পবিত্র কোরআনের প্রতিটি সুরাই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি সুরারই আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে। এর মধ্যে কিছু সুরা ও আয়াতের বিশেষ ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছেন নবীজি (স.)। এখানে এমন দুটি সুরা তুলে ধরছি, যার একটি আপনার দুনিয়াবি জীবনে অভাব কাছে আসতে দেবে না, অপরটি আখেরাতের মহাবিপদে আপনার মুক্তির জন্য ওকালতি করবে। সুরা দুটি হলো- ১. সুরা ওয়াকিয়া ও ২ সুরা মুলক। যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, তার কাছে অভাব ঘেঁষতে পারবে না বলে নবীজির হাদিস রয়েছে। আর যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মুলক পাঠ করবে, তার মুক্তির জন্য সুরাটি আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে।
অভাব আসতে দেবে না সুরা ওয়াকিয়া
সুরা ওয়াকিয়া পবিত্র কোরআনের ৫৬তম সুরা। আয়াতসংখ্যা ৯৬। মক্কায় অবতীর্ণ সুরাটির রুকু আছে তিনটি। প্রতিদিন মাগরিবের নামাজশেষে সুরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রতিরাতে সুরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করবে তার ওপর অভাব আসবে না। (বায়হাকি: ২৪৯৭, তাফসিরে রুহুল মাআনি: ২/১২৮)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: রোগমুক্তিতে কার্যকর কোরআনের ৬ আয়াত
সুরা ওয়াকিয়া পাঠের বিশেষ একটি শিক্ষা পাওয়া যায় আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর সঙ্গে আমিরুল মুমিনিনের বিশেষ কথোপকথন থেকে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যখন অন্তিম শয্যায় শায়িত ছিলেন তখন ওসমান (রা.) তাঁকে দেখতে গিয়ে বলেন, আপনার অসুখটা কী? ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমার পাপ আমার অসুখ। ওসমান (রা.) বলেন, আপনার বাসনা কী? তিনি বলেন, আমার পালনকর্তার রহমত কামনা করি। তিনি বলেন, আমি সরকারি বায়তুল মাল থেকে কোনো উপঢৌকনের ব্যবস্থা করে দেব, যা আপনার এবং আপনার কন্যাদের উপকারে আসবে? ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, এর কোনো প্রয়োজন নেই। আমি আমার কন্যাদের সুরা ওয়াকিয়া শিক্ষা দিয়েছি। আমি রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করে, অভাব তাকে কখনো স্পর্শ করবে না। (তাফসিরে জালালাইন আরবি-বাংলা: ৬/৩৫৩)
পরকালে সুপারিশ করবে সুরা মুলক
সুরা মুলক পবিত্র কোরআন শরিফের ৬৭তম সুরা। আয়াত সংখ্যা ৩০। মক্কায় অবতীর্ণ সুরাটির রুকু আছে দুইটি। যে ব্যক্তি প্রতিরাতে সুরা মুলক পাঠ করবে, সুরা মুলক তার জন্য কেয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। তাকে কবরের আজাব থেকে হেফাজত করবে। এই ফজিলত সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘পবিত্র কোরআনে ত্রিশ আয়াতবিশিষ্ট একটি সুরা আছে, যেটি কারো পক্ষে সুপারিশ করলে— তাকে মাফ করে দেওয়া হয়। এ সুরাটি হলো- তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৪০০; সুনানে তিরমিজি: ২৮৯১)
বিজ্ঞাপন
অন্য হাদিসে এসেছে, ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি প্রতি রাতে তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক পড়বে, আল্লাহ তাআলা তাকে এই সুরার মাধ্যমে কবরের আজাব থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন।’ (আমালুল ইয়াউমি ওয়াল লাইলাতি, নাসায়ি: ৭১১; সহিহুত তারগিব: ২/২৫৩: ১৫৮৯)

