শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ক্ষমা স্বয়ং আল্লাহর গুণ

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

ক্ষমা স্বয়ং আল্লাহর গুণ

ক্ষমা একটি উঁচু মানের গুণ। আল্লাহ তাআলার একটি নাম গাফুর বা ক্ষমাশীল। বান্দাদের মধ্যে যারা এই গুণে গুণান্বিত আল্লাহ তাদের অনেক ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয়নবীকে এই গুণে গুণান্বিত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘(হে নবী!) আপনি ক্ষমাশীলতার নীতি অবলম্বন করুন। সৎ কাজের আদেশ দিন এবং মূর্খদের এড়িয়ে চলুন।’ (সুরা আরাফ: ১১৯)

এ আয়াতের মর্ম সম্পর্কে জিবরাঈল (আ.) নবীজিকে বলেন, ‘হে মুহাম্মদ (স.) আল্লাহ তাআলা আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আপনার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে, আপনি তার সাথে সম্পর্ক অবিচ্ছিন্ন রাখুন। যে আপনাকে বঞ্চিত করে, আপনি তাকে দান করুন এবং যে আপনার প্রতি অবিচার-অত্যাচার করে, আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন।’ (তাফসিরে তাবারি, খণ্ড: ১০, পৃষ্ঠা-৭১৫)


বিজ্ঞাপন


আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা সৎকাজ প্রকাশ্যে বা গোপনে করো অথবা যদি তোমরা অপরাধ ক্ষমা করে দাও, তাহলে জেনে রাখো যে, আল্লাহ নিজেও ক্ষমাকারী, সর্বশক্তিমান।’ (সুরা নিসা: ১৪৯)

আরও পড়ুন: যেসব আমলে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ে

আল্লাহর বান্দা হিসেবে আমাদের উচিত ক্ষমা, দয়া ও উদারতার গুণে নিজেদের সজ্জিত করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সেই প্রেরণাই দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যদি ওদের মার্জনা করো, ওদের দোষত্রুটি উপেক্ষা করো এবং ক্ষমা করো, তাহলে জেনে রাখো আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা তাগাবুন: ১৪)

ক্ষমাকারীর পুরষ্কার ঘোষণা করে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা তোমাদের রবের ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে ধাবিত হও যার প্রশস্ততা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর ন্যায়। যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে মুত্তাকীদের জন্য। যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল উভয় অবস্থায় ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ সম্বরণকারী আর মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল। আল্লাহ নেককার লোকদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৩৩-১৩৪)


বিজ্ঞাপন


আল্লাহ তাআলা আরও বলেন—‘আর মন্দের প্রতিফল মন্দ। এরপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা শুরা: ৪০)

আরও পড়ুন: আল্লাহর সবচেয়ে পছন্দের দুই বাক্য

ইসলামি বিশ্বাসমতে, যাদের মধ্যে ক্ষমার গুণ নেই, তারা আসলে দুর্বল শ্রেণির মানুষ। প্রকৃত সাহসীরা ক্ষমা করতে জানে। আল্লাহ তাআলা এ প্রসঙ্গে ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ধৈর্য ধরবে ও ক্ষমা করবে, সন্দেহাতীতভাবে তা বড় উচ্চমানের সাহসিকতাপূর্ণ কাজের অন্যতম।’ (সুরা আশ শুরা: ৪৩)

তাছাড়া ক্ষমা করতে পারাটা আল্লাহভীতির লক্ষণ। তাকওয়ার মতো অনন্য গুণ অর্জন করতে তাই ক্ষমার শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর ক্ষমা করে দেওয়াই তাকওয়ার নিকটতম।’ (সুরা বাকারা: ২৩৭)

মানুষের মধ্যে প্রিয়নবীজি ছিলেন সবচেয়ে ক্ষমাশীল। ব্যক্তিগত কোনোকিছুর প্রতিশোধ তিনি জীবনেও নেননি। তিনি বলতেন, ‘সদকা করাতে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। আর যে কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে বিনীত হলে তিনি তার সম্মান প্রতিষ্ঠিত করে দেন।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৮৮)

আরও পড়ুন: আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে ১৬ আমল

আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল বান্দাদের সৎকর্মশীল বলে ঘোষণা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান করে, রাগ নিয়ন্ত্রণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে থাকে; আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন।’ (সুরা আল-ইমরান: ১৩৪)

সুতরাং আল্লাহ তাআলার ক্ষমা ও সন্তুষ্টি লাভে ধন্য হতে চাইলে— অবশ্যই আমাদের ক্ষমার গুণ অর্জন করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর