শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

৬ শ্রেণির বান্দাকে জান্নাত দেওয়া আল্লাহর দায়িত্ব

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫৩ পিএম

শেয়ার করুন:

৬ শ্রেণির বান্দাকে জান্নাত দেওয়া আল্লাহর দায়িত্ব

জান্নাত চিরস্থায়ী ভোগ-বিলাসের স্থান। জান্নাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে রাসুল (স.) বলেন, ‘মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং যার সম্পর্কে কোনো মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পারো, ‘কেউ জানে না, তাদের জন্য তাদের চোখ শীতলকারী কী জিনিস লুকানো আছে।’ (বুখারি: ৩২৪৪)

হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী, কিছু বান্দাকে জান্নাত দেওয়ার জিম্মাদার হয়ে যান স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) সেই ছয় ব্যক্তির কথা ঘোষণা করেছেন। ব্যাখ্যাসহ হাদিসটির বিবরণ নিচে তুলে ধরা হলো—


বিজ্ঞাপন


১. ইসলাম প্রতিষ্ঠায় প্রাণ উৎসর্গকারী
ইসলাম আল্লাহ তাআলার মনোনীত ধর্ম। সব সমস্যার সমাধান রয়েছে ইসলামে। ইসলাম বিজিত ধর্ম হিসেবে থাকুক—এটাই একজন মুমিনের কামনা হওয়া উচিত। সর্বস্তরে ইসলামি অনুশাসন ও বিজয়ী আদর্শ হিসেবে ইসলামকে প্রতিষ্ঠার জন্য যারা প্রচেষ্টায় নিয়োজিত থাকেন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আন্দোলন ও সংগ্রামের সে পথেই মৃত্যুবরণ করেন তাহলে তাদের জন্য আছে কাঙ্ক্ষিত সেই জান্নাতের সুসংবাদ। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য বের হয়, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহ তাআলার দায়িত্ব।’

আরও পড়ুন: জান্নাতের সুখ শান্তি

২. দাফন-কাফন ও জানাজায় অংশগ্রহণকারী
মৃত ব্যক্তির দাফনের আগ পর্যন্ত তার দৈহিক মর্যাদা নিশ্চিত করা জীবিতদের কর্তব্য। মৃতকে গোসল করানো ও জানাজার নামাজ পড়ার স্বতন্ত্র ফজিলত রয়েছে। রাসুল (স.) ওই হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জানাজার সঙ্গে যায়, (জানাজা ও দাফন কাজে শরিক হয়) সে এমন অবস্থায় মারা যায় তাহলে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহ তাআলার দায়িত্ব।’

৩. রোগীর সেবাকারী
ইসলাম রোগীর সেবা অনেক বড় ইবাদত। ওই হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) আরো ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোগীর সেবায় নিয়োজিত, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহ তাআলার দায়িত্ব।’


বিজ্ঞাপন


৪. উত্তমরূপে অজু করার পর মসজিদে গমনকারী
পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো অজু। একজন মুমিন যখন উত্তমরূপে অজু করে মহান হুকুম নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদের দিকে গমন করে তখন আল্লাহ তাআলা ওই বান্দার প্রতি অনেক খুশি হন। ওই হাদিসে রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে নামাজের উদ্দেশ্যে গমন করে, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহ তাআলার দায়িত্ব।’

আরও পড়ুন: যেভাবে অজু করলে নবজাতকের মতো নিষ্পাপ

৫. আলেম ও নীতিবান শাসককে সম্মান করা ব্যক্তি
ওলামায়ে কেরাম ও নীতিবান শাসকরা দেশ ও ধর্মের অনেক বড় সম্পদ। ইসলামে নীতিবান শাসক ও আলেমদের সম্মান করতে আদেশ করা হয়েছে। তাদের অসম্মান ও হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা তাদের বিরুদ্ধাচরণ করা গুরুতর পাপ ও অন্যায়। তাদের সম্মান করার বিশেষ ফজিলতও ওই হাদিসে ঘোষিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি নীতিবান শাসক ও আলেমকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং সম্মান দেখাতে আসে, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহর দায়িত্ব।’

৬. গিবত-রাগারাগি না করা ব্যক্তি
রাগ, ক্ষোভ, পরনিন্দা ও প্রতিশোধস্পৃহা মন্দ মানুষের স্বভাব। এ ধরনের পাপ থেকে সীমিত চলাফেরা আর পরিমিত কথাবার্তা অনেকটাই বিরত রাখে। তাই প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না থেকে ঘরে অবস্থান করাই উত্তম। এ ধরনের মন্দ আচরণ থেকে যারা বিরত থাকবে তাদের ব্যাপারেও ওই হাদিসে জান্নাতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তার ঘরে অবস্থান করে, কোনো মুসলিমের গিবত করে না, তার সঙ্গে রাগ করে না অথবা তার কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করে না, সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহর তাআলার দায়িত্ব।’ (সিলসিলা সহিহাহ: ৩৩৮৪)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জান্নাতে যাওয়ার সব পথ ও পন্থা অবলম্বন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর