রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নেককার স্ত্রীকে ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ’ কেন বলেছেন নবীজি

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

নেককার স্ত্রীকে ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ’ কেন বলেছেন নবীজি

নেককার স্ত্রী বলতে সতী-সাধ্বী ও দ্বীনদার স্ত্রীকে বোঝায়। স্ত্রী যদি সতী ও দ্বীনদার হয়, তাহলে হাদিস অনুযায়ী, তার চেয়ে উত্তম কোনো সম্পদ পৃথিবীতে নেই। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, পার্থিব জগতটাই হলো ক্ষণিক উপভোগের বস্ত্ত। আর পার্থিব জগতের সর্বোত্তম সম্পদ (উপভোগের বস্ত্ত) সাধ্বী নারী।’ (সহিহ মুসলিম: ১৪৬৭; মুসনাদে আহমদ: ৬৫৬৭; সহিহ ইবনে হিববান: ৪০৩১)

নেককার স্ত্রী শ্রেষ্ঠ সম্পদ—কথাটি ছোট হলেও তাৎপর্য ব্যাপক। একজন নেককার স্ত্রী স্বামীর দ্বীন-দুনিয়া উভয় জগতকে কল্যাণময় করার কাজে ন্যস্ত থাকেন। নেককার নারী কখনও চান না তাঁর স্বামী বেনামাজি কিংবা দুর্নীতিপরায়ণ হোক। একইসঙ্গে তিনি খরচের ব্যাপারেও থাকেন খুবই সচেতন। স্বামীর আনুগত্যের গুণে গুণান্বিত এবং নিজের চরিত্রের উত্তম হেফাজতকারী হয়ে থাকেন নেককার নারী। আর এসব গুণের করণেই দাম্পত্য জীবন সুখের আবাসে পরিণত হয়। অন্যদিকে, স্ত্রী যদি এর বিপরীত হয়, জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ, যন্ত্রণাময়। 


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: সুসন্তান লাভের ৩ দোয়া

এজন্য পাত্রী নির্বাচনে দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন নবীজি। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘তিন গুণের যেকোনো একটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- ধন-সম্পদের কারণে, রূপ-সৌন্দর্যের কারণে ও দ্বীনদারির কারণে। তুমি দ্বীনদার ও চরিত্রবানকেই গ্রহণ করো।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ১৭৪৩৪; মুসনাদে আহমদ: ১১৭৬৫; সহিহ ইবনে হিববান: ৪০৩৪)

স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের পরিপূরক। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা তোমাদের আবরণস্বরূপ আর তোমরা তাদের আবরণ’ (সুরা বাকারা: ১৮৭) ইসলামি নির্দেশনা অনুযায়ী, স্ত্রীকে স্বামীর অনুগত থাকতে হয়। এর কারণ হলো- পুরুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পুরুষ নারীদের অভিভাবক, কারণ আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এ কারণে যে, পুরুষগণ নিজেদের অর্থসম্পদ ব্যয় করে। সুতরাং সাধ্বী স্ত্রীগণ অনুগত হয়ে থাকে। পুরুষের অনুপস্থিতিতে আল্লাহর হেফাজতে (তার অধিকারসমূহ) হেফাজত করে।’ (সুরা নিসা: ৩৪)

উত্তম স্ত্রীর পরিচয় সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, ‘স্বামী যাকে দেখলে আনন্দবোধ করে, যাকে আদেশ করলে আনুগত্য করে, স্ত্রীর বিষয়ে এবং সম্পদের ব্যাপারে স্বামী যা অপছন্দ করে তা থেকে বিরত থাকে। (মুসনাদে আহমদ: ৭৪২১; সুনানে নাসায়ি, কুবরা: ৮৯৬১)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: অসুস্থ স্ত্রীর সেবা করলে যে সওয়াব

কোরআন-হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, নেককার নারীদের বিশেষত্ব হলো- তারা দ্বীনদার, বিশ্বস্ত ও অনুগত, সম্পদের হেফাজতকারী, নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী, সরলমনা ও ঘরে অবস্থানকারী। তাছাড়া নামাজ, রোজার মতো ফরজ আমলগুলোর ব্যাপারে তারা অবহেলা করে না। নবীজি জানিয়েছেন, তারা যেকোনো দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের অধিকার রাখে। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, রমজান মাসের রোজা রাখবে, নিজ লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে এবং স্বামীর আনুগত্য করবে তখন তাকে বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৬৬১; সহিহ ইবনে হিববান: ৪১৬৩)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সকল নারীকে নেককার ও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে কবুল করুন। পুণ্যবতী স্ত্রীর মর্যাদা দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর