রোববার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

নবীজি সাহরিতে কী খেতেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

নবীজি সেহেরিতে কী খেতেন

সাহরি খাওয়া সুন্নত। রোজা রাখার উদ্দেশ্যে শেষরাতে ঊষা উদয়ের আগে যে পানাহার করা হয়, তা-ই সাহরি। আল্লাহর রাসুল (স.) সাহরি খাওয়ার জন্য উম্মতকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বলেছেন, ‘তোমরা সাহরি খাও। কেননা, সাহরিতে বরকত রয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম: ১/৩৫০)

নবীজি আরও বলেছেন, ‘আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া।’ (মুসলিম: ১০৯৬; আবু দাউদ: ২৩৪৩)


বিজ্ঞাপন


প্রিয়নবীজির সাহরিতে বিশেষ কোনো আয়োজন ছিল না। সাধারণ খাবারই গ্রহণ করতেন তিনি। আরবের সাধারণ খাবার ছিল খেজুর। সেই খেজুর ও পানি দিয়েই সাহরি সম্পন্ন করতেন নবীজি। আর নবীজির অনুসরণে সেটিই উম্মতের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট সাহরি। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (স.) বলেন, ‘খেজুর কতই না উত্তম সাহরি!’ (আবু দাউদ: ২৩৪৫) 

আরও পড়ুন: সেহেরি না খেলে রোজা হবে?

খেজুর আমাদের দেশে বেশ পরিচিত ও সুস্বাদু একটি ফল। প্রচুর ভিটামিন এবং মিনারেলস যেমন কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি উপাদানসমৃদ্ধ এই খেজুর শরীরের জন্য অনেক উপকারী। চিকিৎসকরা বলেন, শুধু রমজান মাস নয়, সারাবছরই খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখা যেতে পারে।

রাসুলুল্লাহ (স.) সাহরির সঙ্গে সারিদের উল্লেখ করেছেন অন্য হাদিসে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- السحور بركة والثريد بركة والجماعة بركة ‘সাহরি বরকতময়, সারিদ (গোশতের ঝোলে ভেজানো রুটি) বরকতময়, জামাতে নামাজ আদায় করা বরকতময়।’ (কানজুল উম্মাল: ২৩৯৭৭)


বিজ্ঞাপন


সাহরি পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয়, এক ঢোক পানি পান করলেও সাহরির সুন্নত আদায় হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সাহরি করো। কারণ যারা সাহরি খায়, আল্লাহ তাআলা তাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।’ (মুসনাদে আহমদ: ৩/১২; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৯০১০; সহিহ ইবনে হিববান: ৩৪৭৬)

আরও পড়ুন: ইফতার ও সেহেরির সময়সূচি ২০২৫

উদরপূর্তি করে সাহরি খেলে ইবাদতে আলস্য আসতে পারে এবং পেট খারাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই উম্মতের জন্য খেজুর না থাকলে সাধারণ খাবার পরিমাণমতো খাওয়া ভালো। আবার সাহরি  না খাওয়াও ঠিক নয়। এতে ক্ষুধা লাগবে এবং সাহরির বরকত থেকে বঞ্চিত হতে হবে।  

সুবহে সাদিকের আগে রাতের শেষ ভাগে সাহরি খাওয়া উত্তম। বিখ্যাত সাহাবি জায়েদ বিন সাবিত (রা.)  বলেন, আমরা আল্লাহর রাসুল (স.)-এর সঙ্গে সাহরি খাই, এরপর তিনি সালাতের জন্য দাঁড়ান। বর্ণনাকারী বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, ফজরের আজান ও সাহরির মাঝে কতটুকু ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, পঞ্চাশ আয়াত (পাঠ করা) পরিমাণ। (বুখারি: ১৯২১)

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সকল নবীকে সময় হওয়ার পরপরই (তাড়াতাড়ি) ইফতার করতে এবং শেষ সময়ে সাহরি খেতে আদেশ করা হয়েছে।’ (আলমুজামুল আওসাত: ২/৫২৬; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ৩/৩৬৮) তবে খেয়াল রাখতে হবে, বিলম্ব করতে গিয়ে যেন সাহরির সময় পার না হয়ে যায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র রমজানের প্রত্যেকটি বিষয়ে যথাযথ সুন্নাহ অনুসরণের তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর