রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নবীজির প্রতি মুমিনের ভালোবাসা

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

নবীজির প্রতি মুমিনের ভালোবাসা

প্রিয়নবীজির প্রতি ভালবাসা মুমিনের ঈমান। আমরা ছিলাম দিকভ্রান্ত দিশাহারা। নবীজি হেদায়াতের বার্তা নিয়ে এসে আমাদের পথের সন্ধান দিলেন। সত্য-মিথ্যা চেনালেন। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পন্থা শেখালেন। আল্লাহ তাআলার অনেক বড় মেহেরবানী যে, তিনি আমাদের মাঝে প্রিয়নবীজিকে পাঠালেন এবং আমরা হলাম তাঁর উম্মত।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আল্লাহ মুমিনদের প্রতি বড় অনুগ্রহ করেছেন; তিনি তাদেরই মধ্য হতে তাদের নিকট রাসুল প্রেরণ করেছেন। যিনি তাদের সামনে আল্লাহর আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমাহ শিক্ষা দেন, যদিও তারা এর আগে সুস্পষ্ট গোমরাহিতে লিপ্ত ছিল। (সুরা আলে ইমরান: ১৬৪)


বিজ্ঞাপন


তিনি এমন এক উৎকৃষ্ট সমাজ ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাতা, যার নজির পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। তিনি মানবতার মুক্তির দূত। তিনি এসেছেন রহমত হয়ে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(হে নবী!) আমি আপনাকে বিশ্ব জগতের জন্য কেবল রহমত করেই পাঠিয়েছি।’ (সুরা আম্বিয়া: ১০৭)

আরও পড়ুন: জান্নাতে প্রিয়নবীজির সান্নিধ্য লাভের আমল

প্রিয়নবী (স.) ছিলেন দয়া-মমতার সাগর। উম্মতের প্রতি ছিল তাঁর গভীর মায়া, সীমাহীন মমতা এবং তাদের কল্যাণ সাধনে ছিলেন সদা ব্যাকুল, ব্যস্ত। তাদেরকে তিনি নিঃস্বার্থ ভালোবাসতেন। কোনো প্রতিদান চাইতেন বা কৃতজ্ঞতা কামনা করতেন না। চাইতেন শুধু তাদের নাজাত ও সফলতা।

মুমিনদের ওপর নবীজির হক আছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নবীর ওপর মুমিনদের জানের চেয়ে বেশি হক আছে। (সুরা আহজাব: ৬) মুমিন ব্যক্তিকে অবশ্যই তাঁর হকের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি নিজের জান-মাল ও প্রবৃত্তির চেয়ে তাঁর প্রতি ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিতে না পারবে, বুঝতে হবে তার ঈমানে ঘাটতি আছে।


বিজ্ঞাপন


একবার ওমর ফারুক (রা.) রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আপনি আমার কাছে সবকিছুর চেয়ে বেশি প্রিয়, কেবল আমার জান ছাড়া।’ তখন নবী (স.) বললেন, না, যাঁর হাতে আমার প্রাণ ওই সত্তার কসম! তোমার কাছে আমি যেন তোমার প্রাণের চেয়েও প্রিয় হই। তখন ওমর (রা.) তাঁকে বললেন, আল্লাহর কসম! এখন আপনি আমার কাছে আমার প্রাণের চেয়েও বেশি প্রিয়। নবী (স.) বললেনঃ হে ওমর! এখন (তুমি সত্যিকার ঈমানদার হলে)।’ (সহিহ বুখারি: ৬৬৩২)

আরও পড়ুন: নবীজির আদর্শ হোক জীবনের পাথেয়

একদিন এক সাহাবি রাসুল (স.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করেন— ‘কেয়ামত কবে হবে?’ রাসুল (স.) জানতে চাইলেন ‘তুমি এর জন্য কী কী প্রস্তুতি নিয়েছ?’, সাহাবি বললেন, ‘আমি অধিক পরিমাণে নামাজ রোজা জাকাত সদকা আদায় করে কোনো প্রস্তুতি তো নিতে পারিনি, কিন্তু আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আমার ভালোবাসা আছে।’ রাসুল (স.) তখন বললেন, ‘তুমি তার সাথেই থাকবে যাকে তুমি ভালোবাসো।’ (সহিহ বুখারি: ৬১৭১)

সুবহানাল্লাহ! নবীজিকে ভালোবাসতে হবে সাহাবিদের মতো করে। মা-বাবা, সন্তান-সন্ততি এমনকি নিজের জীবনের চেয়েও বেশি। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে নবীজিকে পৃথিবীর সবকিছুর চেয়ে এবং নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর