বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

তারাবি নামাজ একা পড়া যাবে কি

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

তারাবি নামাজ একা পড়া যাবে কি

পবিত্র রমজান ইবাদত বন্দেগির মাস। আল্লাহর রহমত লাভের জন্য, মাগফেরাত ও নাজাতের জন্য তারাবি একটি উপযুক্ত ও মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (বুখারি: ২০৪৭) 

তারাবি নামাজ মুসলিম নর-নারীর ওপর আলাদাভাবে সুন্নতে মুয়াক্কাদা। পুরুষদের জন্য মসজিদে জামাতের সঙ্গে তারাবি আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া। অর্থাৎ একদল পড়ে নিলে অন্যরা জামাতের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হবে। কিন্তু জামাতের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে। শরিয়ত অনুমোদিত কোনো কারণে যদি পুরুষ মসজিদে যেতে না পারে, তাহলে ঘরের মাহরাম নারীদের সঙ্গে নিয়ে জামাতে নামাজ পড়া তার জন্য বৈধ। এক্ষেত্রে সবাই জামাতের সওয়াব পাবে।


বিজ্ঞাপন


কিন্তু গায়রে মাহরাম নারীদের নিয়ে ঘরে জামাতে নামাজ আদায় সমীচীন নয়। তবুও গায়রে মাহরাম নারীরা যদি ঘরে নামাজের জামাতে শরিক হতে চায়, অবশ্যই তারা পর্দার আড়ালে থেকে জামাতে অংশগ্রহণ করবে। পর্দার বিধান লঙ্ঘন করে জামাত করা বৈধ নয়। (খুলাসাতুল ফতোয়া: ১/২২৮; আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ২/২২৭)

নারীদের জন্যও ২০ রাকাত তারাবি পড়া সুন্নত, আর তাদের একাকী ঘরে তারাবি পড়াই উত্তম। কেননা বহু হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) নারীদেরকে একাকী ঘরের ভেতর নামাজ আদায়কে উত্তম বলেছেন এবং উৎসাহিত করেছেন। (সুনানে আবুদাউদ: ৫৭০; মুসনাদে আহমদ: ২৬৫৭০)

আরও পড়ুন: দ্রুত তারাবি পড়লে যে ক্ষতি

ঘরে জামাতে তারাবি পড়তে গেলে দাঁড়ানোর পদ্ধতি হলো— এক বা একাধিক নারী পেছনের সারিতে দাঁড়াবে। (রদ্দুল মুহতার: ১/৫৬৬; আহসানুল ফতোয়া: ৩/২৯৯) কিন্তু একাকী বা ভিন্ন ভিন্ন নামাজ পড়লে নারী-পুরুষ একে অপরের সামনে-পেছনে থাকলে নামাজের শুদ্ধতায় কোনো প্রভাব পড়বে না। (মাবসুতে সারাখসি : ১/১৮৫)


বিজ্ঞাপন


স্বামী-স্ত্রী উভয়ে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবে। এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর পাশাপাশি না দাঁড়িয়ে পেছনে দাঁড়াবে। এতটুকু সম্ভব না হলে, ডান পাশে একটু পেছনে সরে দাঁড়ালেও নামাজ হয়ে যাবে। তবে স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে সমান হয়ে দাঁড়াতে পারবে না, এভাবে দাঁড়ালে উভয়ের নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার: ১/৫৭২)

আরও পড়ুন: জামাতে বিতির পড়ার পর তারাবি পড়া যাবে?

নাবালেগ ও নারীদের কাতারবদ্ধ হওয়ার সুন্নত পদ্ধতি হলো- প্রথমে বালেগ পুরুষ দাঁড়াবে, এরপর নাবালেগ বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক দাঁড়াবে। যদি নারীরা জামাতে অংশগ্রহণ করে তারা সবার পেছনে দাঁড়াবে। (বায়হাকি: ৫১৬৬; হেদায়া: ১/২৩৯)

শুধু নারীদের জামাত বৈধ নয়। ঘরে বা অন্য কোথাও নারীরা একত্রিত হয়ে কোনো নারীকে ইমাম বানিয়ে নামাজের জামাত করা মাকরূহে তাহরিমি তথা নাজায়েজ। যদিও জামাতে আদায়কৃত ওই নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে, তবে তারা সবাই গুনাহগার হবে। তারপরও যদি নারীরা আলাদা জামাত করে, তাহলে যিনি ইমাম হবেন, তিনি কাতারে সবার সামনে দাঁড়াবেন না; বরং প্রথম কাতারের মাঝখানে দাঁড়াবেন। (তাবয়িনুল হাকায়েক: ১/১৩৫, ফতোয়ায়ে দারুল উলুম: ৩/৪৩)

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘কোনো নারী জামাতের ইমামতি করতে পারবে না।’ অনুরূপ তাবেয়ি ইবরাহিম নাখয়ি, ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ, রবিআ ও ইবনে শিহাব জুহরি (রহ.) প্রমুখ থেকে তা বর্ণিত হয়েছে। (আলমুদাওয়ানাতুল কোবরা: ১/১৭৮) প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ ও ফিকাবিদ শিব্বির আহমদ উসমানি (রহ.) বলেন, হাদিসটির সূত্র বিশুদ্ধ। (ইলাউস সুনান: ৩/১৩০১)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর