে দোয়া করা সবসময় দামি। গুনাহ মাফের দোয়াও সবসময়ের জন্য দামি দোয়া। এখানে সবকিছু পর্যালোচনা করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও দামি দোয়া তুলে ধরা হলো।
বিজ্ঞাপন
সবচেয়ে দামি দোয়া
১. দুনিয়া ও আখেরাতের সবরকম কল্যাণের দোয়া: رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ উচ্চারণ: ‘রব্বানা আতিনা ফিদ্ দুনইয়া হাসানাহ, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাহ, ওয়াকিনা আজাবান্নার।’ অর্থ: হে আমার প্রভু! আমাদের দুনিয়াতে সুখ-কল্যাণ দান করুন, আখেরাতেও সুখ-সমৃদ্ধি দান করুন এবং জাহান্নাম থেকে আমাদের রক্ষা করুন। (সুরা বাকারা: ২০১) হাদিসে এসেছে, এই দোয়াটি নবীজি বেশি পরিমাণে পড়তেন। (সহিহ মুসলিম: ৭০১৬)
প্রায় একই অর্থবোধক আরেকটি দোয়ার ব্যাপারে নবীজি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। সেটি হলো- اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْمُعَافَاةَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল মুআফাতা ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা কামনা করি।’ এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, বান্দা যত রকম দোয়া করে তার মধ্যে এই দোয়ার চেয়ে উত্তম কোনো দোয়া নেই। (ইবনে মাজাহ: ৩৮৫১)
আরও পড়ুন: সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছোট দোয়া
২. তাওবা-ইস্তেগফারের মাসনুন দোয়া: তাওবা-ইস্তেগফারের জন্য অনেক মাসনুন দোয়া রয়েছে। সবগুলোই দামি দোয়া। তন্মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইস্তেগফারটি (সাইয়্যিদুল ইস্তেগফার) এখানে তুলে ধরা হলো- اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلٰهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلٰى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّه“ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা আনতা রব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু। আবু-উ লাকা বিনিমাতিকা আলাইয়া ওয়া আবু-উ লাকা বিজাম্বি ফাগফিরলী ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক, তুমি ছাড়া কোনো প্রভু নাই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার বান্দা। আমি সাধ্যমত তোমার কাছে দেয়া ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতিগুলো পালনে সচেষ্ট আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। আমাকে যে নেয়ামত দান করেছ, তা স্বীকার করছি এবং আমি আমার পাপগুলো স্বীকার করছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কেননা তুমি ছাড়া কেউ ক্ষমাকারী নেই।’ (সহিহ বুখারি: ৬৩০৬)
বিজ্ঞাপন
৩. আল্লাহর গুণগান সম্বলিত বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ দোয়া: হাদিসে একটি মর্যাদাপূর্ণ দোয়ার উল্লেখ রয়েছে। সেটি হলো- لا إلهَ إلاَّ اللَّه وحْدهُ لاَ شَرِيكَ لهُ، لَهُ المُلْكُ، ولَهُ الحمْدُ، وَهُو عَلَى كُلِّ شَيءٍ قَدِيرٌ – سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ للهِ، وَلَا إلَهَ إلّا اللهُ، وَاللهُ أكْبَر – وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إلَّا بِالله উচ্চারণ: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার; ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।’ অর্থ: ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। তাঁর জন্যই সকল রাজত্ব ও তাঁর জন্যই সকল প্রশংসা এবং তিনিই সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। মহা পবিত্র আল্লাহ। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। নেই কোনো ক্ষমতা নেই কোন শক্তি আল্লাহ ব্যতীত’। এটি এমন দোয়া, যা পাঠ করার পর আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে তা কবুল হয়। নবীজি বলেছেন- রাতে ঘুম ভেঙে গেলে কেউ যদি এই দোয়াটি পড়ার পর বলে- ‘রব্বিগফিরলী’, তাহলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয় এবং এরপর নামাজ পড়লে সেই নামাজও কবুল করা হয়। (ইবনে মাজাহ: ৩৮৭৮)
৪. দরুদ সবসময় দামি : মহানবী (স.)-এর দরুদ সবসময় দামি ও মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। দরুদ শুধুই যে নবীজির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যম তা নয়, বরং দরুদের সওয়াব ও ফজিলত আকাশচুম্বী। দুনিয়া ও আখেরাতে সব ধরনের সমস্যা দূর করতে উম্মতের জন্য দরুদ নিয়ামকস্বরূপ। বলা হয়ে থাকে, সকল কল্যাণ দরুদেই নিহিত।
আরও পড়ুন: প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ৪০ দোয়া
হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (স.) আল্লাহর জিকিরের খুব তাকিদ করলেন। আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি আপনার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করে থাকি। আমি আমার দোয়ার কতভাগ আপনার জন্য নির্ধারণ করব? তিনি বললেন, তোমার যে পরিমাণ ইচ্ছা। আমি বললাম, চারভাগের এক ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা, তবে বেশি করলে আরো ভালো। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা, তবে বেশি করলে আরো ভালো। আমি বললাম, তাহলে তিন ভাগের দুই ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা, তবে বেশি করলে আরো ভালো। আমি বললাম, তাহলে কি আমার দোয়ার পুরোটাই হবে আপনার প্রতি দরূদ? তিনি বললেন, তাহলে তো তোমার মকসুদ হাসিল হবে, তোমার গুনাহ মাফ করা হবে।’ (তিরমিজি: ২/৭২) মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১০/২৪৮; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৬/৪৫)
৫. আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় ৪ জিকির: বিভিন্ন হাদিসে ফজিলতপূর্ণ অনেক জিকিরের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি জিকির আল্লাহর বেশি প্রিয়। সেগুলো হলো— ১. سُبْحَانَ الله উচ্চারণ: ‘সুবহানাল্লাহ’ অর্থ: ‘আল্লাহ মহাপবিত্র’। ২. اَلْحَمْدُ للهِ উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহ’ অর্থ: ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর’। ৩. لَا اِلَهَ اِلَّا الله উচ্চারণ: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। অর্থ: ‘আল্লাহ ব্যাতিত কোন ইলাহ নাই’। ৪. اَللهُ اَكْبَر উচ্চারণ: ‘আল্লাহু আকবর’। অর্থ: ‘আল্লাহ মহান’।
জিকিরগুলো একসঙ্গে মিলিয়ে পড়া যায়। আবার যেকোনো একটা দিয়ে শুরু করা যায়। হজরত সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় কালাম চারটি। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও আল্লাহু আকবার। এগুলোর যেকোনোটি দিয়ে তুমি শুরু করো, তাতে কোনো ক্ষতি নেই।’ (মুসলিম: ৫৪১৬)
আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও দামি দোয়া
১. হজরত আদম (আ.)-কে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা যে দোয়া শিখিয়ে দিয়েছিলেন। দোয়াটি হলো- رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا وَ اِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَ تَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ উচ্চারণ: ‘রব্বানা জলামনা আনফুসানা ওয়াইল্লাম তাগফিরলানা ওয়াতারাহামনা লানাকুনান্না মিনাল খ-সিরিন।’ অর্থ: ‘হে আমাদের রব, আমরা নিজদের উপর জুলুম করেছি। আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদেরকে দয়া না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব।’ (সুরা আরাফ: ২৩)
২. মা-বাবার জন্য কোরআনে বর্ণিত এই দোয়া- رَبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا উচ্চারণ: ‘রাব্বির হামহুমা, কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।’ অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, তাদের উভয়ের প্রতি রহম করো; যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৪)
আরও পড়ুন: যে ৭ দোয়া জীবন বদলে দেবে
৩. আয়াতুল কুরসি : আয়াতুল কুরসি জান্নাত লাভের অনন্য মাধ্যম। একইসঙ্গে শয়তান থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনও অন্তরায় থাকবে না।’ (শুআবুল ঈমান: ২৩৯৫; নাসায়ি: ৯৪৪৮, তাবারানি: ৭৮৩২)
আরেক হাদিসে নবীজি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করবে সে এর মাধ্যমে সন্ধ্যা পর্যন্ত (আল্লাহর) হেফাজতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তা তেলাওয়াত করবে সে এর মাধ্যমে সকাল পর্যন্ত (আল্লাহর) হেফাজতে থাকবে। (তিরমিজি: ২৮৭৯)। কেউ রাতে নিদ্রায় যাওয়ার সময় পড়লে শয়তান তার নিকটবর্তী হবে না। (বুখারি: ২৩১১)
৪. সকল মুসলমানের জন্য দোয়া: رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ يَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡحِسَابُ উচ্চারণ: ‘রাব্বানাগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়ালিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়াক্বুমুল হিসাব।’ অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! রোজ কেয়ামতে আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
৫. ঋণ, দুঃশ্চিন্তা ও অপারগতা থেকে মুক্তির দোয়া: اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-‘আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন দ্বালা‘য়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজা-ল। অনুবাদ: ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুঃশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে। (বুখারি: ২৮৯৩)
৬. সুস্থ থাকার দোয়া : اَللَّهُمَّ عَافِنِىْ فِىْ بَدَنِى - اَللَّهُمَّ عَافِنِىْ فِىْ سَمْعِىْ - اَللَّهُمَّ عَافِنىِ فِىْ بَصَرِىْ – لَا اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি বাদানি, আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি সাময়ি, আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি বাসারি, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা। অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমার দেহ সুস্থ রাখুন। হে আল্লাহ, আমাকে সুস্থ রাখুন আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে। হে আল্লাহ, আমাকে সুস্থ রাখুন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই।’ (আবু দাউদ: ৫০৯০)
যেভাবে দোয়া করলে বেশি কবুল হয়
দোয়া কবুলের জন্য নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেন-
১. দোয়ার শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা ও শেষে রাসুলুল্লাহ (স.)- এর প্রতি দরুদ পাঠ করা।
২. নিজের ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।
৩. আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজনগুলো বিনীত ও আন্তরিকভাবে তুলে ধরা।
৪. দোয়া কবুল হওয়ার আশা করা
দোয়া কখনও বিফলে যায় না
দোয়া বিফলে যায় না—এই বিশ্বাস রেখে ইখলাসের সঙ্গে দোয়া করে যাওয়া উচিত। আবু সাঈদ আল-খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, কোনো মুসলিম পাপাচার বা আত্মীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার দোয়া ছাড়া যেকোনো দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তিনটি জিনিসের যেকোনো একটি দান করেন—১. হয় দ্রুত তার দোয়া কবুল করেন অথবা ২. তা পরকালের জন্য সঞ্চিত রাখেন অথবা ৩. কোনো ক্ষতি (বিপদাপদ, সমস্যা ইত্যাদি) অপসারণ করেন।’ (আল আদাবুল মুফরাদ: ৭১০, মুসনাদে আহমদ: ১১১৩৩)
আল্লাহ তাআলা আমাদের উল্লেখিত দোয়াগুলো নিয়মিত পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

