গুনাহগারের দোয়া ওসিলা ছাড়া কবুল হয় না—এ ধারণাটি ভুল। পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াত ও বহু হাদিস থেকে প্রমাণিত যে, আল্লাহ তাআলা কোনোপ্রকার ওসিলা ছাড়াই গুনাহগার বান্দার ডাকে সাড়া দেন। তাদের দোয়া কবুল করেন; তাওবা কবুল করেন; গুনাহও ক্ষমা করে দেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন- وَ اِذَا سَاَلَكَ عِبَادِیۡ عَنِّیۡ فَاِنِّیۡ قَرِیۡبٌ ؕ اُجِیۡبُ دَعۡوَۃَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ ‘হে নবী! আমার বান্দারা আমার সম্পর্কে আপনার কাছে জিজ্ঞাসা করে তখন আপনি তাদেরকে বলুন, আমি তো তাদের নিকটেই আছি। যখনই কোনো আহবানকারী আমাকে ডাকে তখনই আমি তার ডাকে সাড়া দিয়ে থাকি।’ (সুরা বাকারা: ১৮৬)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: বারবার গুনাহ করেও বান্দা যে কারণে ক্ষমা পায়
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন- قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ‘হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ, তোমরা আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দিবেন।’ (সুরা জুমার: ৫৩)
আরও পড়ুন: যেসব কাজে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ হয়
আবু জর গিফারি (রা.) বর্ণিত হাদিসে কুদসিতে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আমার বান্দাগণ! তোমরা দিনরাত গুনাহ করো আর আমি সকল গুনাহ মাফ করি। তাই তোমরা আমার কাছে ক্ষমা চাও আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করব।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৭৭)
বিজ্ঞাপন
অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) আমাকে সম্বোধন করে বলেছেন, ‘হে যুবক! তুমি যদি কোনো কিছু চাও, তবে আল্লাহর নিকট চাইবে। আর যদি সাহায্য প্রার্থনা করো তবে আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে ...।’ (জামে তিরমিজি: ২৫১৬)
আরও পড়ুন: যে আমলে ছোট-বড় সব গুনাহ মাফ
উপরোল্লেখিত আয়াত ও হাদিস থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তাআলা গুনাহগারদের তাওবা, ইস্তেগফার ও দোয়া কোনোরকম ওসিলা ছাড়াই কবুল করেন। অবশ্য কেউ যদি দোয়া কবুল হওয়ার জন্য ওসিলাকে জরুরি মনে না করে, তাহলে ওসিলার কোনো কোনো প্রকার কিছু শর্তের সাথে বৈধ।
(বিস্তারিত জানতে দেখুন-‘তাসাওউফ তত্ত্ব ও বিশ্লেষণ’, পৃ.: ১১৪-১১৫; আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ: ১৪/১৫১; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম: ৫/৬২৩-৬২৫)

