বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

মানুষ খারাপ হয়ে গেছে, সমাজ ধ্বংস হয়ে গেছে—এমন কথা বললে নিজের যে ক্ষতি

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম

শেয়ার করুন:

মানুষ খারাপ হয়ে গেছে, সমাজ ধ্বংস হয়ে গেছে—এমন কথা বললে নিজের যে ক্ষতি

আমরা প্রায়সময় এরকম কথা শুনি যে, ‘মানুষ বরবাদ হয়ে গেছে, সমাজ ধ্বংস হয়ে গেছে।’ হাদিসে এ ধরনের কথা থেকে উম্মতকে সতর্ক করা হয়েছে। বর্ণনানুযায়ী, এ ধরনের কথা বলার মাধ্যমে নিজে ধ্বংস হয়ে যাওয়াই প্রমাণ করে। তাই এমন কথা বলা থেকে সাবধান হওয়া কর্তব্য। 

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন-  إِذَا سَمِعْتَ الرَّجُلَ يَقُولُ هَلَكَ النَّاسُ فَهُوَ أَهْلَكُهُمْ ‘যদি তুমি কাউকে এই কথা বলতে শুনতে পাও যে, মানুষ ধ্বংস হয়ে গেছে, তাহলে সে সবচাইতে অধিক ধ্বংস হয়েছে।’ (মুয়াত্তা মালিক: ১৭৮৬; সহিহ মুসলিম: ৬৪৪৪ ইফা)


বিজ্ঞাপন


অতএব, আবেগতাড়িত হয়ে অসাবধানতাবশত মানুষ ও সমাজ নিয়ে খারাপ কথা বলা যাবে না। এ ধরনের কথার মাধ্যমে মূলত অহংকার প্রকাশ পায়। নিজে ভালো বাকিরা খারাপ—এই ধারণা থেকেই এমন কথা উচ্চারিত হয়। যা নিজেরই নিকৃষ্টতার প্রমাণ। 

আরও পড়ুন: ৫ আদব না মানলে আপনার মোনাজাত অর্থহীন

তাই মানুষকে খারাপ কাজ করতে দেখলেও খারাপ হিসেবে আখ্যায়িত না করে তাকে ক্ষমা করা ও অসৎ কাজ থেকে সতর্ক করাই ইসলামের শিক্ষা। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘যারা গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কার্য থেকে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধাবিষ্ট হয়ে ক্ষমা করে দেয় (তাদের পুরষ্কার আল্লাহর কাছে)।’ (সুরা আশ শূরা: ৩৭) 

জেনে বা না-জেনে গুনাহে লিপ্ত হওয়া মানুষের স্বভাব। এই স্বভাব আগেকার মানুষের মধ্যেও ছিল। এই যুগে এসে মানুষের স্বভাবে তা যুক্ত হয়েছে—এমন নয়। কথায় আছে, খারাপ লোকদের অন্যায়ের কারণে সমাজ ধ্বংস হয় না, বরং ভালো লোকদের অন্যায়ের প্রতিবাদ না করার কারণেই সমাজ ধ্বংস হয়ে যায়। আল্লাহ বহু জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন এ কারণেই। তাই আমার আপনার দায়িত্ব হলো- কারো মধ্যে খারাপ কিছু দেখলে সতর্ক করা এবং ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করা। 


বিজ্ঞাপন


রাসুলুল্লাহ (স.) —উম্মতকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করতেন এবং গুনাহের জন্য ইস্তেগফার করার শিক্ষা দিতেন। এবার আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়াত করবেন। কারো নসিবে হেদায়াত না থাকলে তাকে জোর করে দ্বীনের পথে আনা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সেজন্য তাদেরকে খারাপ বলে চিল্লাচিল্লি করাও আমাদের দায়িত্ব নয়। 

আরও পড়ুন: দাওয়াতি কাজ না করার পরিণতি

সমাজে ভালো-খারাপ, ধনী-দরিদ্র সবাই থাকে। এটি আল্লাহ তাআলারই বিশেষ হেকমত। খারাপ না থাকলে আপনি কাকে দ্বীনের পথে আহ্বান করবেন। দরিদ্র না থাকলে ধনীদের সম্পদশালী হওয়া দূরের কথা, সুন্দরভাবে বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে যেত। তাই ভারসাম্যপূর্ণ শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণে বেহুদা কথার চেয়ে সৎকাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ এবং ক্ষমা গুরুত্ব অনেক বেশি। আর মানুষ নিয়ে খারাপ কথা বলার পরিবর্তে নিজে সৎপথে থাকা এবং মানুষকে সৎপথে আহ্বান করাই মূল দায়িত্ব। এতে সবাই উকৃত হবে। আর মানুষ নিয়ে আজেবাজে কথা বললে হাদিস অনুযায়ী নিজেরই ক্ষতি হবে। 

আল্লাহ তাআলা আমাদের বুঝার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা মেনে জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর