ঈদ উপলক্ষে নতুন টাকার ব্যবসা চলে আমাদের দেশে। হাজার টাকার নতুন নোট বিক্রি হয় ৫০ টাকা লাভে। কোথাওবা ১০০ টাকা লাভে ১১০০ টাকায় বিক্রি হয় এক হাজার টাকার ভাংতি নোট। দরকষাকষির মাধ্যমে যতবেশি সম্ভব আদায় করে থাকেন নতুন নোট ব্যবসায়ীরা। এভাবে পণ্যের মতো কমবেশি করে টাকা বিচাকেনার অনুমোদন কি ইসলামে আছে?
এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, কাগজের নোট যেহেতু পণ্য নয়, ইসলামে এই ব্যবসার অনুমোদন নেই। এখানে অতিরিক্ত অংশটি বা লভ্যাংশটি সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (আদদুররুল মুখতার: ৫/১৭১-১৭২; বুহুসুন ফি কাজায়া ফিকহিয়্যা: ১/১৬৩)
বিজ্ঞাপন
এক দেশের কারেন্সি আরেক দেশের কারেন্সির বিনিময়ে কম-বেশি করে বিক্রি করা জায়েজ আছে। তবে সেক্ষেত্রেও বৈঠকেই কমপক্ষে একপক্ষকে টাকাটি হস্তগত করে নিতে হবে। যদি একজনও তাদের বিনিময়কৃত কারেন্সি হস্তগত না করে, তাহলে ক্রয়-বিক্রয়টি জায়েজ হবে না। (জাদিদ ফিকহি মাসায়িল: ৪/২৮; জাদিদ মুআমালাত কে শরয়ি আহকাম: ১-১৩৯)
আরও পড়ুন: ঈদ শপিংয়ে অসতর্কতা, তিনটি কবিরা গুনাহ
একই দেশের মুদ্রা কম-বেশি করে বিক্রি করলে ওই ক্রয়-বিক্রয় জায়েজ হবে না। (হিদায়া, কিতাবুল বুয়ু, বাবুর রিবা: ০৩/৮৫; মুসতাদরাক আলাস সাহিহাইন: ০২/৬৫-৬৬; শারহু মাআনিল আসার: ৫৫৫৪; সুনান দারু কুতনি: ৩০৬০)
তবে, ছেঁড়া-ফাটা টাকা দিয়ে ভালো টাকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অপারগ অবস্থায় (যেমন ব্যাংক বন্ধ, টাকাও দরকার ইত্যাদি) বদলকারীর পরিশ্রম ও ডাক খরচ বাবদ কিছু টাকা বেশি নেওয়া যেতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে, ছলনার আশ্রয় ছাড়া স্পষ্টভাবে ‘বাবত’ উল্লেখ থাকতে হবে।
বিজ্ঞাপন
সাধারণত ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ছেঁড়া-ফাটা টাকার বিনিময় সেবাটি দিয়ে থাকে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোতে বিনামূল্যেই সেবাটি পাওয়া যায়। তাই রীতিমতো চেয়ার-টেবিল বসিয়ে এমন ব্যবসার যৌক্তিকতা নেই। তাছাড়া এটি কঠিন গুনাহের কাজ। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুদি লেনদেন থেকে হেফাজত করুন। আমিন
তথ্যসূত্র: বুখারি: ২/৭৫০, মুসলিম: ৫/৪২, হিদায়া: ৩/১০৪ ও ৬১৮, আহসানুল ফতোয়া: ৭/২২, ২৩ ও ৫৪; ইফতা বিভাগ: পটিয়া জামেয়া