সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

রমজানে দুয়েক দিন ইতেকাফ করা যাবে?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

ইতেকাফ বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। হৃদয়ের প্রশান্তি, আত্মার পবিত্রতা, চিন্তার বিশুদ্ধতা ও চিত্তের নিষ্কলুষতার অনন্য মাধ্যম। ফেরেশতাকুলের গুণাবলী অর্জন এবং লাইলাতুল কদরের কল্যাণ লাভসহ সব ধরনের ইবাদতের সুযোগ লাভের সর্বোত্তম উপায় এই ইতেকাফ। এজন্য রাসুল (স.) নিজে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইতেকাফ পালন করেছেন এবং তাঁর বিবিরাসহ সাহাবায়ে কেরামের অনেকেই এই সুন্নতের ওপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমল করেছেন।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা: ২/৪২)

২০ রমজান ইফতারের আগে থেকে শুরু করে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করা হলো মাসনুন ইতেকাফ। হাদিসে এসেছে- ‘রাসুলুল্লাহ (স.) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রত্যেক রমজানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করতেন। এরপর তাঁর পবিত্র স্ত্রীগণ ইতেকাফ করতেন’। (বুখারি: ১/২৭১)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ইতেকাফের গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা

এই সুন্নত ইতেকাফ করলে ১০ দিনই করতে হবে। কেউ চাইলে দুই তিন দিনও ইতেকাফ করতে পারেন। তবে তা সুন্নত ইতেকাফ হবে না। বরং তা হবে নফল ইতেকাফ। এই নফল ইতেকাফ সুন্নত ইতেকাফের সমমর্যাদার না হলেও ফজিলতহীন নয়।

যদি রমজানের শুধু শেষ তিনদিন ইতেকাফ করেন, তাহলে নফল ইতেকাফের সওয়াব পাবেন এবং তাতে রমজানের শেষ দশকের দুইটি বেজোড় রাতও পেয়ে যাবেন। যে রাতগুলোতে লাইলাতুল কদরের সম্ভাবনা বেশি। হাদিসে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদরের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রমজানে শবে কদরের সম্ভাবনা নিয়ে অনেক হাদিস রয়েছে। 

এর মধ্যে আবার ২৭তম রাতটিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন অনেক আলেম। আলেমদের বড় একটি জামাত বলেছেন, শবে কদর রমজানের ২৭তম রাতে। এই মত দিয়েছেন উবাই ইবনু কাব (রা.), ইবনু আব্বাস (রা.), উমর (রা.), ইমাম আবু হানিফা (রহ)-সহ অনেকেই। এই মতের পক্ষে দলিল হলো, সাহাবি উবাই ইবনু কাব (রা.) কসম খেয়ে বলতেন, ২৭তম রাতটি লাইলাতুল কদর। (মুসলিম: ২৬৬৮)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ‘ইতেকাফ’ জাহান্নাম থেকে মুক্তির অনন্য আমল 

আবার ২৯তম রাতটিও সম্ভাবনার বাইরে নয়। এক কথায়, ঈমানদারদের উচিত, রমজানের শেষ দশকের প্রতিটি রাতেই লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করা। (মাজমুউ ফতোয়া: ২৫/২৮৪-২৮৫)

তাই রমজানের শেষ দশকে যারা অন্তত ৩/৪ দিন নফল ইতেকাফ করতে চান, তারা লাইলাতুল কদর পাবার সম্ভাবনার পাশাপাশি অনেক সওয়াবও পাবেন।

এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স,) বলেছেন- هُوَ يَعْكِفُ الذُّنُوبَ ، وَيُجْرَى لَهُ مِنْ الْحَسَنَاتِ كَعَامِلِ الْحَسَنَاتِ كُلِّهَا ‘ইতেকাফকারী গুনাহকে প্রতিরোধ করেন। ইতেকাফকারীকে সকল নেক আমলকারীর ন্যায় নেকি দেওয়া হবে।’ (ইবন মাজাহ: ১৭৮১)

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- مَنِ اعْتَكَفَ يَوْمًا ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللَّهِ جَعَلَ اللَّهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّارِ ثَلاثَ خَنَادِقَ ، كُلُّ خَنْدَقٍ أَبَعْدُ مِمَّا بَيْنَ الْخافِقَيْنِ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একদিন ইতেকাফ করে আল্লাহ তার ও জাহান্নামের আগুনের মাঝে তিনটি পরিখার দূরত্ব সৃষ্টি করে দেন; যা পূর্ব-পশ্চিমের চেয়েও বেশি দূরত্ব। (তাবারানি: ৭৪২০; হাকিম: ৪/২৬৯; বায়হাকি: ৩/৪২৪)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন