শরিয়তের পরিভাষায় মান্নত বা মানত হলো কোনো মুকাল্লাফ (শরিয়তের বিধান প্রযোজ্য) ব্যক্তির নিজের ওপর এমন কোনো কাজ আবশ্যক করা, যা শরিয়ত প্রণেতা আবশ্যক করেননি। (আল-ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবায়া: ২/৭৭৯)
ইসলামি শরিয়তে মানত বৈধ হলেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা তা মানুষের কোনো কল্যাণ করতে পারে না। এর মাধ্যমে কেবল কৃপণ ব্যক্তি থেকে সম্পদ বের করা হয়। (সুনানে নাসায়ি: ৩৮০১)
বিজ্ঞাপন
মানত করলে তা পূরণ করা আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং তাওয়াফ করে প্রাচীন ঘরের’ (সুরা হজ: ২৯)। অন্য আয়াতে মুমিনের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে এভাবে—‘তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনের ভয় করে, যেদিনের বিপত্তি হবে ব্যাপক।’ (সুরা দাহর: ৭)
আরও পড়ুন: উদ্দেশ্য পূরণ না হলে মানতের বিধান কেমন?
অনেকেই বিভিন্ন কারণে মানত করে থাকেন। যেমন- অমুক কাজ হলে আল্লাহর রাস্তায় এত টাকা দান করব অথবা সন্তান সুস্থ হলে গরু জবাই করে খাওয়াব ইত্যাদি। ইসলামে মানতকৃত সম্পদের হকদার তারাই, যারা জাকাত ও ওয়াজিব সদকা গ্রহণের উপযুক্ত। মানতকারীর ঊর্ধ্বতন ও অধস্থন (যেমন ছেলে, নাতি, পিতা-মাতা প্রমূখ) লোকদের জন্য ও নেসাব পরিমাণ সম্পদ যাদের আছে তাদের জন্য মানতের খাবার খাওয়া জায়েজ নেই।
বিখ্যাত ফতোয়ার গ্রন্থগুলোতে বলা হয়েছে, নিজের সন্তানাদি বা মাতা-পিতা কিংবা ধনী মেহমানরা মানতের গোশত বা সম্পদ গ্রহণ করলে এর মূল্য গরিবদের সদকা করে দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
(মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১৩৩৬৬; ফতোয়ায়ে খানিয়া: ৩/৩৫৪; খুলাসাতুল ফতোয়া: ৪/৩২০; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/২৯৫; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩২৭)

